Advertisement

Bengal Election 2021: নন্দীগ্রাম থেকে মমতা, তৃণমূলের পাল্টা রণকৌশল তৈরি করতে আসরে BJP-র শীর্ষ নেতৃত্ব

দেখা হোক মুখোমুখি, দিদির সঙ্গে আমার। জামানত বাজেয়াপ্ত করে দেব।’ -এত বড় একটা কথা শুভেন্দু অধিকারী কেনই বা বলতে গেলেন! তার কারণ, শুভেন্দু অধিকারী নিজেই নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াবেন না এবং অন্য কোনও আসনের থেকে লড়তে পারেন –এমন খবর বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচিত হচ্ছিল। তাহলে কেন এহেন বীরত্ব প্রদর্শন? রাজনৈতিক বিশ্লেষক’রা বলছেন, এটাকে বলে ‘Brinkmanship’ অর্থাৎ ‘পেশীর প্রদর্শন’।

মমতা বনর্জী
জয়ন্ত ঘোষাল
  • কলকাতা/দিল্লি,
  • 20 Jan 2021,
  • अपडेटेड 8:21 PM IST
  • প্রশ্ন হচ্ছে যে, এরপর বিজেপি কি করবে?
  • তৃণমূলের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে, এটা হল দিদির মাস্টার স্ট্রোক
  • রাজনৈতিক বিশ্লেষক’রা বলছেন, এটাকে বলে ‘Brinkmanship’ অর্থাৎ ‘পেশীর প্রদর্শন’

পশ্চিমবঙ্গে নন্দীগ্রাম থেকে নির্বাচন লড়ার ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা সাংঘাতিক রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছেন রাজ্য রাজনীতিতে এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে, এটা হল দিদির মাস্টার স্ট্রোক। কোনও সন্দেহ নেই, এরকম একটা অপ্রত্যাশিত ঘোষণায় বিজেপি বেশ চমকিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে, এরপর বিজেপি কি করবে? শুভেন্দু অধিকারী শুধু নয়, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের পাল্টা রণকৌশল’টা কি? সেদিনই মমতা’র ঘোষণার পরেই শুভেন্দু অধিকারী সন্ধ্যাবেলায় বলেছেন – ‘হ্যাঁ, আমি নন্দীগ্রাম থেকেই লড়ব। দেখা হোক মুখোমুখি, দিদির সঙ্গে আমার। জামানত বাজেয়াপ্ত করে দেব।’ -এত বড় একটা কথা শুভেন্দু অধিকারী কেনই বা বলতে গেলেন! তার কারণ, শুভেন্দু অধিকারী নিজেই নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াবেন না এবং অন্য কোনও আসনের থেকে লড়তে পারেন –এমন খবর বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচিত হচ্ছিল। তাহলে কেন এহেন বীরত্ব প্রদর্শন? রাজনৈতিক বিশ্লেষক’রা বলছেন, এটাকে বলে ‘Brinkmanship’ অর্থাৎ ‘পেশীর প্রদর্শন’।

এটাকে বলা যেতে পারে যে, এটা এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। সাইকোলজিক্যাল ওয়ার ফেয়ার। শুভেন্দু অধিকারী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার পর যদি তিনি নীরব থাকতেন বা যদি তিনি হুঙ্কার না দিতেন, তাহলে তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্বর ওপরে এসে আঘাত পড়ত। এখন যেটা হল, শুভেন্দু অধিকারী হুমকি দিয়েছেন যে, আমিও লড়ব। এমনকী তিনি সেদিনই সঙ্গে সঙ্গে সেকথাটা ঘোষণা করেছেন। তার ফলে প্রচারের ক্ষেত্রেও কিন্তু মমতার চ্যালেঞ্জের প্রচারের পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা চ্যালেঞ্জও প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এখানে বিষয়টা নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করছে এবং গতকাল একটা বৈঠকও হয়েছে এবং সেই বৈঠকে অনেকে অনেক কথা বলেছে। একদিকে যেরকম বাবুল সুপ্রিয়’র মতো নেতারা মনে করছেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর ওখান থেকে লড়াই উচিত।

