দোলের ঠিক একদিন আগে রবিবার রাতে বাংলার জন্য তাদের দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টিতে। বিজেপির দ্বিতীয় প্রার্থীতালিকার রয়েছে একাধিক চমক। যেখানে কেন্দ্র বদল হয়েছে মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষের। কৃষ্ণনগর থেকে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন রাজবাড়ির সদস্য অমৃতা রায়। তমলুকে প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বসিরহাটে প্রার্থঈ করা হয়েছে সন্দেশখালির নির্যাতিতা রেখা পাত্রকে। বিজেপির প্রার্থী তালিকায় চমক আছে পরতে পরতে। আর তাতে সামিল শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রও। শ্রীরামপুর লোকসভা আসনে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর প্রাক্তন জামাই কবীরশঙ্কর বসুকে প্রার্থী করল বিজেপি।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে এবার প্রাক্তন দম্পতির লড়াই দেখছে রাজ্যবাসী। এক দিকে বিজেপি প্রার্থী রয়েছে বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। অন্য দিকে তৃণমূলের প্রার্থী তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল। এ বার হুগলির শ্রীরামপুরও ‘পারিবারিক’ লড়াই দেখা যেবে। সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে কবীরশঙ্কর বসুকে। কবীরের সঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ অনেক আগেই হয়েছে। কিন্তু পারস্পরিক বৈরীতা কাটেনি। পারিবারিক কলহ সামনে এসেছে বহুবার। ২০১৫ সালে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন কবীর। পরে আবার কবীরের আবাসনের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন কল্যাণের অনুগামীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। চুটিয়ে ভোট প্রচার করছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী তথা এ কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ। শ্রীরামপুরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে তাঁরই প্রাক্তন জামাইকে নামিয়ে দিল বিজেপি। এবার ভোটের ময়দানে লড়াইয়ে প্রাক্তন শ্বশুর ও জামাই। কাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাবেন কে? সেদিকেই নজর সকলের।
কে এই কবীরশঙ্কর বসু?
জানা গিয়েছে, বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বসু পেশায় আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করেন তিনি। এর আগে বিধানসভাতেও লড়েছেন তিনি। তবে জয় আসেনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুরে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন কবীরশঙ্কর। সেই ভোটে ডাহা হেরেছিলেন তিনি। তার পরেও এবার সেই শ্রীরামপুরেই প্রার্থী করা হল তাঁকে। তবে এসবের বাইরে আরও একটি পরিচয় রয়েছে তাঁর। কবীরশঙ্কর বসু আদতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন জামাই। কল্যাণবাবুর মেয়ের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছে বহু বছর আগে। সেই সময় তাঁদের দুই পারিবারিক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। ২০১৫ সালে প্রাক্তন শ্বশুরের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলাও করেছিলেন কবীর। তার পর অনেকটা সময় পেরিয়েছে। এবার ভোটের ময়দানে মুখোমুখি প্রাক্তন শ্বশুর-জামাই। মুকুল রায়ের হাত ধরেই কবীর বিজেপিতে আসেন, তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাও পান। গত প্রায় ছ’মাসের বেশি সময় ধরে শ্রীরামপুর এলাকায় কবীরকে বেশ সক্রিয় দেখা যাচ্ছিল। তখন থেকেই এলাকার অনেকে আন্দাজ করতে শুরু করেছিলেন শ্বশুরের বিরুদ্ধে প্রাক্তন জামাইকে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি।