দু'দিনের রাজ্য সফর শেষ। এবার বাংলা থেকে বিদায় নেওয়ার পালা। তবে শেষ দিনের বঙ্গ সফরে যে ঝড় তিনি তুলে দিয়েছেন তাতে আগামী দিনের ভোটযুদ্ধে দুই শিবিরের মহাসংগ্রাম যে আরও ধুন্ধুমার হবে তাঁর ইঙ্গিত স্পষ্ট। সকাল থেকেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি সাংসদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে কী বক্তব্য রাখেন তারি দিকে নজর ছিল বাংলার রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু তার আগেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠল নাড্ডার কনভয়ে হামলাকে কেন্দ্র করে। তৃণমূল যুব সভাপতির শক্ত ঘাঁটিতে এই হামলার পেছনে শাসক দলকেই দায়ি করে চলেছে বিজেপি শিবির। সভামঞ্চ থেকে তোপ দেগেছেন নাড্ডাও। ১০ বছর আগে বাম সরকারের বিরুদ্ধে যে পরিবর্তনের স্লোগান তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার ডায়মন্ডহারবারের মাটিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে সেই পরিবর্তনের পাল্টা স্লোগান দিলেন নাড্ডা। তবে ৩৫৬ নয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই যে বিজেপি বাংলা জয় করবে, দিনের শেষে সেই কথাই তৃণমূল শিবিরকে জানিয়ে গেলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ। প্রাশনের রাজনৈতিককরণ ঘটেছে। এমন কানাঘুষোও শোনে গেছে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে জারি হবে ৩৫৬ ধারা। রাষ্ট্রপতি শাসনেই ২০২১ এর বঙ্গভোট অনুষ্ঠিত হবে। তবে বাংলা সফরের শেষদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি কিন্তু এই বিতর্কিত প্রশ্ন এড়িয়েই গেলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়ে দিলেন, গণতান্ত্রিক ভাবেই বাংলার শাসনভার নেবে ভারতীয় জনতাপার্টি। মমতা সরকারের অসহিষ্ণুতা ও আইনশৃঙ্খলাহীনতার রাজ্যবাসী অতিষ্ঠ। তাই বদল এবার আসছেই বলে দাবি করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। আগামী নির্বাচনে শাহের বেঁধে দেওয়া ২০০টির বেশি আসনে পদ্ম ফুঁটবে বলেই দৃঢ়প্রতিঙ্গ তাঁর সহযোদ্ধা।
বৃহস্পতিবারই নাড্ডার উপর ঘটনাকে 'নাটক' বলে উল্লেখ করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর দাবি সভায় লোক হয়নি বলেই প্রচারের নজর ঘোরাতে এই নাটক করছে বিজেপি। এনিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। প্রশাসন সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন জ্ঞান নেই বলেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন নাড্ডা। তিনি নিজে জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাওয়ায় বুলেট প্রুফ গাড়িতে ছিলেন। সেই কারণেই রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষ ও কৈলস বিজয়বর্গীয়দের মত নেতাদের চোট লেগেছে। সেই প্রসঙ্গে টেনেই নাড্ডার তোপ, যখন জন প্রতিনিধিরাই সুরক্ষিত নয় সেখানে সাধারণ মানুষের কী হাল তা সহজেই অনুমেয়। অসহিষ্ণুতার আরেক নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি সভাপতির কথায়, রাজ্যে প্রশাসন নেই, রয়েছে কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এদিনের হামলার ঘটনায় বিজেপি কর্মীদের পাশাপাশি ৮টি শিশুও আহত হয়েছে। তাদের দেখভালের দায়িত্ব এবার থেকে ভারতীয় জনতাপার্টির বলেই ঘোষণা করেন জেপি নাড্ডা।