সপ্তম দফা নির্বাচন হতে চলেছে আগামী ১ জুন। তার আগে বৃহস্পতিবার উত্তর কলকাতার জনসভায় বক্তব্য রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনের আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন বরানগরের প্রাক্তন বিধায়ক তাপস রায়। বিজেপিতে যোগ দিতেই উত্তর কলকাতা লোকসভা আসনের প্রার্থী হন তিনি। তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিপক্ষ তাপস। এদিন নাম না করে দল ছেড়ে যাওয়া তাপস রায়কেই 'গদ্দার' বলে আক্রমণ করেন মমতা।
বলেন, "কেন পালালেন? আমাকেও তো চমকানো-ধমকানো হয়, আমি তো ভয় পাইনি। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তো জেলে যেতে হয়েছিল, ও তো দল ছেড়ে যায়নি। আমাদের অনেক নেতাকে জেলে রেখেছে। যদি কিছু না থাকত তাহলে পালালেন কেন? তিনবার জিতেছেন মানে এই নয় মানুষ আপনাকে ভোট দিয়েছে, মানুষ দলের লোগো দেখে ভোট দিয়েছে, তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। আর আজ একদিন সিবিআই গেছে ভয় পেয়ে গেলেন? এতই ভয় পেলেন যে সঙ্গে সঙ্গে বিজেপিতে চলে গেলেন। আমার কাছে তথ্য আছে একবছর আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল।"
আরও বলেন, "ওদের নিজেদের তো কিছু নেই। তাই ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সের ভয় দেখিয়ে নিয়ে যায়। আমার কাছে অনেক নেতা আছে, ওরকম নেতা আমাদের চাই না। আজ বিজেপি খুব বড় পার্টি হয়ে গেল? সুদীপদাকে নিয়ে বড় বড়, আজে বাজে কথা বলে। শোনো, যে গালি দেয় তার গালি দেওয়ার জন্যও মুরত চাই। নিজের স্বার্থে, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স থেকে বাঁচতে বিজেপি থেকে দাঁড়িয়েছেন, এখানে আপনার জমানত বাজেয়াপ্ত করে দেবেন সুদীপদা। আগামী দিন তিনি দাঁড়াবেন কিনা জানি না, তাই এইবারের জন্য হলেও সুদীপদাকে ভোট দেবেন। কার, তিনি জীবনের প্রথমদিন থেকে লড়াই করেছেন এই মাটিটাকে ভালোবেসে। এসব গদ্দার লোকের সঙ্গে আমরা কাজ করি না।"
এদিকে, বুধবারই তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ ও উত্তর কলকাতার প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তাপস রায়। বুধবার তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। অনুপম রায়ের ওপর হামলার অভিযোগ নিয়ে বলেন, 'কথা হয়েছে অনুপম এর সঙ্গে। বাজার করতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। এতো জনপ্রিয় বিদায়ী সাংসদকে এমন কাজ করতে হচ্ছে কেন? প্রচারে বেড়িয়ে দেখছি দলের পতাকা ছিঁড়ে দিচ্ছে। এটা কাম্য নয়। বলেছি অভিযোগ জানাতে। আইন অনুযায়ী যা পদক্ষেপ করার করতে।'
কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে এবার লড়াই যে জোর হবে তার আভাস প্রথম থেকেই মিলেছে। ২০০৯ থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায় এখানকার সাংসদ। চারবারের বিধায়কও তিনি। তবে দলের অন্দরেই তাঁকে নিয়ে ক্ষোভের অভিযোগ মাঝেমধ্যেই উঠে আসে। এমনকী তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও সুদীপের এ আসন থেকে লড়াইয়ের বিরোধিতা করে বহুবার প্রকাশ্যে বলেছেন।