করোনা মহামারির কারণে শেষ মুহুর্তে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। বিভিন্ন সংগঠনের থেকে আয়কর রিটার্ন ফাইল করার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন পাওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। এদিন আয়কর দফতর থেকে ট্যুইট করে জানান হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থিক বছরে আয়ের রিটার্ন ১০ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে।
এর আগে কেন্দ্রের তরফে ২০১৯-২০ অর্থিক বছরে আয়ের রিটার্ন জমা করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এই সময়সীমা বাড়লো সেই সব করদাতাদের যাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টস অডিট করার দরকার হয় না এবং যারা তাদের আয়কর রিটার্ন আইটিআর-১ এবংআইটিআর-৪ ফর্মে ফাইল করতে পারে। এই নিয়ে সরকার তিনবার আয়কর রিটার্ন ফাইল করার সময়সীমা বাড়িয়ে দিল।
প্রথমে এই সময় সীমা রাখা হয়েছিল চলতি বছরের ৩১ জুলাই, সেটা পরে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৩০ নভেম্বর। তারপর সেটা সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয় ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এবার বাড়িয়ে এই সময় সীমা করা হয়েছে ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি। এছাড়া যেসব করদাতাদের অ্যাকাউন্টস অডিট করার প্রয়োজন তাদের ক্ষেত্রেও সময়সীমা বাড়িয়েছএ সরকার। এই সময়সীমা বাড়িয়ে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে। ট্যাক্স অডিট রিপোর্ট জমা করার সময়সীমা এবছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারি করা হয়েছে।
এদিক ইনকাম ট্যাক্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ৪.৫৪ কোটি রিটার্ন জমা পড়েছে ২৯ ডিসেম্বর অবধি। এই পর্যন্ত ১.৫৬ লাখ কোটি টাকা রিফান্ড দিয়েছে আইটি দফতর। উপকৃত হয়েছেন ১.৩৩ কোটি করদাতা। পয়লা এপ্রিল থেকে ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই টাকা রিটার্ন পেয়েছেন তাঁরা। এর মধ্যে এক লাখ কোটি টাকা কর্পোরেট ট্যাক্স রিফান্ড।
গত রবিবার মাত্র ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১৪ লক্ষ করদাতা ২০১৯-২০ আর্থিক বছরের জন্য রিটার্ন জমা দিয়েছেন। ফলে সোমবার পর্যন্ত মোট ৪ কোটি ৩৭ লক্ষ আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে। রবিবার পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা।
আয়কর রির্টান দাখিলের নতুন তারিখ ঘোষণার আগে আয়কর দফতরের তরফে ট্যুইট করে বলা হয়, '২০২০-২১ মূল্যায়ন বর্ষে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪.৩৭ কোটি আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে। আশা করছি আপনিও আপনার আইটিআর জমা দিয়েছেন। যদিও এখনও আয়কর রিটার্ন জমা না দিয়ে থাকেন আর অপেক্ষা করবেন না। আজই আপনার ২০২০-২১ মূল্যায়ন বর্ষের আইটিআর ফাইল করুন।'
এদিকে, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আইটি রিটার্ন জমা না দিলে বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানার মুখে পড়তে হবে করদাতাদের। গত বছরের তুলনায় এই বছর জরিমানার অঙ্ক দ্বিগুণ ছিল। যেহেতু এই অতি মহামারী সময় করদাতাদের পক্ষে রিটার্ন ফাইল এর ব্যাপারে তথ্য জোগাড় করা অসুবিধে হচ্ছিল। করোনা পরিস্থিতির জন্য আয়কর রিটার্ন ফাইল করার কাজে ব্যাঘাত হচ্ছিল। সেই কারণে করদাতাদের পক্ষ থেকে আবেদন রাখা হয়েছিল সময়সীমা বাড়ানোর। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং কর পরামর্শদাতাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও রিটার্ন ফাইল করার জন্য পর্যাপ্ত সময় চাওয়া হয়েছিল। সব দিক বিবেচনা করে শেষ মুহূর্তে তাই আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ফের পিছিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।