১০ মাসে সর্বনিম্ন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার। তা নেমে এসেছে ৬৩৪ বিলিয়ন ডলারে। সর্বকালের সর্বোচ্চ স্তর থেকে কমেছে ৭০ বিলিয়ন ডলার। হঠাৎ করে কেন কমল বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার? বিশিষ্ট বাজার বিশ্লেষক এবং এসবিআই মিউচুয়াল ফান্ডের প্রাক্তন ইক্যুইটি প্রধান সন্দীপ সাভারওয়ালের ব্যাখ্যা, আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের কারণেই বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারের এই বেহাল দশা। এর সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দাও প্রভাব ফেলেছে।
এক্স হ্যান্ডেলে সাভারওয়াল লিখেছেন,'ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ১০ মাসের সর্বনিম্ন ৬৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। তা সর্বকালীন রেকর্ডের চেয়ে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার কম। ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রাকে স্থিতিশীল রাখতে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর। স্পট এবং ফরোয়ার্ড মার্কিন ডলার বিক্রির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার নষ্ট করেছিলেন'।
তিনি আরও লিখেছেন,'অর্থনৈতিক উন্নতিকে অতিরঞ্জিত করেও দেখিয়েছিলেন শক্তিকান্ত দাস। নগদ অর্থ নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। বাড়িয়ে রেখেছিলেন সুদের হার। সে কারণে অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়েছিল। অনেকেই তাঁর প্রশংসা করেছেন। কিন্তু ওঁর সিদ্ধান্তগুলি একেবারেই ঠিক ছিল না। তার ফল এখন দেশকে ভুগতে হচ্ছে'।
বাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন,'শক্তিকান্ত দাসের জমানায় ভারতীয় মুদ্রাকে স্থিতিশীল রাখতেআরবিআই স্পট এবং ফিউচার বাজারে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করেছিল। এই কৌশল স্বল্পমেয়াদে মুদ্রাকে স্থিতিশীলতা দিয়েছে। সেজন্য প্রশংসিতও হয় আরবিআই। কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব অর্থনীতিক জন্য মঙ্গলজনক নয় বলেও মত অর্থনীতিবিদদের একাংশের। তারা মনে করছে, ভারতীয় টাকার দাম স্থিতিশীল হলেও নগদ কমেছিল বাজারে। সেই সঙ্গে ধাক্কায় খায় বৈদেশিক মুদ্রার তহবলিও।
বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল কত?
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল টানা পঞ্চম সপ্তাহের জন্য কমেছে ৬৩৪.৫৯ বিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সর্বকালীন রেকর্ড ৭০৪.৮৯ বিলিয়ন ডলার থেকে কমেছে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার।
টাকার অবমূল্যায়নে আশঙ্কা
ক্রমাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে ভারতীয় মুদ্রা। শুক্রবার ডলারের নিরিখে টাকা ৮৫.৯৬৫০-তে বন্ধ হয়েছে। একটা সময় ৮৫.৯৭-এর রেকর্ড সর্বনিম্নে পৌঁছে গিয়েছিল। টাকার আরও অবমূল্যায়নের আশঙ্কা করছেন নোমুরার বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতিও ধীর হতে পারে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিস ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬.৪% হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। যা ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।