বিশ্ব অর্থনীতির মঞ্চে ভারতের জয়জয়কার। জাপানের মতো আর্থিক শক্তিধর দেশকে পিছনে ফেলে এবার বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির আসনে বসল ভারত। এই বড় সাফল্যের ছাপ দেখা গেল সরাসরি ভারতীয় শেয়ার বাজারে। সপ্তাহের শুরুতেই সেনসেক্স ও নিফটি ছুঁয়ে ফেলল নতুন রেকর্ড। এই অর্থনৈতিক সাফল্য মোদী সরকারের কূটনৈতিক ও আর্থিক নীতির এক বড়ো স্বীকৃতি, বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জাপানকে টপকে ৪ নম্বরে ভারত
৪ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি— হ্যাঁ, এখন ভারত সেখানেই পৌঁছে গিয়েছে। জাপানকে টপকে উঠে এসেছে বিশ্বের ৪ নম্বর অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে। প্রথম তিনে রয়েছে যথাক্রমে আমেরিকা, চিন ও জার্মানি। এই পরিসংখ্যান সামনে এনেছে ভারতের নীতি আয়োগ। শনিবার নীতি আয়োগের CEO বিভিআর সুব্রহ্মণ্যম জানিয়ে দেন, 'যখন আমি কথা বলছি, তখনই আমরা বিশ্বের ৪ নম্বর বৃহত্তম অর্থনীতি। এটা আমাদের সবার গর্বের বিষয়।'
শেয়ার বাজারে ছুট, নিফটি ছাড়াল ২৫ হাজার
এই খবর সামনে আসতেই সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবার সকালেই দেশের দুই প্রধান শেয়ার বাজারে দেখা গেল ব্যাপক উল্লাস। বিএসই সেনসেক্স খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ৬২৫ পয়েন্ট বেড়ে পৌঁছে গেল ৮২,৩৫৭.২৭-এ। অন্যদিকে, এনএসই নিফটি রেকর্ড ছুঁয়ে গেল ২৫,০০০ পয়েন্টের ওপরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা নিছক বাজারের ওঠানামা নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক ভিত কতটা মজবুত, তার প্রমাণ। গত কয়েক মাসে ভারতীয় অর্থনীতি যে গতি পেয়েছে, তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাজারে।
কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই অর্জন?
জাপানের মতো উন্নত দেশকে টপকে আসা মোটেই সহজ কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে ভারত ছিল পাঁচ নম্বরে। এবার সেই জায়গা ছেড়ে আরও একধাপ ওপরে উঠে এল। বিশ্বের ব্যবসায়িক এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে ভারতের এই উত্তরণ এক বড়ো বার্তা দিচ্ছে— ভারত এখন বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও লাভজনক গন্তব্য।
মোদী সরকারের নীতির ফসল?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে মোদী সরকারের একাধিক পদক্ষেপ। যেমন—
পরিকাঠামো খাতে বিপুল বিনিয়োগ
ডিজিটাল ইকোনমিতে জোর
মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্প
কর সংস্কার ও বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহ
এই সবকিছুর মেলবন্ধনেই ভারত আজ এই উচ্চতায় পৌঁছেছে। শুধু বড়ো বড়ো শহর নয়, গ্রামগঞ্জেও এখন অর্থনৈতিক গতির ছোঁয়া পৌঁছে যাচ্ছে— যা আগের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বাংলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ
এই খবরে গর্বিত শুধু দিল্লি বা মুম্বই নয়, বাংলাও। কারণ বহু বাঙালি এখন স্টক মার্কেটে সক্রিয়। বিশেষ করে কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলিতে শেয়ার বাজার নিয়ে আগ্রহ গত কয়েক বছরে বহুগুণে বেড়েছে। অনেকেই SIP বা সরাসরি শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে চাইছেন। বাজারের এই উল্লাসে তাদের মুখেও হাসি ফুটেছে। ভারতের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ— জার্মানিকে টপকে তৃতীয় হওয়া। যদিও এই লক্ষ্য পৌঁছতে সময় লাগবে, তবুও বর্তমান গতি দেখে বলা যায়, আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে তাও সম্ভব।