গত শনিবার শুভেন্দু অধিকারী সহ শাসক দলের একাধিক বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সেই দলে একমাত্র সাংসদ হিসাবে রয়েছেন সুনীল মণ্ডলও। এদিন হেস্টিংসে বিজেপির নতুন নির্বাচনী কার্যালয়ে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু সেই সমবর্ধনার আগেই বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে বেধে গেল ধুন্ধুমার। অভিযোগ এদিন ভারতীয় জনতা পার্টির দফতরে ঢোকার সময় পূর্ব বর্ধমানের দলত্যাগী সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। কালো পতাকাও দেখান হয় সাংসদকে। সুনীলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শোনা যায় তৃণমূল কর্মীদের। তৃণমূল কর্মীরা রাস্তায় শুয়ে পড়ে সাংসদের গাড়ি আটকানোয় পুলিশের সামনেই তাদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
কেবল সুনীল মণ্ডল নয়, এদিন একাধিক দলত্যাগী বিধায়ক-নেতা বিজেপির পার্টি অফিসে ঢুকতে গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। এর পাল্টা আওয়াজ তোলে গেরুয়া শিবিরও। এদিন তৃণমূলের বিক্ষোভের সময় বিজেপির কর্মী ও সুনীল মণ্ডলের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও মতে সাংসদকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন বলে দাবি করছে গেরুয়া শিবির। সুনীল মণ্ডলকে তৃণমূল কর্মীরা ধাক্কা দিয়েছে বলেও অভিযোগ বিজেপির। তৃণমূল ও বিজেপির ধস্তাধস্তি আটকাতে গিয়ে পুলিশকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। বাড়িত বাহিনী আনাকে হয় হেস্টিংসে।
কয়েকদিন আগেই ডায়মন্ডহারবারে সভা করতে যাওয়ার সময় হামলার মুখে পড়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়। তারপর সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া সাংসদ সুনীল মণ্ডলের ওপর হামলা। সুনীলের ওপর হামলার বিষয়টিকে একেবারেই খাটো করে দেখতে চাইে না বিজেপি নেতৃত্ব। তাই ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে পুরো বিষয়টি জানান হয়েছে বলে দাবি করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সূত্রের খবর, কৈলাস কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে যে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
বিজেপি’র হেস্টিংস পার্টি অফিসের সামনে তৃণমূল অস্থায়ী মঞ্চ করে কৃষি আইনের প্রতিবাদে পথসভা করছে। বিজেপি অফিসে ঢোকার মুখেই তৃণমূলের এই মঞ্চটি বাঁধা হয়েছে। তৃণমূলের ঝান্ডা এবং প্রতীক লাগানো মঞ্চ থেকেই সুনীল মণ্ডলের গাড়ি যাওয়ার সময় প্রথমে কালো পতাকা দেখানো হয়। ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিষয়টিকে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ বলে অভিহিত করেছেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর কথায়, ‘ঘটনাটি প্রত্যক্ষভাবে জানি না। তবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিক্ষোভ দিখয়েছে। একটা লোক তৃণমূলের টিকিটে দুবার জিতে পার্টি ছেড়ে দিচ্ছে, এটা লোকে মেনে নিতে পারছে না। দলত্যাগ বিরোধী আইন ভঙ্গ করেছে সুনীল মণ্ডল। পার্টি ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’ এদিকে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আবার বলছেন, সুনীল মণ্ডলের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কারও যোগ নেই। সাংসদ হিসাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারাতাই মানুষ এসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।