Advertisement

তার কারণ, শুভেন্দু অধিকারী যদি ওখান থেকে লড়ে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যদি কোনও ভাবে সেখানে হারিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে তো একটা সাংঘাতিক বাজিমাত করবে শুভেন্দু অধিকারী এবং সেক্ষেত্রে কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করে, মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হয়ে উঠতে পারে বিজেপিতে। শুভেন্দু অধিকারী গতকালও বলেছেন যে, আমি লড়ব। কিন্তু এই শুভেন্দু অধিকারীকে নির্বাচনে লড়ার দায়িত্বটা দেওয়া হবে কি হবে না, সেটা তো বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করবে। বিজেপি একটা সর্বভারতীয় দল। শুভেন্দু একা সেখানে সিদ্ধান্তটা নিতে পারে না। এবং শুভেন্দু গতকাল একটি স্থানীয় টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারেও বলেছেন – ‘দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমি সেটা মেনে নেব। যদি আমাকে লড়তে বলে, তাহলে লড়ব। না লড়তে বললে, লড়ব না।’ 

বিজেপির মধ্যে কি ভাবনা
বিজেপির মধ্যে একটা বড় অংশ মনে করছে যে, শুভেন্দু অধিকারীকে ওখানে, নন্দীগ্রামে যদি আটকে দেয় তাহলে লোকসান। তার বদলে একদম উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিনবঙ্গ, দার্জিলিং থেকে সুন্দরবন – সর্বত্রই যদি তাঁকে প্রচারে নামিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে বিজেপিকে টানা অনেক বেশি এফেক্টিভ হতে পারে। এখন পাল্টা যুক্তিটা হল যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ব্যস্ত করে দেওয়া যায়, যদি শুভেন্দু নন্দীগ্রামে দাঁড়ায়। এখন নন্দীগ্রামের নির্বাচন কেন্দ্রের যে গঠন, তাতে মুসলিম সমাজ, তি সেটা প্রায় পঁচিশ থেকে আঠাশ শতকরা ভাগ। বাকিটা রয়েছে হিন্দু সমাজ। কিন্তু সেই হিন্দু সমাজের মধ্যেও ওবিসি আছে অনেক এবং অন্যান্য নিম্নবর্গের মানুষ রয়েছেন। এখন এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু কি করবেন, সেটা দেখার। এথাও তো শোনা যাচ্ছে যে, সিদ্দিকি’র দল অর্থাৎ ফুরফুরা শরীফের পক্ষ থেকে যে দলটি তৈরি করা হচ্ছে সেটি অর্থাৎ ওয়েসির যে জোটের শরিক, তারা একটা প্রার্থী দিয়ে মুসলমান ভোট কাটতে পারে এবং সেক্ষেত্রে শুভেন্দুকে দাঁড় করিয়ে মমতাকে চাপে ফেলে দিতে পারলে রাজনৈতিক ভাবে লাভ। 

কি বিজেপির রণকৌশল? 
এখন সিদ্ধান্ত যাই হোক, আপাতত বিজেপির রণকৌশল-টা হচ্ছে যে, বিজেপি যে ভীতসন্ত্রস্ত নয়, বিজেপিও যে শুভেন্দুকে দাঁড় করিয়ে, মমতাকে হারাতে বদ্ধপরিকর –এই বার্তাটা অন্তত সোশাল মিডিয়া, মিডিয়া, সব জায়গায় দেওয়া এবং তারপর পরবর্তী রণকৌশল স্থির করা। সেটা ঠাণ্ডা মাথায় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বিচার বিবেচনা করবে। প্রধানমন্ত্রী নিজে আসবেন, ২৩শে জানুয়ারি নেতাজী’র জন্মদিনে। আর বিবেকানন্দের বাড়িতে গেছিলেন অমিত শাহ এ বারে ৩০ তারিখে তিনিও আসছেন কলকাতা শহরে। সুতরাং, তখন শীর্ষ নেতারাও শুভেন্দুর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন। তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত রণকৌশল স্থির হবে।

 

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement