সালটা ২০১৫, ডিসেম্বর। নন্দীগ্রামে সভা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সভার ভিড় দেখে সকাল থেকে খোশমেজাজেই ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু তাল কাটে বিকাল বেলায়। জহুরি মোড়ের কাছে প্রাসাদতম বাড়ি দেখে। গ্রামের মধ্যে আচমকা প্রাসাদতম ওই বাড়ি দেখে হতবাক হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। তারপরে তিনি যখন জানতে পারেন এই বাড়ি তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের বাড়ি, সেটা শুনে আরও ক্ষুব্ধ হন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীকে আসতে দেখে শেখ সুফিয়ানের স্ত্রী ঘর থেকে দৌঁড়ে এসেছিলেন সেইসময়ে তাকে স্বাগত জানাতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেই বাড়িতে পাই রাখেননি। পরে দলীর নেতৃত্বের কাছে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ৫ বছরে নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পরেই। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। তার তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী একদা তারই সঙ্গী, বর্তমানে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই নন্দীগ্রামেরই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী এজেন্ট সেই শেখ সুফিয়ান।
কে এই শেখ সুফিয়ান
জানা গিয়েছে, এক সময়ে সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন। এক বাংলা সংবাদমাধ্যমে খবর অনুযায়ী, সিপিএম থেকে সেই সময়ে বহিস্কার করা হয়েছিল তাকে। পরে ২০০২ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০৩ সালে পঞ্চায়েতে লড়েছেন। ২০০৭ সালে বিধানসভায় লড়েছিলেন। ২০০৮ সালে তৃণমূলের হয়ে জেলা পরিষদে লড়াই করেন। ২০১৩ সালে তৃণমূলের হয়েই জেলা পরিষদে জেতেন। ২০১৮তেও তাই হয়। কিন্তু বরাবরই শুভেন্দু বিরোধী বলে পরিচিত ছিলেন তিনি।
শুভেন্দু বিরোধী নেতা হিসাবে পরিচিত
২০২০ সালে অক্টোবর-নভেম্বর মাস। যখন তৃণমূলের মধ্যে থেকে ধীরে ধীরে সুর চড়াচ্ছিলেন শুভেন্দু। তখনই তিনি জল্পনার মধ্যে ছিলেন। ঠিক তখনই প্যারসুট নামে একটি মন্তব্য করেছিলেন শুভেন্দু। তখনই তাকে পাল্টা কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। তিনি বলেছিলেন, 'উনি কাকে এই মন্তব্য করেছিলেন, আমি জানি না! শুভেন্দু আমায় দলে আনবার কেউ না। নন্দীগ্রামে তৃণমূলের আন্দোলন শুরু করে ছিলাম ও তাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম আমি।'ইদানিং সভায় শেখ সুফিয়ানের নাম করেও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। এহেন শেখ সুফিয়ান আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট। পাশাপাশি নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিভিন্ন কর্মসূচিতেও আয়োজনের দায়িত্বে মূলে রয়েছেন।