শনিবার মেদিনীপুরে বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের জনসভা নিয়ে এখন রাজ্য রাজনীতিতে জোর আলোচনায়। শুভেন্দু অধিকারী কি এই সভায় যোগ দিচ্ছেন? আর কে কে আসছেন গেরুয়া শিবিরের ছাতার তলায়? তা নিয়েই এখন চলছে আলোচনা। আর এর মাঝেই অমিত শাহ রাজ্যে পা রাখার আগেই মুখ্যসচিব ও ডিজিপির সঙ্গে বৈঠক করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে এক্ষেত্রে সামনাসামনি বৈঠক এড়াল রাজ্য। ভিডিও কনফারেন্সেই মুখোমুখি হল দিল্লি ও কলকাতা।
গত সপ্তাহে এ রাজ্যে এসে কলকাতা থেকে ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার সময় হামলার মুখে পড়েছিল বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছেই। হামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে দিল্লিতে তলব এবং তিন আইপিএস আধিকারিককে ডেপুটেশনে বদলির নির্দেশ নিয়ে সম্মুখসমরে মেতেছে নবান্ন বনাম দিল্লির নর্থ ব্লক। এরমধ্যে নতুন করে বৃহস্পতিবারই পশ্চিমবঙ্গের আইন–শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রশাসনের এই দুই আধিকারিককে চিঠি পাঠান স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। তাতে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় দিল্লিতে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়। যদিও এবারও দুই শীর্ষ আমলাকে দিল্লি পাঠানোর ক্ষেত্রে অব্যাহতি চেয়ে পাল্টা চিঠি পাঠায় রাজ্য সরকার। ভিডিও কনফারেন্সে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেয় নবান্ন। অবশেষে সেই প্রস্তাব মেনে নেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেইমত মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সেই বৈঠক করে নর্থব্লক। সূত্রের খবর, ঘণ্টা খানেকের এই বৈঠকে সামিল ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা স্বয়ং। বৈঠকে রাজ্যের আইন-শৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তাপ্রকাশ করে নর্থব্লক।
এদিনের বৈঠকে মমতা প্রশাসনের দুই শীর্ষ আধিকারিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেন যে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। যে ঘটনাই ঘটুক না কেন তাতে তৎক্ষণাত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এই প্রসঙ্গেই তাঁরা বলেন, জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনাতেও পুলিশ আলাদা করে তদন্ত করছে। শুধু তাই নয় ঘটনার দিন পর্যাপ্ত পুলিশও এলাকায় মোতায়েন ছিল। এছাড়া রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়েছে, আগামী দিনে এমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশ সজাগ রয়েছে। রাজ্যের বক্তব্য শোানর পর, নর্থব্লকের তরফে নবান্নের শীর্ষকর্তাদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়, যেকোন পরিস্থিতিতে আইন-শৃ্ঙ্খলা ব্যবস্থার যাতে অবনতি না ঘটে। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যন রাজ্যের আইন-শৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সেদিনই বাংলায় পা রাখলেন অমিত শাহ। আগামী দু'দিন পশ্চিমবঙ্গে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। নাড্ডার সফরের পর বিজেপি হাইভোল্টেজ এই নেতার সফরে যে কোনও আপত্তিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয় তা নিয়েও মুখ্যসচিব ও ডিজিপিকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে।