লোকসভা ভোটের ঠিক আগে একজোট বিজেপি বিরোধী I.N.D.I.A-র ব্লকের নেতারা। দিল্লির রামলীলা ময়দানে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেন বাম-আপসহ তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। বিরোধীদের অভিযোগ, ED, CBI-এর মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে ব্যবহার করে বিরোধীদের গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের প্রতিবাদও করেন তাঁরা। কিন্তু এই সভায় দেখা গেল এমন এক দৃশ্য যা বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে BJP বিরোধী জোটকে।
এই সমাবেশের সভামঞ্চে রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, অখিলেশ যাদব, ফারুক আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, সুনিতা কেজরিওয়াল, ডেরেক ও'ব্রায়েন এবং তেজস্বী যাদব সহ I.N.D.I.A জোটের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। মঞ্চে প্রত্যেক নেতার বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায়, তৃণমূলের ডেরেক ও'ব্রায়েন সীতারাম ইয়েচুরির পাশ থেকে সরে যান। জেলে থাকা হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেন, সঞ্জয় সিংয়ের স্ত্রী অনিতা সিং এবং সত্যেন্দ্র জৈনের স্ত্রীকেও সামনের সারিতে বসার জায়গা দেওয়া হয়। সনিয়া গান্ধী এবং সুনিতা কেজরিওয়ালের আসন পাশাপাশি রাখা হলেও টিএমসি নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েনের আসনটি বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির পাশে ছিল। ঠিক করা হয়েছিল, ডেরেক ও ব্রায়েনের পাশে বসবেন সীতারাম। ইয়েচুরি ডেরেক ও'ব্রায়েনের পাশে বসেওছিলেন। তবে ডেরেক তাঁর জায়গা পরিবর্তন করে মেহবুবা মুফতির পাশে গিয়ে বসেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, I.N.D.I.A ব্লকের সমাবেশে বাম ও তৃণমূল থাকলেও তাদের যে আদৌ কোনও সমঝোতা হয়নি, তা এই ছবি থেকেই পরিষ্কার।
আসলে পশ্চিমবঙ্গে, বাম এবং টিএমসি একে অপরের কট্টর প্রতিপক্ষ। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার মহুয়া মিত্রর সমর্থনে ধুবুলিয়ার সভা থেকে বলেন, সিপিএম-কে ভোট দেওয়ার অর্থ বিজেপির হাত শক্ত করা। রাজ্যের শাসকদলের সর্বোচ্চ নেত্রী যখন প্রকাশ্যে একথা বলেন, তা থেকেই কার্যত পরিষ্কার হয়ে যায়, বামেদের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে কেমন মনোভাব রাখে তৃণমূল। সেই কারণেই হয়তো ইয়েচুরি যখন পাশে বসেছিলেন, তখন অস্বস্তিতে পড়ে যান ডেরেক। তিনি মেহবুবা মুফতির পাশে বসেন।
এদিনের সভার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সুনীতা কেজরিওয়াল। স্বামীর জেল নিয়ে তিনি কী বলেন তার দিকেই নজর ছিল। সেই সুনীতা বলেন, 'আমি আপনাদের কিছু প্রশ্ন করতে চাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমার স্বামীকে জেলে পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কি সঠিক কাজ করেছেন? আপনি কি বিশ্বাস করেন যে কেজরিওয়াল একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক এবং সৎ ব্যক্তি নন? এই বিজেপি-র লোকেরা বলছে যে কেজরিওয়াল জেলে আছেন, তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। তাঁর কি পদত্যাগ করা উচিত? আপনাদের কেজরিওয়াল একজন সিংহ, ওঁরা তাঁকে বেশিদিন জেলে আটকে রাখতে পারবে না,' বলেন সুনীতা।