Advertisement

চ্যালেঞ্জ উঃ দিনাজপুর! সংখ্যালঘুই মাথাব্যথা BJP-র?

এখন চলছে শেষ মুহুর্তের হিসেব মেলানোর পর্ব। তৃণমূল-বিজেপি দুই দলেরই মত ক্ষমতায় আসছেন তাঁরাই। যদিও উত্তর মিলবে ২মে। কিন্তু এর আগে দেখা নেওয়া যাক উত্তর দিনাজপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র কেন ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে?

নির্বাচনী প্রাক্কালে পরিসংখ্যান দেখলে এটা স্পষ্ট যে উত্তর দিনাজপুর কংগ্রেস গড়ই ছিল এককালে। নির্বাচনী প্রাক্কালে পরিসংখ্যান দেখলে এটা স্পষ্ট যে উত্তর দিনাজপুর কংগ্রেস গড়ই ছিল এককালে।
দেবস্মিতা দাস
  • কলকাতা ,
  • 25 Mar 2021,
  • अपडेटेड 4:48 PM IST
  • নির্বাচনী প্রাক্কালে পরিসংখ্যান দেখলে এটা স্পষ্ট যে উত্তর দিনাজপুর কংগ্রেস গড়ই ছিল এককালে
  • লোকসভার রেকর্ড বাদে বিজেপি কিন্তু এই অঞ্চলে কার্যত 'শূন্য হাতেই'
  • ৪৯.৯ শতাংশ মুসলিম ভোটার রয়েছেন উত্তর দিনাজপুরে

একুশের বিধানসভা নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে প্রস্তুতি প্রায় সমাপ্ত রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের। এবার চলছে শেষ মুহুর্তের হিসেব মেলানোর পর্ব। তৃণমূল-বিজেপি দুই দলেরই মত ক্ষমতায় আসছেন তাঁরাই। যদিও উত্তর মিলবে ২মে। কিন্তু এর আগে দেখা নেওয়া যাক উত্তর দিনাজপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র কেন ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে?

নির্বাচনী প্রাক্কালে পরিসংখ্যান দেখলে এটা স্পষ্ট যে উত্তর দিনাজপুর কংগ্রেস গড়ই ছিল এককালে। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সাবডিভিশন রায়গঞ্জের সাংসদ ছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। ২০০৯ সালে সেই পদে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের টিকিটেই ৫০.২৯ শতাংশ ভোট নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। ২০১৪ সালে বামপ্রার্থী মহম্মদ সেলিম এই কেন্দ্রে জয়ী হন। তবে ২০১৯ সালে ৪০.০৬ শতাংশ ভোটে রায়গঞ্জ দখল করেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরি। 

ভোট বিশ্লেষণে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা দেখেছেন উত্তর দিনাজপুরে কংগ্রেস ও বামেদের ভোট গিয়েছে 'রামেই'। গত লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে লিড পায় বিজেপি। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে তবে কেন চিন্তিত বিজেপি। নির্বাচন কখনই কেবল হাওয়া বুঝে নয়, ইতিহাসও জড়িত থাকে। ইংরেজিতে যা 'ট্র্যাক রেকর্ড'। সেই অনুসারে রায়গঞ্জ হোক কিংবা ইসলামপুর সাব ডিভিশন গত লোকসভার রেকর্ড বাদে বিজেপি কিন্তু এই অঞ্চলে কার্যত 'শূন্য হাতেই'। 

আরও পড়ুন

এর নেপথ্যে অবশ্য অন্য হিসেব দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। অবশ্যই তা মুসলিম ভোট। একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়  বাংলায় ২০১৪ সালে বিজেপির পক্ষে ২১ শতাংশ হিন্দু ভোট দিয়েছেন। ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয় ৫৭ শতাংশ। অন্যদিকে, বাংলায় ২০১৪ সালে সেভাবে মুসলিমদের ভোট বিজেপির পক্ষে পড়েনি। তবে ২০১৯ সালে ৪ শতাংশ মুসলিম ভোট বিজেপির পক্ষে পড়ে। সেখানে ২০১৯ সালে ৭০ শতাংশ মুসলিম ভোট তৃণমূল পেয়েছে লোকসভা নির্বাচনে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে হিন্দুদের ৩২ শতাংশ ভোট পায় তৃণমূল। ২০১১ এবং ২০১৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে দুই দিনাজপুরে খাতাই খুলতে পারেনি বিজেপি। 

Advertisement

এখন যদি জনসংখ্যার হিসেব করা যায় তাহলে ২০১১ সালের জনগণনার হিসেব বলছে ধর্মভিত্তিক নিরিখে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে এগিয়ে রয়েছে বাংলা। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, মালদা ও উত্তর দিনাজপুরে হিন্দু জনসংখ্যার থেকে ছাপিয়ে গিয়েছে মুসলিম জনসংখ্যা। উত্তর দিনাজপুরে রয়েছে ১৫ লক্ষ মুসলিম, ১৪ লক্ষ হিন্দু। ৪৯.৯ শতাংশ মুসলিম ভোটার রয়েছেন উত্তর দিনাজপুরে। বাকি জেলাগুলিতে ৩৭ শতাংশের আশপাশে মুসলিম জনসংখ্যা। তবে বিগত দশ বছরে সেই সংখ্যা বেড়েছে অনেকটাই এমনটাই মত একাংশের। 

বিজেপির চিন্তার কারণ কি সেটাই? ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের হিসেব বলছে মধ্যবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে বিজেপিকে ধরাশায়ী করে বেরিয়ে যায় তৃণমূল। আর এই দুই এলাকার ভোটব্যাঙ্কের একটা বড় অশ হল মুসলিম ভোটার। জম্মু-কাশ্মীর থেকে সিএএ, শাহিনবাগ আন্দোলন মুসলিমদের বিরুদ্ধে নাম উঠেছে বিজেপিরই। একুশের নির্বাচনে ধর্মীয় মেরুকরণের প্রভাব পড়বে ভোটবাক্সে এই হিসেব পরিস্কার পদ্ম শিবিরের কাছেও। বিশেষ বিশেষ কেন্দ্রে মুসলিমদের প্রার্থী করার স্ট্র্যাটেজি থেকে কিছু বিষয় স্পষ্টতা পায়। মোদী-শাহ ছাড়াও উত্তর দিনাজপুরে বিজেপির ভরসা দেবশ্রী। সে ম্যাজিকে কাজ না হলে এই কেন্দ্র পদ্মের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠবে আগামীদিনেও এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Read more!
Advertisement
Advertisement