
কয়েকমাস পরই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে বাংলায় সংগঠন গড়তে কোমর বেঁধে নামছে আসাদুদ্দিন ওয়েইসির ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)। মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে হাত করতে রাজ্যজুড়ে অধিকার যাত্রা শুরু করছেন সেই দলের কর্মী-সমর্থকরা। ১৯ ডিসেম্বর, শুক্রবার থেকে তা শুরু হবে।
কয়েক মাস আগে থেকেই মালদা, মুর্শিদাবাদ-সহ একাধিক জেলায় সক্রিয় হয়েছে মিম। তাদের তরফে প্রচার চালানো হচ্ছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামগুলোর বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছেছেন সেই দলের কর্মীরা। ছোটো, ছোটো জমায়েত এবং সভাও করছেন। তবে এবার 'অধিকার যাত্রা' করে আরও নজর কাড়তে চাইছে তারা। রাকঢাক না করেই দলের নেতারা জানাচ্ছেন, তাঁদের লক্ষ্য মুসলিম ভোট।
AIMIM-এর রাজ্য সভাপতি ইমরান সোলাঙ্কি এই নিয়ে জানান, মালদা, মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুর, চব্বিশ পরগনা, হাওড়া জেলায় যে বৃহৎ অংশের মুসলমান ভোটার রয়েছে, তাদের এলাকায় পৌঁছনো ও প্রচার করা হল দলের লক্ষ্য। সেজন্য 'অধিকার যাত্রা' শুরু হবে। ১৯ ও ২০ তারিখ তা হওয়ার কথা মালদা ও মুর্শিদাবাদে। তারপর বাকি জেলাগুলোতেও চলবে।
রাজ্যের ওই নেতার অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার বৃহৎ অংশের মুসলিমের ভোট পায়। অথচ তাদেরই বঞ্চনা করে আসছে বছরের পর বছর। এমনকী পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে মুসলমানদের জন্য ৪০ শতাংশ সংরক্ষণের দাবিও জানান। বলেন, ' আমাদের লক্ষ্য ভোটারদের কাছে গিয়ে বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হবে। 'অধিকার যাত্রা' বিধানসভা ভিত্তিক হবে। বাংলায় ৪০ শতাংশ মুসলমান। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের চাকরিতে মুসলমানদের জন্য ৪০ শতাংশ সংরক্ষণ করতে হবে। এটা আমাদের দাবি।'
ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গস সরকারের অবস্থানকে তুলোধনা করেন ইমরান। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় কেন্দ্রের ওয়াকফ আইন মানবেন না বলেও পরে মেনে নিয়েছেন। এতে তাঁর দ্বিচারিতা প্রকাশ পেয়েছে। সেই প্রচারও চালানো হবে। বলেন, 'রাজ্য সরকার আমাদের ওয়াকফ বোর্ডের থেকে টাকা নিয়ে ইমামদের ভাতা দিচ্ছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, ইমামদের মাসে ১৫ হাজার টাকা ও মোয়াজ্জেমদের ১২ হাজার টাকা দিতে হবে। ওয়াকফ বিল আসার পর টিএমসি বলেছিল, তারা মানবে না। কিন্তু মেনেছে। ফলে আমাদের অনেক মাদ্রাসা, মসজিদ শেষ হয়ে যাবে।'
কয়েকদিন আগেই শোনা গিয়েছিল, মালদা জেলার ১২টি আসনের মধ্যে প্রায় ১০ টি আসনে প্রার্থী দিতে পারে মিম। ইতিমধ্যেই জেলায় প্রায় ২০টি কার্যালয় খুলেছে তারা। কয়েকদিন আগেই ওয়াকফ নিয়ে মালদা জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিরও আয়োজন করেছিল। এও খবর, জানুয়ারি মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলা সফর করতে পারেন দলের সুপ্রিমো আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তার আগেই সংগঠন মজবুত করতে চাইছে দল।