তৃণমূলের সবথেকে বড় উদ্দেশ্য ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি। ভোটব্যাঙ্ককে সুরক্ষিত রাখতে যে কোনও পর্যায়ে নামতে পারে বাংলার শাসকদল। এই ভাষাতে তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বারাসতের অশোকনগরের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী, ওবিসি ইস্যুও তুলে ধরেন। তাঁর অভিযোগ, লাখ লাখ ওবিসি-র সঙ্গে প্রতারণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
মোদী দাবি করেন, লাখ লাখ ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তৃণমূল। হাইকোর্ট বলেছে, ৭৭ মুসলমান জাতিকে যে ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল, তা অসাংবিধানিক। নরেন্দ্র মোদীর কথায়, 'কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, মুসলমানদের জন্য যে ওবিসি সংরক্ষণের ঘোষণা করা হয়েছিল, তা অসাংবিধানিক। এটা করা যায় না। তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তের ফলে লাখ লাখ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। তৃণমূল প্রতারণা করেছে সেটাও পরিষ্কার। অর্থাৎ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে গিয়ে রাজ্যের শাসকদল এসব করেছে।'
মোদী আরও বলেন, হাইকোর্টের রায় থেকে পরিষ্কার যে, পশ্চিমবঙ্গের লাখ লাখ মানুষকে ওবিসি হিসেবে বঞ্চিত করা হয়েছে। কংগ্রেস ও তৃণমূল সব সময় তুষ্টিকরণের রাজনীতি করে থাকে। এটা ওদের চরিত্র।
ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই রায়ের সমালোচনা করেছিলেন। তা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে আক্রমণ করেন। বলেন, 'ওবিসি নিয়ে রায় দেওয়ার পর অনেকে হাইকোর্টের সমালোচনা করেছেন। বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পশ্চিমবঙ্গের আজ এমন অবস্থা কেন? তাহলে কি তৃণমূলের গুন্ডারা এবার বিচারপতিদের উপরও রেগে গিয়ে তাঁদের আক্রমণ করে বসবেন?'
তৃণমূলকে আক্রমণ করে মোদী আরও বলেন, 'তৃণমূলের বিধায়ক হিন্দুদের ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। এখানকার সাধুরা সেই ভুল শুধরে নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল সেই সন্তদেরই গালিগালাজ করেছে। রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, ইসকনের সন্ন্যাসীদের অপমান করা হয়েছে। ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে এবং ভোট জিহাদদের এগিয়ে নিয়ে যেতে এমনটা করা হয়েছে।’
মোদী দাবি করেন, তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাধিকবার গঠনমূলক কাজ করেছেন। কোনও দুর্নীতি হতে দেননি। তিনি বলেন, 'এখন মোদী দেশকে এবং পশ্চিমবঙ্গকে গ্যারান্টি দিচ্ছি, যাদের থেকে টাকা লুট হয়েছে, তাদের টাকা ফেরত দেব। এক এক টাকার হিসাব হবে। আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। লুট হওয়া ১৭ হাজার কোটি টাকা মানুষকে ফেরত দিয়ে দিয়েছি।'
বসিরহাট লোকসভার প্রার্থী রেখা পাত্রর প্রশংসাও করেন মোদী। তিনি বলেন, 'এখানে সন্দেশখালির বোনেরা ন্যায় চেয়েছিলেন। জবাবে টিএমসি উল্টে তাঁদেরই টার্গেট করে। বসিরহাট থেকে আমাদের বোন রেখা পাত্র মঞ্চেই আছেন। আর কী দারুণ ভাষণ দিলেন তিনি! এটায় সংবাদমাধ্যমের নজর গেছে তো? তৃণমূলে একজনও এমন নেতা নেই যিনি রেখা পাত্রের মতো ভাষণ দিতে পারেন। দেশ দেখছে, কীভাবে একটা গরিবের মেয়েকে বিজেপি দেশের সংসদে পৌঁছানোর জন্য এত বড় পদক্ষেপ করেছে। আর আমার বিশ্বাস, এটি একটি পবিত্র কাজ। নারীশক্তির সম্মানের লড়াই করা হচ্ছে। রেখা পাত্র শক্তিশালী হলে, দেশের মহিলাদের কন্ঠস্বর তিনি সংসদে পৌঁছে দেবেন।'