কোচবিহারের শীতলকুচিতে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দায়ী করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করলেন তিনি। আজ, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর জনসভা থেকে মমতা বলেন, 'আজ কোচবিহারে দিল্লির পুলিশ আমার ৫ ভাইকে মেরে দিয়েছে। খুন করেছে। আমি এর নিন্দা করছি। সকালে আরও একজনকে মেরেছিল। আমি বলছি, এজন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দায়ী। আমি তাঁর পদত্যাগ দাবি করছি।'
সেই সভা থেকে মমতা আরও বলেন, 'অমিত শাহ চক্রান্তকারী। তাঁর জন্যই মৃত্যু হয়েছে মানুষের। আমি অনেকদিন ধরে বলছি CRPF চক্রান্ত করছে। আমার কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতি কোনও ক্ষোভ, রাগ নেই। কিন্তু, গ্রামে গ্রামে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার হচ্ছে। মেয়েদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। ছেলে-মেয়েদের প্রভাবিত করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে BJP-কে ভোট দাও। ভোটের লাইনে গিয়ে গুলি চালিয়ে দিলি? এত বড় সাহস কে দিল? পঞ্চায়েত ভোটেও এত লোক মারা যায়নি। এই নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে ভোট করতে গিয়ে এই ৫ জনকে নিয়ে ২০ জন মারা গিয়েছেন। তাই, এই BJP-কে একটিও ভোট দেবেন না।'
এরপর আর একটি সভা থেকে মমতা বলেন, 'ভোটে হেরে গিয়ে এখন মানুষ খুন করছে BJP। ওদের লজ্জা নেই। লুট-দাঙ্গা করতে ওরা সবচেয়ে পারে।' পাশাপাশি আজই, উত্তরবঙ্গে যাবেন বলে ঘোষণা করেন মমতা। জানান, কোচবিহারের সেই অশান্ত জায়গায় তিনি যাবেন। কাল রাজ্যজুড়ে কালো ব্যাজ পরে অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করবে তৃণমূল।
শীতলকুচিতে এই ৪ জনের মৃত্যুর পর তৃণমূলের তরফে একের পর এক আক্রমণ শানানো হয়েছে BJP-র বিরুদ্ধে। দলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর ট্যুইট, নির্বাচন কমিশন কেন্দ্র সরকারের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কমিশনই। তাদের দায় নিতে হবে। ঘটনার প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনে দলের প্রতিনিধিরা যাবেন বলেও জানান সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় সরাসরি আক্রমণ করেন অমিত শাহকে। বলেন, 'অমিত শাহজি এভাবেই আপনি বাংলাকে সোনার বাংলা বানাবেন?'
প্রসঙ্গত, শীতলকুচির জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে প্রাণ যায় ৪ জনের। নির্বাচন কমিশন তা স্বীকার করে নেয়। তাদের তরফে জানানো হয়, গুলি চালিয়েছে সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স। রাজ্য নির্বাচন পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে জানিয়েছেন, তৃণমূল এবং BJP-র মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। বাধা দেওয়া হচ্ছিল ভোটদানেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরা হয়। তাতেই গুলি চলে।
যদিও তৃণমূলের অভিযোগ বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়ে ৪ জনকে খুন করেছে জওয়ানরা। ওই ৪ জন তাদের দলের কর্মী। তবে BJP নেতা নিশীথ প্রামাণইক সেই তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লাগাতার উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন মমতা। তাতেই একটি শ্রেণির লোক উত্তেজিত হয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর হামলা চালায়। বাহিনী গুলি চালালে আত্মরক্ষার্থেই চালিয়েছে।