২২ মার্চ রাতের মধ্যে ব্রিটিশ সরকার সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিল ভারতের তিন সন্তান ভগত সিং, রাজগুরু ও সুখদেবকে ফাঁসি দেওয়ার। প্রতি রাতের মতো সেই রাতেও এই তিন তরুণ স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশকে বিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করার। এই খবরটি গোটা দেশে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সেই রাতে শুধুমাত্র এই তিনজনের পরিবার না, সমগ্র দেশবাসীর জন্য স্মরণীয়। কিন্তু কোনও একটি বিশেষ কারণে ২৩ মার্চ তাঁদের নির্ধারিত সময়ের ১১ ঘণ্টা আগে তাঁদের ফাঁসি দেওয়া হয়। জানুন ঠিক কী হয়েছিল সেই দিন।
সেই সময়ের ভারতের ভাইসরয় লর্ড আরউইন মামলাটির জন্য এক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল বা বিচারসভার আয়োজন করেছিলেন, যেখানে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। এই তিন শহীদকে ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ লাহোরের সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়। এই মামলায় সুখদেবও দোষী সাব্যস্ত হন।
জেনে রাখা ভাল, কেন্দ্রীয় পরিষদে বোমা নিক্ষেপের দিন ২৪ মার্চ ঠিক করা হয়েছিল। তার আগেই ভগত সিংয়ের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে এই দিনটিকে ব্রিটিশদের ভীত হওয়ার দিন হিসাবেও মনে রাখা উচিত। কারণে এই তিনজনকে ১১ ঘন্টা আগে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। ফাঁসি মঞ্চে যাওয়ার সময় ভগত সিং, সুখদেব এবং রাজগুরু আনন্দে গান গেয়েছিলেন।
মেরা রং দে
মেরা রং দে বসন্তি চোলা
মেরা রং দে বাসন্তি চোলা ...
এই তিন দেশ নায়কদের ফাঁসি দেওয়ার কথা শুনেই গোটা দেশ গর্জে উঠেছিল। যার ফলে ব্রিটিশ শাসকরা যথেষ্ট ভয় পেয়েছিলেন। যার ফলে সন্তর্পণে তাঁদের ফাঁসি দেওয় হয়।
ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল?
জেলে থাকাকালীন ভগত সিং অনেক বই পড়তেন। ১৯৩১ সালের ২২ মার্চ,তাঁদের তিনজনকে সন্ধ্যা ৭.৩৩ নাগাদ ফাঁসি দেওয়া হয়। হঠাৎ তাঁদের এসে জানানো হয়, ফাঁসির কথা। সেই সময়ে তিনি লেনিনের জীবনী পড়ছিলেন। কারা কর্তৃপক্ষ যখন ভগত সিংকে জানায় যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার সময় এসে গেছে, তখন তিনি বলেছিলেন- "দাঁড়ান ! প্রথমে অন্য একজন বিপ্লবীর সঙ্গে দেখা করুন।" তার এক মিনিট পরে বইটি সিলিংয়ের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেছিলেন - "ঠিক আছে এবার চলুন।"
ভগত সিং কে ছিলেন?
১৯০৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভগত সিং। এটি কোনও সাধারণ দিন ছিল না। এটি ভারতের ইতিহাসে একটি গৌরবময় দিন হিসাবে পরিচিত। অবিভক্ত ভারতের ভূমিতে এমন এক ব্যক্তির জন্ম হয়েছিল, যিনি হয়তো ইতিহাস লেখার জন্যই জন্মেছিলেন।
বিপ্লবী ভগত সিংয়ের লায়লপুরে (বর্তমান পাকিস্তান) একটি সাধারণ পরিবারে জন্ম হয়। ভগত সিং যখন বুঝতে শুরু করলেন তাঁর স্বাধীনতা, বাড়ির সীমানায় সীমাবদ্ধ ছিল, তখন তিনি দুঃখ পেয়েছিলেন। তিনি বারবার বলতেন যে, ব্রিটিশদের কাছ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের শুধু প্রশ্ন না করে লড়াই করতে হবে।