Advertisement

তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত মোসারফ, সক্রিয় মিম, বোমায় আক্রান্ত জাকির, মুর্শিদাবাদে নয়া সমীকরণ?

মাত্র কয়েক ঘণ্টার পার্থক্য। দল থেকে বহিষ্কার এক নেতা, অপর দিকে বোমার আঘাতে আক্রান্ত রাজ্যের মন্ত্রী।স্বভাবতই এই ঘটনাতে ঘিরে উথালপাথাল রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে নির্বাচনের বাজারে হঠাৎ এমন কী হল যাতে সরাসরি রাজ্যের মন্ত্রীকে আক্রান্ত হতে হল বোমার আঘাতে! এর নেপথ্যে কি রাজনৈতিক কারণ, না কি অন্য কোনও বিষয়? তবে কি মুর্শিদাবাদের (murshidabad) রাজনৈতিতে ঘটতে চলেছে নতুন কোনও সমীকরণ?

আব্বাস সিদ্দিকী, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, মোসারফ হোসেন, আসাদুদ্দিন ওয়েইসি, জাকির হোসেন (বামদিক থেকে)
প্রীতম ব্যানার্জী / গোপাল ঠাকুর
  • মুর্শিদাবাদ,
  • 18 Feb 2021,
  • अपडेटेड 5:11 PM IST
  • বহিষ্কৃত হওয়ার পর কংগ্রেস যাওয়ার ঘোষণা মোসারফের
  • সক্রিয় ওয়েইসি, চুপ নেই আব্বাসও
  • বোমায় আক্রান্ত জাকির হোসেন, কোন পথে মুর্শিদাবাদ?

আবারও খবরের শিরোনামে (murshidabad) প্রথমে জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেনকে (Mosaraf Hossain) দল থেকে বহিষ্কৃত তৃণমূলের (TMC)। আর তার কয়েক ঘণ্টা পরেই বোমার আঘাতে গুরুতর জখম রাজ্যের মন্ত্রী জাকির হোসেন (zakir hossain)। একইসঙ্গে বোমার আঘাতে জখম হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। স্বভাবতই এই ঘটনাতে ঘিরে উথালপাথাল রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে নির্বাচনের বাজারে হঠাৎ এমন কী হল যাতে সরাসরি রাজ্যের মন্ত্রীকে আক্রান্ত হতে হল বোমার আঘাতে! এর নেপথ্যে কি রাজনৈতিক কারণ, না কি অন্য কোনও বিষয়? তবে কি মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিতে ঘটতে চলেছে নতুন কোনও সমীকরণ?

সাম্প্রতিককালে বিজেপিতে যোগদান করেছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তৃণমূলে থাকাকালীন দীর্ঘ দিন মুর্শিদাবাদ জেলায় দলের পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, সেই কারণে শুভেন্দু বিজেপিতে গেলেও মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলে এখনও অনেকেই রয়েছেন যাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগযোগ রয়েছে তাঁর। এক্ষেত্রে জেলার নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেনের কথাই ধরা যাক। জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিনি। এদিকে দল বিরোধী কাজ ও দীর্ঘদিন দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত না থাকার অভিযোগে বুধবারই তাঁকে বহিষ্কারের করেছে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে শুভেন্দুর সঙ্গে মোসারফের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার মনে করা হয়েছিল এবার হয়ত তাঁর বিজেপিতে (BJP) যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন তিনি। মোসারফ সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন কোনও সাম্প্রদায়িক দলে তিনি যাবেন না। বরং তিনি কংগ্রেসে (Congress) যোগদান করবেন বলেই জানিয়েছেন মোসারফ। 

রাজনৈতিক মহল মনে করছে এই ঘটনা আরও একবার যেমন তৃণমূলের অন্তর্কহলক প্রকাশ্যে এনে দিল, তেমনই মোসারফের এই ঘোষণা আরও একবার মনে করিয়েদিল মুর্শিদাবাদে এখনও শেষ হয়ে যায়নি কংগ্রেস। নবাবী জেলার রাজনীতিতে এখনও ফ্যাক্টর অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেক্ষেত্রে বাস্তবেই মোসারফ কংগ্রেসে যোগ দিলে নির্বাচনের আগে মুর্শিদাবাদে হাতের জোর যে বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্য দিকে আবার মুর্শিদাবাদে ইতিমধ্যেই সক্রিয় আসাদুদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম। ছোট বড় সভাও শুরু করে দিয়েছে তারা। সরাসরি রাজৈনিতক সভা না করলেও একেবারে চুপ করে বসে নেই আব্বাস সিদ্দিকীও (Abbas Siddiqui)। সম্প্রতি ডোমকল ও জলঙ্গীতে ২টি ধর্মীয় সভার মধ্যে দিয়েই নিজের রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন আব্বাস। এদিকে আবার কিছুদিন আগে রাজ্যে এসে আব্বাস সিদ্দিকীকে নির্বাচনে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন আসাদুদ্দিন ওয়েইসি (Asaduddin Owaisi)। অন্যদিকে আবার বাম কংগ্রেসের জোটে যোগ দিতে পারে আব্বাস সিদ্দিকীর দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। সেক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত এই জোট বাস্তবায়িত হলে মুর্শিদাবাদ জেলার সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক ভাগভাগি হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 

Advertisement

এদিকে নির্বাচনের এই সমস্ত চুলচেরা বিশ্লেষণের মাঝেই বোমার আঘাতে জখম হলেন মন্ত্রী জাকির হোসেন। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা জাকির বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ২০১৬ সালে তৃণমূলের হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রবেশ জাকিরের। ভোটে জয়ের পর তাঁকে শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী করেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় একেবারে স্বচ্ছ ভাবমূর্তিরই অধিকারী জাকির। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাছে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের আপদে বিপদেও তাঁকে পাওয়া যায় বলেই মত জেলাবাসীর। এহেন ব্যক্তিত্বের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় স্বভাবতই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে। ঠিক কী কারণে এই ঘটনা সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত ভাবে কিছু জানাননি তদন্তকারীরা। তবে উদ্দেশ্যে যাই থাক, এই ঘটনা নির্বাচনের আগে মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও ঘোরালো করে তুলল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সেক্ষেত্রে এবারের নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ যে আলাদ করে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের নজর কাড়তে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষ রাখে না।  


 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement