রাজ্য তথা দেশের অন্যতম অগ্রণীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়ে উঠেছিল গোটা কলকাতা। এই ঘটনায় উঠে এসেছিল র্যাগিংয়ের তত্ত্ব। তারপরেই ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় র্যাগিং রুখতে পদক্ষেপ করে। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির শক্তি বৃদ্ধি করার সুপারিশ করা হয়েছিল। তাতে সমর্থন করেছিল সবপক্ষই। কিন্তু, এক মাস কেটে যাওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত সেই কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ উঠছিল। অবশেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হল নয়া অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই কমিটির কথা জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর নয়া অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠিত হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কমিটিতে রয়েছেন উপাচার্য, সহ উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ডিন অফ স্টুডেন্টসসহ মোট ৩৩ জন সদস্য। তার মধ্যেই রয়েছেন, যাদবপুর এবং বিধাননগর দক্ষিণ থানার ওসি। কমিটির সদস্যদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, তাতে প্রত্যেক সদস্য ই- মেইল আইডি ও ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। র্যাগিং ঠেকাতে নজরদারি করতে বিশ্ববিদ্যালয় ও হস্টেলগুলিতে ওই কমিটি সক্রিয় থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তৈরি নয়া অ্যান্টি রেগিং হেল্পলাইন নম্বর, ইউজিসির হেল্পলাইন নম্বর ও অনলাইনে ইউজিসিতে অভিযোগের দায়েরের ওয়েবসাইটের ঠিকানাও দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।
কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে। তিনি ছাড়া সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি, ডিন অফ স্টুডেন্টস, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি থাকবেন কমিটিতে। এদিন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দিয়ে তা ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিতে রাখা হয়েছে দু’টি থানার অফিসার ইনচার্জ তথা ওসিকে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস যাদবপুর ও বিধাননগরে রয়েছে, তাই এই যাদবপুর এবং বিধাননগর দক্ষিণ থানার ওসি থাকবেন অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিতে।
প্রসঙ্গত গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চর্চায় রয়েছে যাদবপুর এবং র্যাগিং তত্ব। গত ৯ অগাস্ট প্রথমবর্ষের এক পড়ুয়ার মৃত্যু হয় হস্টেলে। ছাত্রের মৃত্যুতে বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ব়্যাগিং এর অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি রাগিং কমিটির কার্যকারিতা ও সক্রিয়তা নিয়েই সেই সময় প্রশ্ন তোলা হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয় পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি ও অ্যান্টি ব়্যাগিংস্কোয়াড গঠন করা হবে। সেই কমিটিই গতিত হল এদিন।