দেশের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেলজয়ী মনীষী হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। একদিকে তিনি প্রথম ভারতীয় সাহিত্যের জন্য নোবেল জিতেছিলেন এবং অন্যদিকে একজন উপন্যাসিক যিনি একটি সম্পূর্ণ ঘরানার গান লিখেছেন এবং সুর করেছেন। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ যিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা প্রচলিত শিক্ষাকে চ্যালেঞ্জ করে গড়ে উঠেছিল মুক্ত প্রকৃতিতে। আবদ্ধ ঘর যে প্রকৃত শিক্ষা দিতে পারে না, তিনি তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। ২৫শে বৈশাখের আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে জানুন ১০টি অজানা তথ্য-
১) রবীন্দ্রনাথ জন্ম দিনকে ঘিরে মতানৈক্য। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তাঁর জন্ম দিন ২৫ বৈশাখ। সেই হিসাবে পশ্চিমবঙ্গে প্রতি বছর গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হয় ৮ অথবা ৯ মে পালন করা হয় জন্মদিন। কিন্তু দেশের বাকি অংশে রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন পালন করা হয় কবে?
২) কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলীর অনুবাদ পড়ে মুদ্ধ হয়েছিলেন। এবং তারপর এজরা পাউন্ড, ডব্লিউবি ইয়েটসের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় করিয়ে দেন?
৩) তিনি কত সালে নোবেল পেয়েছিলেন ?
৪) তিনিই একমাত্র কবি যিনি দুই দেশের জন্য জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন। একটি ভারত, আর অন্যটি?
৫) কত সালে রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরি হয় ?
৬) কতবছর বয়সে তিনি আঁকা শুরু করেন?
৭) কার কাছে প্রথম পড়াশোনা শুরু করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
৮) কে মহাত্মাগান্ধীকে জাতির জনক উপাধি দিয়েছিলেন?
৯) আইনস্টাইনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কতবার দেখা হয়েছিল ?
১০) জীবনে কত চিঠি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
ওপরের প্রশ্নগুলির উত্তর-
১, উত্তর-গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৭ মে।
২, প্রকাশক উইলিয়ম রথেনস্টেইন ছিলেন ঠাকুর পরিবারের বন্ধু। তিনি ১৯১২ সালে লন্ডন ভ্রমণের সময় ‘গীতাঞ্জলি’র অনুবাদ রথেনটেইনকে দিয়েছিলেন। রথেনস্টেইন রবীন্দ্রনাথের কবিতায় মুগ্ধ হন।
৩, ১৯১৩ সালে নোবেল পাওয়ার পর তিনিই হয়েছিলেন প্রথম অ-ইউরোপীয় সাহিত্যিক, যিনি এই পুরস্কার জিতেছিলেন। ‘গীতাঞ্জলি’র পূর্ণাঙ্গ সংস্কার বেরনোর পর তাঁকে পুরস্কৃত করা হয়।
৪, ‘জনগনমন’ ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। অনেকে আবার দাবি করেন শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতও রবীন্দ্রনাথ রচিত একটি বাংলা গানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।
৫, ২০০৪ সালে রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদকটি শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণ থেকে চুরি হয়ে যায়।
৬, তিনি ৬০ বছর বয়সে চিত্রাঙ্কন শুরু করেন। আবার সেই সব কাজের বহু সফল প্রদর্শনীয়ও হয়।
৭, তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বিশেষ পছন্দ করতেন না। তিনি তাঁর দাদা হেমেন্দ্রনাথের কাছ থেকে প্রথম শিক্ষাগ্রহণ করেছেন। তিনি কোনওদিন স্কুল-কলেজে যাননি।
৮, গান্ধীজিকে জাতির জনক উপাধি রবীন্দ্রনাথই দিয়ে ছিলেন।
৯, ১৯৩০ থেকে ১৯৩১ সালের মধ্যে আইনস্টাইনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ চার বার দেখা করেন। একে অপরের আবিষ্কার আর সৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তাঁরা।
১০, তাঁর চিঠিপত্রের সংখ্যা হল ২৫৬৮টি । অন্যদিকে ‘ভানুসিংহের পত্রাবলী’ ও ‘ছিন্নপত্র’ মিলিয়ে মোট চিঠির সংখ্যা ২৭৮০ । হিসেব মতো রবীন্দ্রনাথের ৬০ শতাংশ চিঠি এখনও সংকলিত করাই সম্ভব হয়নি । দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়ে গেছে বহু চিঠি । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিপুল সাহিত্যকর্মের মতোই তার চিঠিপত্রের সংখ্যাও বিপুল । তার সাহিত্যমূল্যের পাশাপাশি ঐতিহাসিক মূল্যও কম নয় । একবার ক্ষিতিমোহন সেন কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘আমার লেখার চেয়ে কম হবে না আমার চিঠি। প্রত্যেকের কাছে আমার স্টাইল ভিন্ন। কিছুতেই একজনকে অন্যের লেখা স্টাইলে লিখতে পারিনে।’