মুসলিমদের কারণেই বিজেপি হেরেছে। রাজ্যে বিজেপির খারাপ ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, মুসলিমরা নিজেদের উন্নয়ন চান না। সেই কারণে তাঁরা ভোট দিয়েছেন তৃণমূলকে।
শুভেন্দুর কথায়, 'মুসলিমরা চাকরি চান না। ভালো হাসপাতাল, চাল, গম, চান না। সেই কারণে ১০০ মুসলিমের মধ্যে ৯২ জন ভোট দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ৪৬ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জিতেছে তৃণমূল। সেটা মুসলিমদের কারণে সম্ভব হয়েছে। বাম ও কংগ্রেসের ভোটের একটা অংশও তৃণমূলে গিয়েছে। এই তোষণের রাজনীতি বাংলাতে চলছে।'
শুভেন্দু আরও দাবি করেন, রাজ্য সরকার যে সব প্রকল্প দেয়, সেই সব প্রকল্প বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, না জেতালে সেই সব এলাকার মানুষকে আর প্রকল্পগুলো দেওয়া হবে না। তাঁর কথায়, 'সাগরদিঘি বিধানসভায় তৃণমূল হেরে যাওয়ার পর সেই সব এলাকার মানুষের মাসিক ১০০০ বা ১২০০ টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই ভয় থেকে হয়তো মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে।'
তবে শুভেন্দু দাবি করেন, আড়াই লাখের বেশি ভোটার বিজেপি-কে ভোট দিয়েছে। ১০০ আসনের বেশি বিধানসভায় লিড রয়েছে বিজেপির। যে ফল হয়েছে তা অপ্রত্যাশিত ঠিকই। তবে তা মেনে নিচতে হবে। তিনি বলেন, 'ভোটে হারজিত থাকে। সেটাই হয়েছে। তবে সন্দেশখালি, জয়নগর, ডায়মন্ড হারবারের মতো আসনে অত ভোটে তৃণমূল প্রার্থীরা কীভাবে জেতে? সন্দেশখালিতে হয়তো কোনও কোনও ক্ষেত্রে ইভিএমও বদলে দেওয়া হয়েছে। আমার কাছে সঠিক তথ্য নেই। তবে এটা হয়েছে বলে মনে হয়। না হলে একজন প্রার্থী সাড়ে সাত লাখ ভোটে কীভাবে জেতে? এ তো বাম জমানা মনে পড়েছে। বাম আমলেও এমন হত। তবে তারা হেরেও গেছে ভবিষ্যতে। তাই এখন থেকে তৃণমূলের এত লাফালাফির কোনও কারণ নেই। তাদেরও পতন হবে।'
৩৯ শতাংশ ভোট নিয়ে বিজেপি জনাদেশ পেয়েছে দাবি করে শুভেন্দু জানান, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন বেড়েছে এটা ঠিক। তা বলে তিনি দিল্লির লড়াইয়ে নেই। দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন। রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দল হিসেবে লড়াই করে আসছে। এই ফলাফলে আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ, আমরা কাল থেকে লড়াই করব। আমাদের হতাশা নেই। আমরা মাঠে ময়দানে যেভাবে লড়াই করছি, সেভাবে করব। '
দলীয় কর্মীদের বিজয় মিছিল না করার পরামর্শ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানান, বিজেপির কর্মীরা বিজয় মিছিল করবেন না, এই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ, তাতে তৃণমূল প্ররোচনা দিতে পারে। সেজন্য বিজেপি-কে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। আর নির্বাচন পরবর্তী হিংসা হলে তার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।