লোকসভা ভোটের ফলের পুনরাবৃত্তিই হচ্ছে মোর্চার তরফে। তাই গোটা রাজ্যেই সার্বিক ভাবে বিপর্যয়ের মুখোমুখি বাম-কংগ্রেস- ISF জোট। শিলিগুড়িতে নিজেরই রাজনৈতিক ছাত্রের কাছে বড় মার্জিনে পিছিয়ে থেকে এমনই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন বাম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ভোট গণনা চলছে, গোটা রাজ্যেই ফল অত্যন্ত খারাপ করছে সংযুক্ত মোর্চা। এটা নিয়ে পার্টির হাই কম্যান্ড রাজনৈতিক ভাবে পর্যালোচনা করবে দিনের শেষে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গজুড়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভাল ফল করেছিল বিজেপি। বিধানসভার নিরিখে দেখতে গেলে ৫৪টি আসনের মধ্যে উত্তরবঙ্গে সেই সময় ৩৭টি আসনে এগিয়ে যায় পদ্ম শিবির। ভোট শেয়ারের নিরিখেও সেখানে ৪০.২৫ শতাংশ ভোট পায় তারা। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে কার্যত ভরাডুবির মুখ দেখতে হয়। বহু জেতা আসনেও বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে তারা।
অনেকের মতে, উত্তরবঙ্গে বিজেপি মেরুকরণের ধ্বজা ধরেই ভোট বৈতরণী পাড় করেছিল লোকসভাতে। যদিও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা কিছুটা হলেও অন্য কথা বলেন। তাদের মতে, রাজনৈতিক মেরুকরণের পাশাপশি বাম ভোটের একটা বড় অংশই তৃণমূলের বিকল্প খুঁজতে বিজেপির দিকে ঘেষে যায়। আর এর ফলেই, ভোট শতাংশের নিরিখে জোড়াফুল শিবিরকে(৪৩.৩) কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় গেরুয়া শিবির।
অন্যদিকে, ২০১৯-এ উত্তরবঙ্গজুড়ে বামেদের ফল খারাপ হলেও, গড় হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়িতে হেভিওয়েট নেতা তথা বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের হাত ধরেও তেমন ভাল ফল করতে পারেনি বামেরা। যদিও, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে মনে করা হয়েছিল সেই ট্রেন্ডটা অনেকটাই বদলাবে। রবিবার ভোটের ট্রেন্ড সেকথা বলল না। এবারেও, দার্জিলং জেলার সমতলের তিন আসনেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এরমধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, টিকিট না পেয়ে সম্প্রতি বাম ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন অশোক ভট্টাচার্যের এক সময়ের রাজনৈতিক ছাত্র শঙ্কর ঘোষ। এবার তিনি শিলিগুড়ি থেকেই অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী।
মনে করা হচ্ছিল এবারের ভোটে বামেদের যে ভোট চলে গিয়েছিল বিজেপির দিকে সেটা অনেকটাই নিজেদের দিকে ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হবে মোর্চা। তবে সকালে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর সেই ধারণা ক্রমাগত পাল্টে যেতে থাকে। বাম-কংগ্রেস-ISF জোট ভরাডুবির দিকেই এগিয়ে যায়। ক্রমাগত পিছিয়ে পড়েছেন অশোক ভট্টাচার্যও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সপ্তম দফার শেষে শঙ্কর ঘোষ প্রায় ২৪হাজার ৬০০ ভোট এগিয়ে রয়েছে।