কে যোগ্য, কে অযোগ্য? চাল-কাঁকড় এখনও মিলে মিশেই রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে ডেডলাইন পেরিয়ে গেল স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC-র। কীসের ডেডলাইন? শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন, ২১ এপ্রিল যোগ্য অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তা হল না। যার নির্যাস, চাকরিহারাদের আন্দোলন আরও ঝাঁঝাল হতে চলেছে।
শুধু একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রকাশ
যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করবে বলে আগে থেকেই আশ্বাস দিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। কিন্তু সোমবার সারাদিন অপেক্ষা করেও তালিকা না মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাত প্রায় ১২টা নাগাদ এসএসসি চেয়ারম্যান শুধু একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রকাশ করেন। আর তাতেই আরও চটে যান বিক্ষোভকারীরা।
ঘটনার শুরু সকাল থেকেই। সল্টলেকের ডিরজিও ভবনের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন চাকরি হারানো শিক্ষকরা। কারণ, আগেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, ২১ এপ্রিলের মধ্যে যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই ভরসায় বহু শিক্ষক সকাল থেকে এসএসসি দফতরের সামনে বসে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে আসেন পরিবারের সদস্যরাও।
ভবনের প্রধান গেটের সামনে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা
প্রথমে শোনা যায় বিকেল বা সন্ধের মধ্যে তালিকা আসতে পারে। কিন্তু সন্ধে পেরিয়ে রাত হয়ে যায়—তবু কোনও তালিকা প্রকাশ হয়নি। তখন ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন অনেকেই। ভবনের প্রধান গেটের সামনে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ অনশন শুরু করেন। কেউ আবার হুঁশিয়ারি দেন, এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে তালিকা প্রকাশ না করে বেরোতে দেওয়া হবে না।
এরপর রাত ১২টা নাগাদ আসে এসএসসি-র বিবৃতি। সেখানে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ীই তারা সব কাজ করবে। পাশাপাশি, যাঁরা স্কুলে গিয়ে পড়িয়েছেন, তাঁদের বেতন দেওয়া হবে—এমনটাও জানানো হয় শিক্ষা দফতরের তরফে
এই বিবৃতিতে শিক্ষকরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁদের বক্তব্য, 'এই কথা তো আগেও জানতাম, কিন্তু কে যোগ্য আর কে নয়—তা যদি না জানি, তাহলে ভবিষ্যৎ কী করে বুঝবো?' কেউ বলেন, 'এইভাবে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বারবার। আমাদের নিয়ে ছেলেখেলা করছে সরকার।'
রাত গড়িয়ে গেলেও বিক্ষোভ ওঠেনি
বিক্ষোভ আরও চরমে ওঠে। ডিরজিও ভবনের সামনে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়। কিন্তু রাত গড়িয়ে গেলেও বিক্ষোভ ওঠেনি। বরং আন্দোলন আরও জোরদার করার কথা জানান অনেকে। এই ঘটনা আরও একবার দেখিয়ে দিল, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ফলে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার সমাধান এখনও অনেক দূরে। সরকারের প্রতি আস্থাও দিন দিন কমছে চাকরি হারানো এই শিক্ষকদের।