ইডির উদ্ধার করা টাকা বাংলার জনগণকে ফেরানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেটাকেই কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরে কর্মীসভায় অভিষেক মোদীর টাকা ফেরানোর ঘোষণাকে জুমলা বলেছেন। অভিষেক বলেন, 'কয়েকদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী বিজেপির দুই প্রার্থীকে ফোন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে বলেছেন ইডি বাজেয়াপ্ত করার ৩০০০ কোটি টাকা ফেরানোর বিষয়ে তিনি আইনি দিক খতিয়ে দেখছেন। বাংলার মানুষকে এই টাকা ফেরানো হবে। ইডি কত টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে? প্রধানমন্ত্রী বলেছে ৩০০০ কোটি টাকা। তামিলনাড়ুতেও একজনকে ফোন করে একথা বলেছেন। ১০ বছর ধরে সারদার তদন্ত হচ্ছে, কেউ টাকা ফেরত পেয়েছেন? ভারতের জনসংখ্যা কত? ১৪০ কোটি। ৩০০০ কোটি যদি ১৪০ কোটি মানুষকে দেওয়া হয় তাহলে একজন ২১ টাকা ৩০ পয়সা করে পাবেন। মানুষকে কত দুর্বল ভাবছে এরা। এই কারণেই তো এদের বাংলা বিরোধী বলেছি। ২১ টাকা দিয়ে ৫ বছরের ভোট চাইছেন মোদী।
বাংলায় একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। আর সেই টাকা এবার গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। ভোট আবহে বঙ্গবাসীকে সেই প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের পর কৃষ্ণনগরের দলীয় প্রার্থী তথা রাজমাতা অমৃতা রায়কে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই ফোনালাপে মোদী বলেন, ইডির উদ্ধার করা দুর্নীতির টাকা বিতরণ করা হবে গরিবদের মধ্যে। এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য তিনি নিজে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন যাতে এই টাকা গরিব মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া যায়। প্রসঙ্গত, বাংলায় বিবিধ দুর্নীতি কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এখনও পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। এই টাকা সাধারণ মানুষের টাকা। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সঙ্গে পাঁচ মিনিট ফোনে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, ইডির বাজেয়াপ্ত করা অর্থ গরিবদের মধ্য়ে বিতরণের চেষ্টা করবেন তিনি।
শনিবার মথুপাপুরের সভায় অভিষেক আরও বলেন, 'ডায়মন্ডহারবার আমার নিজের কেন্দ্র। এটা তার পাশেই। তাই মথুরাপুরের সার্বিক উন্নয়নের দায়ো আমার। আমার দায়িত্ব উন্নয়ন করার। আমি যেভাবে ডায়মন্ডহারবারের ভালবাসা পেয়েছি। মথুরাপুরেও পেয়েছি। এটা আমার দায়িত্ব, দায়বন্ধতা। আমনাদের ঋণ কাজের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেব। বিপদে আপদে তৃণমূল আপনাদের পাশে থাকে। বিজেপি ২০১৯ সালে এসেছিল, ২০২১ সালে এসেছিল, আর আমাদের কর্মীরা আপনাদের পাশে ছিল। আগামী ভোট যারা পাশে ছিল তাদের মাথায় রেখেই দেবেন। আগে আপনারা উন্নয়নকে মাথায় রেখে ভোট দিয়েছিলেন। তাই বিজেপি ধর্মের নামে কোনও খেলা খেলতে পারেনি।'
অভিষেক আরও বলেন, 'পরশু থেকে ১০০০, ১২০০ টাকা পাবেন লক্ষীর ভাণ্ডারে। ২ কোটি ১২ লক্ষ মানুষ লক্ষীর ভাণ্ডার পান। এর জন্য বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা। তিন বছরে ৭০-৭৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ পয়সার অবদান নেই কেন্দ্রীয় সরকারের মোদী সরকার ১০ বছর ধরে বাংলাকে শোষণ করছে। ২০১৪ সালে বলেছিল ১৫ লাখ দেব, ২ কোটি চাকরি দেব, পেয়েছেন? নোটবন্দি করে কালো টাকা ধ্বংস করবে বলেছিল। ১৪০ জন মারা গিয়েছিলেন। কালো টাকা ধ্বংস হয়েছে? সবার মাথায় পাকা ছাদের ব্যবস্থা করার কথা বলেছিল। বিজেপির নেতারা বলছেন, বাংলায় ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে ৩ হাজার টাকা করে দেবেন। বিজেপির সরকার থাকা ১৭টি রাজ্যে ১৫০০ টাকা করে দিতে পারলে রাজনীতি ছাড়ব। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আপনাদের দিতে হবে না, শুধু রান্নার গ্যাস ফ্রি করে দিন, পারলে ১০০০ টাকার গ্যাস ফ্রি করে দিন। বিজেপি ৫ বছর ফ্রি তে গ্যাস দিলে আমরা রাজ্যের ৪২টি আসনের প্রার্থী তুলে নেব।'