Tax Exemptions In Mutual Funds: মিউচুয়াল ফান্ডে যাঁরা টাকা ঢালেন, তাঁরা নতুন অর্থবর্ষ থেকে (১ এপ্রিল থেকে) এখনকার মতো সুবিধা আর পাবেন না। গত শুক্রবার লোকসভায় যে বিল মোদী সরকার পাশ করিয়েছে, তাতে ১ এপ্রিল থেকেই মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে নিয়মে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। তাতে যে সব ঋণ তহবিলের (Debt Fund) ৩৫ শতাংশ বা তার বেশি অংশ ইকুইটি শেয়ারে বিনিয়োগ করা হয়েছে, সেগুলিতে আয়করের অঙ্ক পরিবর্তিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগের মতো করদাতাকে নিজের স্ল্যাবে আয়কর দিতে হবে। ১ এপ্রিল থেকে পাওয়া যাবে না মুদ্রাস্ফীতির জন্য মেলা সূচকের (ইনডেক্সেশন) সুবিধাও। এখনও পর্যন্ত এই সুবিধার মাধ্যমেই করের হার কমানো যায়।
১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে ডেট ফান্ডে ট্যাক্সেশন কী হবে? কেন্দ্র সরকারের সদ্য পাশ হওয়া ফাইন্যান্স বিল ২০২৩-এ সকলের মনেই একটা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে বিনিয়োগকারীদের মনে। এই প্রসঙ্গে বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ সৈকত মিত্র বলেন, “ডেট ফান্ড (Debt Fund) সাধারণত কম ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন বিনিয়োগারীদের কাছে একটি ভাল উপায় বলে বিবেচিত হয়ে এসেছে। ইকুইটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মতো এর চড়াই উৎরাই প্রায় নেই বললেই চলে। এতে যেমন SIPও করা যায় তেমন আবার লাম্পসাম্প(Lump sum Investment) বিনিয়োগও করা যায়। তাই সাধারণত বিনিয়োগকারীরা একে ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতের সঙ্গেই তুলনা করে থাকে। তার পাশাপাশি বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে সেই টাকা ডেট ফান্ড থেকে STP (Systematic Transfer Plan) ইকুটিই ফান্ডে ও বেশ জনপ্রিয়। ইকুইটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্যাক্সেশন কোনও পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু এই অ্যামেন্মেমেন্টের ফলে আয়কর আইনের দিক থেকে আমরা মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে তিনটে শ্রেণীতে ভাগ করতে পারি।
আরও পড়ুন: হাই রিটার্ন পেতে SIP করার সেরা সময় এটাই, কেন?
প্রথমত, যে সমস্ত ফান্ড ৬৫ শতাংশ বা তার বেশি ভারতীয় কোম্পানির শেয়ারে বিনয়োগ করে, যা ইকুইটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে নিয়মের কোনও পরিবর্তন হয়নি (STCG) - বিনিয়োগের এক বছরেরও মধ্যে টাকা ভাঙ্গলে ল্যভ্যংশের উপর ১৫ শতাংশ সর্ট টার্ম ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স (STCG) দিতে হতো যা একই আছে। এবং যা এক বছরেরও উর্ধ্বে হলে আমরা লংটার্ম ক্যাপিটাল গেইনের সুবিধা পাই (LTCG) অর্থাৎ এক লাখ টাকা মুনাফা পর্যন্ত কর মুক্ত হিসাবে গণ্য হয় কোনও এক অর্থনৈতিক বছরে এবং এক লাখের উর্ধ্বে মুনাফার অংশের উপর ১০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয় যার কোনও পরিবর্তন হয়নি।
দ্বিতীয়ত, যে সমস্ত ফান্ডে ৩৬% থেকে ৬৪% বিনিয়োগ ভারতীয় কোম্পানির শেয়ারে করা হবে সে ক্ষেত্রে তিন বছরের কম সময়ে বিনিয়োগ রাশি ভাঙিয়ে নিলে বিনিয়োগকারীর নিজস্ব ট্যাক্স স্লাবের বিচারে এবং যদি তিন বছরেরও উর্ধ্বে বিনিয়োগ থাকে সেক্ষেত্রে ২০% ইনডেক্সেসেশনের সুবিধা সহ আয় কর হিসেব হবে।
তৃতীয়ত, যে সমস্ত ফান্ড শূন্য থেকে ৩৫% পর্যন্ত ভারতীয় কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়গ করবে সেই সমস্ত ফান্ড ৩ বছরের কম অথবা বেশি, যাই বিনিয়োগ কাল হোকনা কেন, কোনও ক্ষেত্রেই ইনডেক্স সেশনের সুবিধা পাওয়া যাবে না এবং সর্বদা যে কোনও পরিমাণ মুনাফাই বিনিয়োগকারীর নিজস্ব ট্যাক্স স্লাবের অনুযায়ী আয়করের আওতায় পড়বে ঠিক যেমনটি আমাদের ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।”
কেন্দ্রের নয়া নিয়মে মিউচুয়াল ফান্ডে কীভাবে কমছে কর ছাড়ের সুযোগ? এ বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে অঙ্ক কষে বুঝিয়ে দিলেন শৌভিক বড়াল, চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
বিনিয়োগকারীদের এখন কী করা উচিত?
১. এমত অবস্থায় যারা ডেট ফান্ডে বিনিয়োগ করে আছেন তাদের প্যানিক হওয়ার কিছু নেই এবং কিছু করনীয় ও নেই।
২. যদি সম্ভব হয় এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ দীর্ঘমেয়াদি ডেট ফান্ডে বিনিয়োগের আগ্রহ বা প্রয়োজন থাকে তাহলে ৩১ মার্চ ২০২৩ এর মধ্যে বিনিয়োগ করে তিন বছর অন্তত পক্ষে বিনিয়োগ রেখে দিতে পারেন।
৩. পুরোনো বিনিয়োগ যাদের ডেট ফান্ডে আছে তারা সেই ফান্ডকে না ভেঙে সল্পমেয়াদী বিনিয়োগের প্রয়োজন মেটানোর জন্য ১ এপ্রিল ২০২৩ এর পরে বিনিয়োগকৃত নতুন ডেট ফান্ড থেকে প্রয়োজন মেটাতে পারেন কারণ পুরোনো ডেট ফান্ড আয়করের দিক দিয়ে বেশি লাভজনক গণ্য হবে গ্র্যান্ডফাদারিং নিয়মের সুবিধার জন্য।
৪. ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে ডেট ফান্ডে বিনিয়োগ করলে সেটি নতুন ফলিওতে করাই ভাল হবে। যা আপনাকে ভাঙ্গানোর সময় বুঝতে সাহায্য করবে কোন ফান্ড থেকে ভাঙ্গলে আপনার আয় করে তা কিভাবে প্রভাব ফেলবে।