গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খাবার জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। ফলে নতুন দামে জিনিস কেনাকাটা করতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাতে ব্যয় বাড়ছে। সরাসরি মানুষের পকেটে প্রভাব পড়ছে। ফলে যখন মুদ্রাস্ফীতি গৃহস্থালির বাজেট নষ্ট করছে, তখন সুদের হার কমানোর অনুমান ভুল প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দিয়েছে।
যে সংস্থাগুলি ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা প্রকাশ করেছিল তারাও সিঁদুরে মেঘ দেখছে। সুদের হার কমবে এমন আশা তারা করছে না। মে মাসে খুচরো মূল্যস্ফীতির হার এক বছরের সর্বনিম্ন হারে ৪.৭ শতাংশে নেমে এলেও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭.৯ শতাংশ। এরপর আবার জুন মাসে সবজি, ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম একই থাকায় মূল্যস্ফীতি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছে, খাবারে মূল্যস্ফীতি যদি এই উচ্চস্তরে থাকে তবে সুদের হার কমানো কখনও সহজ হবে না। ১৯ জুন, ২০২৪ সালে প্রকাশিত RBI-এর মাসিক তথ্য অনুসারে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কও খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার নিয়ে চিন্তিত। ১২ জুন পর্যন্ত RBI দ্বারা প্রাপ্ত তথ্য এটা স্পষ্টতই ইঙ্গিত করে যে, শস্যের দামের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। কারণ চাল এবং গমের দাম বাড়ছে। এ ছাড়াও ডাল, ভোজ্যতেল, সবজি, টমেটো, আলু ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। ফলে মুদ্রাস্ফীতি কোন পর্যায়ে গিয়ে থামবে তা নিয়ে বিচলিত অর্থনীতিবিদরাও।
RBI-এর মতে, খাদ্যপণ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বেশ অস্থির। যা সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির হার কমানোর প্রচেষ্টায় বেশ অসুবিধে বাড়িয়ে তুলছে। মূল্যস্ফীতির হার ৪% হলে কমবে EMI। RBI-এর লক্ষ্য খুচরো মূল্যস্ফীতির হার ক্রমাগত চার শতাংশের নিচে রাখা। খুচরো মূল্যস্ফীতিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতির অংশ প্রায় ৪৫ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে, যদি বর্তমান খাদ্য মূল্যস্ফীতি 8 শতাংশ বা তার বেশি থাকে, তবে RBI এর জন্য ৪ শতাংশের লক্ষ্য অর্জন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে, RBI-সহ বিশ্বের সমস্ত কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার বাড়িয়ে চাহিদা হ্রাস করার পরীক্ষিত ফর্মুলা ব্যবহার করে। ভারতে, RBI-এর জন্য রেপো রেট বাড়ায় বা কমায় এবং এই রেপো রেটের পরিবর্তনগুলিও ঋণের সুদের হার বাড়ায় বা হ্রাস করে। এর হ্রাসের কারণে গৃহঋণসহ সব ধরনের ঋণ সস্তা হয়ে যায় যা অর্থনীতির বৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক।