বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে একের পর এক সভা করে চলেছে শুভেন্দু ঘোষ। দুই মেদিনীপুর মিলিয়ে ৩৫ আসনেই এবার পদ্ম ফোঁটানোই লক্ষ্য শুভেন্দুর। সেই লড়াইয়ে কোনও কসুর করছেন না কিন্তু নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র। এরমঝেই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা করে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা নতুন রাজনৈতিক মাত্রা যোগ করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। চ্যালেঞ্জ যে তিনি নিতে প্রস্তুত সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন শুভেন্দুও। এর মাঝেই দলবদলের পর কেশপুরে প্রথম জনসভা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর জনসভায় সেই তৃণমূলনেত্রীকেই নিশানা করলেন শুভেন্দু।
২০১১ সালে বাংলায় পরিবর্তন আসলেও কেশপুরে পরিবর্তন আসেনি। কিন্তু ২০১৩ সালে সেই কেশপুরে পঞ্চায়েতে ভোটে জিতেছিল তৃণমূল। কিন্তু যে আশা নিয়ে পরিবর্তন এনেছিলেন, তা কি পূর্ণ হয়েছে? কেশপুরবাসীকে প্রশ্ন করেন শুভেন্দু। তৃণমূলনেত্রী পুরুলিয়ায় বলেছিলেন, পচা জিনিস দল থেকে বেরিয়ে গেছে। সেই কথা নিয়েই শুভেন্দুর কটাক্ষ পচা জিনিস বেরিয়ে গেলে পায়ে এত কাঁটা ফুটছে কেন?
কটা সময় রাজনৈতিক হানাহানিতে উত্তপ্ত হয়ে থাকত কেশপুর । সেখানে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুর জিজ্ঞাসা, কেশপুরে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেছেন? এসেছেন উনি? গত ১০ বছরে কেশপুরে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে এভাবেই কটাক্ষ করেছেন নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র। শুভেন্দুর কথায়, ভোট আসলেই নন্দীগ্রাম-কেশপুরের কথা মনে পড়ে তৃণমূলনেত্রীর।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করতে দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। গত লোকসভায় তৃণমূলের ভোট লুঠেই হারতে হয়েছে ভারতী ঘোষকে। এমন কথাও বলতে শোনা গিয়েছে শুভেন্দুকে। তৃণমূলনেত্রীকে বলেছেন পরিযায়ী পাখি। তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড বলে ফের তোলাবাদ ভাইপোকে আক্রমণ করেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে টিকা চুরির অভিযোগ আনা থেকে জয় শ্রীরাম বলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেগে যাওয়া সব প্রসঙ্গই তুলেছেন শুভেন্দু।
দল ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন শুভেন্দু। বলেন, ‘আমি ২১ বছর পর কেন তৃণমূল ছাড়লাম? কর্মচারী হয়ে থাকতে পারব না, সহকর্মী হয়ে থাকতে পারি। তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।’ বুদ্ধবাবু সৎ মানুষ এমন কথাও বলতে শোনা গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। শুভেন্দু বলেন, ‘বাম আমলে এসএসসি হত, ২০১৪-র পর হয়নি। বাম আমলে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বুদ্ধবাবু সৎ, লক্ষ্মণ শেঠ হার্মাদ ছিলেন।’ শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘কলেজের ছাত্র সংসদে ৪ বছর ভোট হয়নি। স্কুলের ছোলাতেও কাটমানি খাচ্ছে। পড়ুয়াদের দেওয়া জুতো, স্কুলড্রেসেও কমিশন খাচ্ছে।’ মেদিনীপুরে কে তৃণমূলকে জিতিয়েছিল আর কে হারাবে এবার প্রমাণ হয়ে যাবে, এমন কথাও শোনা যায় শুভেন্দুর গলায়।