রাজ্যে একের পর এক দলীয় কর্মী খুন হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, এই নিয়ে বারবার অভিযোগ জানিয়ে এসেছে বিজেপি শিবির। এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও বাংলায় বিজেপি কর্মীদের খুন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এর মাঝেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভপতি নাড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার ব্যাখ্য চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তলবে করেছিল রাজ্যের মুখ্য সচিব ও ডিজি-কে। সেই ঘটনার রেশ এখনও মেলায়নি। তারমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ এরাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির করুণ দশা নিয়ে নতুন অস্ত্র তুলে দিল গেরুয়া শিবিরের হাতে। যা নিয়ে এবার সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখলেন এরাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
গত শনিবার বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের এদিন হেস্টিংসে দলের নতুন নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মতো সুনীল মণ্ডল তাঁর নতুন দলের দফতরে ঢুকতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। সাংসদের গাড়ি ঘিরে চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন। তাঁকে কালো পতাকা দেখানোর পাশাপাশি রাস্তায় শুয়ে পড়ে সুনীল মণ্ডলের গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করা হয়। জেপির কর্মী ও সুনীল মণ্ডলের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও মতে সাংসদকে উদ্ধার করে দলীয় অফিসে নিয়ে যান। এর পরেই কালক্ষেপ না করে পুরো ঘটনা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। পাশাপাশি অমিত শাহের সঙ্গে ফোনেও কথা হয় তাঁর। বিজেপি সূত্রের খবর, কৈলাস বিজয়বর্গীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে যে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, ফের এক সাংসদের গাড়িতে হামলা সেই ঘটনারই প্রমাণ।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ২ দিনের সফরে রাজ্যে এসে হামলার মুখে পড়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। জেড প্লাস ক্যাটাগরি থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তবে ডায়মন্ডহারবারে সভা করতে যাওয়ার সময় তৃণমূলের ছোড়া ইঁট ও কাঁচের টুকরোয় দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের মত নেতারা আহত হয়েছিলেন বলে গেরুয়া শিবিরের তরফে দাবি করা হয়। সেবার রাজ্য ছাড়ার আগে নাড্ডা সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, সাংসদ-বিধায়কদের মত জনপ্রিতিনিধিরাই যখন এরাজ্যে সুরক্ষিত নান, তখন আম জনতার অবস্থা কীরকম তা সহজেই অনুমেয়। এবার সজ্য বিজেপিতে আসা সুনীল মণ্ডলের গাড়িতে শাসক শিবিরের হামলা বিজেপির হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল তা বলাই বাহুল্য। রাজ্যে আইন-শৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে একাধিকবার বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলতে শোনা গেছে বিজেপি নেতৃত্বকে। সুনীলের গাড়িতে হামলা তাদের সেই অভিযোগকে আরও জোড়ালো করল এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।