পুরনো আয়কর কাঠামো বনাম নতুন আয়কর কাঠামো- এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয়টাই এগিয়ে। বেশিরভাগ করদাতারই পুরনো কর কাঠামোর প্রতি আগ্রহ কমে গিয়েছে। কারণ, নতুন কর কাঠামোর অধীনে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ের উপর কোনও কর দিতে হয় না। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠছে, পুরনো আয়কর কাঠামো পাকাপাকিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হোক। কিন্তু আয়কর বিশেষজ্ঞরা উল্টো পথের শরিক।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ দীপেশ জৈনের কথায়,'পুরনো আয়কর কাঠামো বাতিল করে দেওয়া উচিত নয়। কারণ এখনও বহু করদাতা এই কাঠামোর সুবিধা পাচ্ছেন। তাঁরা বড় ছাড় পান। নতুন কর কাঠামোয় সেই সব ছাড় উপলব্ধ নয়'। কী রকম? একটা উদাহরণ থেকেও বোঝা যেতে পারে। ধরুন, ২৮ বছর বয়সী এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পুণেতে থাকেন। কাজ করেন বেঙ্গালুরুতে। মাসে ভাড়া দেন ২৫,০০০ টাকা ভাড়া। পিএফে নিয়মিত সঞ্চয় করেন। পুরনো কর কাঠামোয় তিনি বাড়ি ভাড়ার উপর HRA এবং PF-এ বিনিয়োগের উপর কর ছাড় পান। নতুন কর কাঠামোয় এই সুবিধা নেই।
জৈনের মতে, এটা মোটেও ঠিক নয় যে নতুন কর ব্যবস্থা চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরানো কর কাঠামো বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন কর কাঠামোয় আয়করের হার এবং আয়ের স্তর পরিবর্তন সত্ত্বেও পুরনো কর ব্যবস্থা এখনও করদাতাদের মধ্যে জনপ্রিয়, যাঁরা বাড়ি ভাড়া ভাতা (HRA), গৃহ ঋণের সুদ এবং অন্যান্য কিছু ছাড় পান। যা নতুন কর কাঠামোয় পাওয়া যায় না। উদাহরণ হিসেবে, ৩৫ বছর বয়সী এক শিক্ষিকা ঋণ নিয়ে নিজের প্রথম বাড়ি কিনেছেন। পুরনো কর কাঠামোয় গৃহ ঋণের উপর সুদ এবং সন্তানদের শিক্ষা ঋণ উপর ছাড় দাবি করতে পারেন। নতুন কর কাঠামোয় এই সুবিধা দেওয়া হয়নি।
কোন কোন করদাতারা পুরনো ব্যবস্থায় থাকলে লাভ পাবেন?
বিনিয়োগ এবং ঋণের উপর ছাড় পেতে চাইলে পুরনো কর কাঠামো একদম উপযুক্ত। পুরনো কর ব্যবস্থার অধীনে বিভিন্ন বিনিয়োগ, গৃহ ঋণ এবং অন্যান্য ছাড়ের মাধ্যমে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। এই করদাতাদের জন্য নতুন ব্যবস্থার চেয়ে পুরনো কর ব্যবস্থাই বেশি উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। বাড়ি ভাড়া ভাতা (HRA), ধারা 80C কর্তন। (পিএফ, ইএলএসএস, পিপিএফ), গৃহঋণের সুদ, চিকিৎসা বিমা, শিক্ষা ঋণের সুদের উপর মেলে ছাড়।