ভোট, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব। আর ভোট মানেই শাসক বিরোধী, ডান বাম সব পক্ষের ঝুড়ি ঝুড়ি আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতি। ভোট মিটে যায়, সরকার তৈরি হয়। কিন্তু মানুষের অবস্থার কতটা পরিবর্তন হয়? বছরের পর বছর এই প্রশ্ন একইভাবে প্রাসঙ্গিক। দেখতে দেখতে আরও একবার রাজ্যে বেজে গিয়েছে ভোটের বিউগল। ৮ দফার নির্বাচনের প্রথম ভোটগ্রহণ আগামী ২৭ তারিখ। সেই দিন যে সমস্ত জায়গায় ভোট রয়েছে তার অন্যতম পুরুলিয়া (Purulia) জেলা। বর্তমান রাজ্য সরকারের দাবি, ২০১১ সালে তারা ক্ষমতায় এসে রুক্ষ শুষ্ক এই জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নয়ন করেছে। জেলার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, রাস্তাঘাট, পানীয় জল বা কর্মসংস্থান, সব ক্ষেত্রে এসেছে পরিবর্তন। কিন্তু কেমন আছেন জেলার লোকশিল্পীরা?
পুরুলিয়া জেলার অন্যতম লোকশিল্প ছৌ নাচ (Chhau Dance)। বিশেষ ধরনের পোশাক, মুখোশ ও নৃত্যশৈলীর জন্য শুধু মাত্র বাংলাতেই নয়, গোটা দেশে, এমনকি দেশের বাইরেও ছড়িয়ে রয়েছে এই লোকনৃত্যের সুনাম। জেলার বহু মানুষের জীবিকা জড়িয়ে এই লোকনৃত্যের সঙ্গে। কিন্তু সেই ছৌ শিল্পীরা কেমন আছেন এখন? সেই শিল্পেরই বা কেমন অবস্থা? জেলার বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা তথা ছৌ শিল্পী শ্যামাপদ মাহাত জানান, তাঁদের মতো বহু শিল্পীই আছেন, যাঁদের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। সরকারি সহযোগিতা বলতে শুধুই শিল্পী পেনশন। তার অঙ্ক মাসিক ১ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে এই মূল্যবৃদ্ধির যুগে তা দিয়ে খুব বেশি সুরাহা হয় না বলেই জানাচ্ছেন শ্যামাপদবাবু। শিল্পীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই যে মাঝে মধ্যেই দিল্লি থেকে নেতা মন্ত্রীরা আসছেন তাঁরা কোনও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন? উত্তরে তেমন কোন আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি পাননি বলেই জানান শ্যামাপদ বিশ্বাস।
তাহলে সংসার চলে কীভাবে? জবাবে শ্যামপদবাবু জানান, শিল্পী পেনশন ছাড়া কোথাও নৃত্য প্রদর্শনের ডাক এলে কিছু রোজগার হয়। এই দুয়ে মিলেই যাহোক করে চালাতে হয় সংসার। তার মধ্যে মাঝে আবার দীর্ঘ লকডাউন গিয়েছে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি খুবই কঠিন হয়ে গিয়েছে বলেই জানান তিনি। এই অবস্থায় শ্যামাপদবাবুর আবেদন, সরকারে যাঁরাই আসুন, তারা যেন ছৌ শিল্প ও তার সঙ্গে জড়িত শিল্পীদের খেয়ে পরে বেঁচে থাকার দিকটায় আরও একটু নজর দেন।