প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটার বন্ধু শান্তনু নাইডুকে বড় দায়িত্ব দিল টাটা গোষ্ঠী। টাটা মোটরসের জেনারেল ম্যানেজার এবং স্ট্র্যাটেজিক ইনিশিয়েটিভসের প্রধান হয়েছেন শান্তনু। রতন টাটার ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনি। নিজের উইলে শান্তনুকেও রেখে গিয়েছেন টাটা। এবার আরও একবার বড় দায়িত্ব পেলেন শান্তনু।
টাটার উইলে কী লেখা ছিল?
২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর ৮৬ বছর বয়সে মারা যান রতন টাটা। তাঁর শেষ যাত্রায় শান্তনু নাইডুকে সামনের সারিতে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল। মৃত্যুর পর রতন টাটার উইল প্রকাশিত হয়। সেই উইলে রয়েছে ঘনিষ্ঠ বন্ধু শান্তনু নাইডুর নামও। বন্ধুত্বের প্রতিদান হিসেবে রতন টাটা নিজের উইলে শান্তনুর শিক্ষার জন্য দেওয়া ব্যক্তিগত ঋণ মকুব করেছেন। তাঁর স্টার্টআপ 'গুডফেলোস'-এর অংশীদারিত্বও ছেড়ে দিয়েছেন।
টাটা মোটরসের বড় দায়িত্ব
শান্তনু নাইডু নিজেই লিংকডিন পোস্টে বড় দায়িত্ব পাওয়ার কথা শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন,'আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে টাটা মোটরসে জেনারেল ম্যানেজার,স্ট্র্যাটেজিক ইনিশিয়েটিভস হেড হিসেবে কাজ শুরু করছি। আমার মনে আছে যখন আমার বাবা টাটা মোটরসের কারখানা থেকে সাদা শার্ট এবং নীল প্যান্ট পরে বাড়ি ফিরতেন, তাঁর জন্য জানলার ধারে অপেক্ষা করতাম'।
শান্তনু নাইডু কে?
রতন টাটার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন শান্তনু নাইডু। ১৯৯৩ সালে পুণেতে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে শান্তনু সাবিত্রীবাই ফুলে পুণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর শান্তনু ২০১৬ সালে কর্নেল জনসন গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করার পর তিনি টাটা এলেক্সিতে অটোমোবাইল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তাঁর লিঙ্কডইন প্রোফাইল বলছে, ২০১৭ সালের জুন থেকে টাটা ট্রাস্টে কাজ করছেন শান্তনু।
কীভাবে শান্তনু নাইডু রতন টাটার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন?
দু'জনের বন্ধুত্বের কারণ ছিল পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা। তাঁদের দুজনেরই দেখা হয়েছিল ২০১৪ সালে। রতন টাটা কুকুর প্রেমী হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। সেই সময় নাইডু কুকুরদের জন্য কলার তৈরি করতেন। দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে পথ কুকুরদের গলায় পরাতেন। রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় চালক অন্ধকারেও এই কলারটি দেখতে পেতেন। তিনি গাড়ি থামাতে পারতেন। শান্তনুর এই উদ্যোগ প্রাভাবিত করেছিল টাটাকে। রতন টাটা শান্তনুর সঙ্গে দেখা করেন। অসমবয়সী দু'জন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন। নাইডু যখন প্রথমবার রতন টাটার সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর।
শান্তনুর একাধিক স্টার্টআপ
টাটা গোষ্ঠীতে কাজ করার পাশাপাশি একাধিক স্টার্টআপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শান্তনু নাইডু। তিনি গুডফেলোস স্টার্টআপের মালিক। এই কোম্পানি বয়স্কদের সাহায্য করে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই কোম্পানির মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। শান্তনু পশুপাখীদের ভালোবাসেন। সমাজসেবার প্রতিও তাঁর আগ্রহ। 'মোটোপজ' নামে একটি সংগঠনও তৈরি করেছেন। যে সংস্থায় রাস্তায় ঘুরে পথ কুকুরদের দেখভাল করে। নাইডুর নেতৃত্বে 'মোটোপজ' ৭টি শহরে কাজ করছে। ৮ মাসে ২৫০ জন কর্মী নিয়োগ করেছেন শান্তনু।