করোনার তৃতীয় তরঙ্গে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার না নিলে পুজোর পরে স্কুল খুলবে বাংলায়। নবান্নে একটি বৈঠকে এ কথা আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু স্কুল খোলার পর কত শতাংশ পড়ুয়া শিক্ষাঙ্গনে ফিরবে, তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতরের।
করোনার জেরে দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও অনলাইন ক্লাসেই বেশির ভাগ পঠন-পাঠন হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে চিন্তা বাড়াচ্ছে রাজ্যে বাড়তে থাকা স্কুল ছুটের সংখ্যা! কারণ, সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহামারীকালে রাজ্যে বেড়েছে স্কুল ছুট পড়ুয়ার সংখ্যা!
সম্প্রতি ২০১৯–’২০ শিক্ষাবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা মিশনের একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও অনলাইনেই বেশির ভাগ পঠন-পাঠন হচ্ছে বটে, তবে এখনও রাজ্যের অনেক স্কুলেই কম্পিউটার নেই।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা মিশনের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের মাধ্যমিক স্তরের ৭৮.৫৮ শতাংশ স্কুলে এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৯০.৫৬ শতাংশ স্কুলে কম্পিউটার রয়েছে। যদিও অনলাইন ক্লাসের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে পড়ুয়াদের মাথাপিছু স্মার্টফোন কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ, অনলাইনে ক্লাস চললেও রাজ্যের মাধ্যমিক স্তরের ২১.৪২ শতাংশ স্কুলে এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৯.৪৪ শতাংশ স্কুলে কম্পিউটার এখনও নেই। অর্থাৎ, রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় অনলাইন শিক্ষার আলো সেই ভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯–’২০ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ছুটের হার ৪.২৮ শতাংশ আর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এই হার ৭.২৭ শতাংশ। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, মহামারীর জন্য স্কুলে পঠন-পাঠন বন্ধ হতেই বিগত এক-দেড় বছরে বেড়েছে স্কুল ছুট পড়ুয়ার সংখ্যা!
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা মিশনের এই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রতি ২১ জন পড়ুয়ার জন্য রয়েছেন একজন শিক্ষক। মাধ্যমিক স্তরে প্রতি ১৯ জন পড়ুয়ায় এক জন শিক্ষক নিয়োজিত। সব মিলিয়ে পুজোর পর স্কুল ফের চালু হলেও পরিস্থিতি আগের মতো হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে!