ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রে সাধু-সন্ন্যাসী। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের (Kartik Maharaj) নিন্দায় সরব তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আরেকদিকে জলপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনে দুষ্কৃতী হামলা। সাধু-সন্ন্যাসীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে দাবি করে বাংলায় এসে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এহেন আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাম্প্রদায়িক বলে কটাক্ষ করলেন সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Mahammad Salim)।
'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা বুঝতে পেরেই এই বদমাইশি করছেন'
বাঁকুড়ায় সেলিমের দাবি, RSS-এর পরামর্শেই বিজেপি ও তৃণমূল হিন্দু মুসলমান বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, 'রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, কোরান, গীতাকে টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেকারি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্নীতির বিষয়টি পিছনে ফেলে দিতে চাইছেন। ইন্ডিয়া জোট জিতছে। তৃণমূল-বিজেপি হাওয়া পাতলা হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা বুঝতে পেরেই এই বদমাইশি করছেন। এর আগে কার্তিক মহারাজকে দিয়ে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় তৃণমূলে থাকা শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে ভোট করিয়েছেন। তৃণমূল-বিজেপি আলাদা কিছু নয়।'
'সব সাধু সমান হয় না'
বস্তুত, বহরমপুরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজকে গত শনিবার নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছে।'
'হিন্দু সমাজের পাশে দাঁড়িয়েছি বলে খারাপ হয়ে গিয়েছি'
কার্তিক মহারাজের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে bangla.aajtak.in। কার্তিক মহারাজ পাল্টা দাবি করেন, 'আমি ওঁকেও (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সমর্থন করেছিলাম। তখন আমি ভাল ছিলাম। এখন হিন্দু সমাজের পাশে দাঁড়িয়েছি বলে খারাপ হয়ে গিয়েছি'। তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের যোগ নিয়েও লুকোছাপা করেননি কার্তিক মহারাজ। তাঁর কথায়,'শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা আমার আশ্রমে এসেছেন। আমার সঙ্গে তৃণমূল নেতাদেরও সম্পর্কও ভাল। তৃণমূলের নেত্রী শাওনি সিংহ রায় আমার কাছে এসেছিলেন। বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকারের (ডেভিড) সঙ্গেও আমার যোগাযোগ রয়েছে'।
আবার সাধু ইস্যুতে বাংলায় এসে সুর চড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও। প্রধানমন্ত্রী বলেন,'কোনওদিন কোনও দেশবাসী ভেবেছিল এমন হতে পারে? কিন্তু ভোটব্যাঙ্ককে তুষ্ট করতে তৃণমূল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। রামকৃষ্ণ মিশনের অপমান, আমাদের সাধু-সন্তদের এই অপমান বাংলা কোনওদিন সহ্য করবে না।' জলপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন প্রধানমন্ত্রী।