এ পাড়ায় তারাদের আনাগোনা। আলোর রোশনাই, গ্ল্যামারের ঝলকানি। লাইট, সাউন্ড, ক্যামেরা, অ্যাকশনের জগৎ। সেই তারা এবং তারকা-নিয়ন্ত্রকের কারণে একুশের ভোটে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে টালিগঞ্জ।
বাংলার সিনেমা, সিরিয়াল টালিগঞ্জকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। এ কথা বললে ভুল বলা হবে না। সেই টালিগঞ্জ এবারের বিধানসভা ভোটে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে তিন প্রার্থীর দৌলতে।
শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সেখানকার বিদায়ী বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস। তাঁকে চ্য়ালেঞ্জ জানাতে আসানসোল থেকে উড়ে এসেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। সংগীতশিল্পী বাবুলকে তারকা বললে মোটেই অত্যুক্তি হবে না।
আর এঁদের পাল্লা দেওয়ার জন্য রয়েছেন অভিনেতা দেবদূত ঘোষ। যিনি সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআইএম প্রার্থী। তবে তিনি নিজেকে তারকা বলতে নারাজ। তিনি সাংস্কৃতিক কর্মী বলে নিজেকে পরিচয় দিতে বেশি ভালবাসেন।
একটা জিনিস বলে রাখা দরকার। এবারের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল এবং বিজেপিকে বেশ কয়েকজন তারকাকে প্রার্থী করেছে। তবে সিপিআইএম বা বামফ্রন্ট বা সংযুক্ত মোর্চা সেই পথে হাঁটেনি। তাদের একমাত্র তারকা এই কেন্দ্র থেকেই লড়ছেন।
২০১৬ সালের ভোটে বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে অরূপ বিশ্বাসকে কড়া টক্কর দিয়েছিলেন এসএফআইয়ের মধুজা সেনরায়। তিনি এবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তবে তাঁর নিজের শহর ঝাড়গ্রামে। সেখানে তাঁর লড়াই ছিল সাঁওতালি সুপারস্টার বীরবাহা হাঁসদার বিরুদ্ধে। বলা হয়, ২০১৬ সালে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে টালিগঞ্জের মধুজা হেরে গিয়েছিলেন।
ঘটনা হল, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বাবুল দাঁড়িয়েছিলেন আসানসোল কেন্দ্রে। সেখানে তিনি যেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন, এবার টালিগঞ্জ প্রথমদিকে তেমনই কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
যেমন তাঁকে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। ঠিক যেমন অভিযোগ উঠেছিল ওই লোকসভা কেন্দ্রে। এবারও তাই হয়েছে। তাঁর প্রচারে এসেছেন বিজেপির তাঁবড় নেতারা। অন্যদিকে টালিগঞ্জে অরূপ বিশ্বাসের প্রচারেও ঝড় উঠেছিল।
অরূপ বিশ্বাস ২০০৬ সাল থেকে সেখানকার মানে টালিগঞ্জের বিধায়ক। ২০১৬ সালে যতই কড়া টক্করের মোকাবিলা করুন, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট তাঁকে স্বস্তি দিয়েছিল। কারণ ২০১৯ সালে দেশে মোদি ঝড় উঠেছিল। বড় বড় নেতাদের আসনে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি।
তবে সেই ঝড় যেন থমকে গিয়েছিল টালিগঞ্জে। সেখানে বিজেপি লোকসভা ভোটের নিরিখে পিছিয়ে রয়েছে। এটা অরূপের কাছে এক স্বস্তির বিষয়। তবে বাবুল সুপ্রিয় মানে 'জায়ান্ট কিলার'। ২০১৪ সালে দোলা সেন এবং ২০১৯ সালে মুনমুন সেনকে হারিয়ে দিয়েছিলেন।