একুশের বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্ট একঝাঁক তরুণ মুখকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে বিচার করলে রেকর্ড। এঁদের মধ্যে অনেকেই ছাত্র-যুব সংগঠনের নেতানেত্রী। অনেকে আবার সবে ছাত্র-যুব সংগঠনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
এঁদেরই একজন সৃজন ভট্টাচার্য। তিনি সিপিআইএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক। সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআইএমের সিঙ্গুরের প্রার্থী।
ভোটের লড়াইয়ে বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় রাজনৈতিক কর্মীরাই ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। তবে এর ব্যতিক্রমও থাকে। যেমন তৃণমূল এবার প্রচুর অভিনেতা-অভিনেত্রীকে ভোটের টিকিট দিয়েছে। বিজেপিও তাই। তবে বামেরা সেই পথে হাঁটেনি। তাঁদের বেশির ভাগ প্রার্থীই দলের কর্মী বা সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। এবার তাঁদের একমাত্র তারকা প্রার্থী টালিগঞ্জের দেবদূত ঘোষ। তিনি সিপিআইএমের হয়ে লড়ছেন। তবে সৃজনকে সেই দলে ফেললে খুব একটা ভুল হবে না। নামের সঙ্গে কাজেও বেশ মিল।
প্রার্থীদের প্রচারে অনেক অভিনব জিনিস দেখা যায়। মুলত দলের উদ্যোগে সে-সব করা হয়। রোড শো থেকে শুরু করে মিছিলে নিত্যনতুন উপায় বের করে আরও সহজে মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হয়।
তবে প্রার্থী নিজেই গান লিখছেন, গিটার বাজাচ্ছেন এবং তৈরি করছেন ভিডিয়ো-ও, এমনটা দেখা যায় না বললেই চলে। এবার অবশ্য সেটা দেখা গিয়েছে। এমন অভিনব কাজ করেছেন প্রার্থী নিজে। সেটা হল 'শিকল ভাঙার গান'। সেই ভিডিয়ো ভাইরালও হয়েছে। তবে সেই গান তিনি নিজের জন্য তৈরি করেছেন, এটা বলা পুরোপুরি ঠিক হবে না!
সৃজন গান-কবিতা লেখেন, সুর দেন। গিটার বাজান। পিয়ানোও বাজান। তাঁর বাড়ি যাদবপুরের হালতুতে। সেখানে রয়েছে পেল্লায় আকারের এক পিয়ানো। কলেজ জীবনে কয়েকজন মিলে তৈরি করেছিলেন ব্যান্ড। নাম 'এবং কয়েকজন'। তবে এখন সেটা যেন কফি হাউজের আড্ডার মতো হয়ে গিয়েছে। সদস্যরা কাজকর্মের খাতিরে এলোমেলো হয়ে গিয়েছেন।
'শিকল ভাঙার গান' গেয়েছেন অনুষ্কা দাস। তিনি আশুতোষ কলেজের ছাত্রী। গানটা সৃজন ভট্টাচার্য লিখেছিলেন। সৌরভ গোস্বামী সুর দিয়েছেন। তিনি সৃজনের অর্কুট-বন্ধু। তাঁর বাড়ি নাকতলা।
অর্কুট-সন্ধি থেকে গড়ে উঠল ব্যান্ড। ততদিনে সৃজন ঠিক করে নিয়েছেন পার্টি করবেন। আর সৌরভ ভেবে রেখেছেন লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হবে। তেমনটাই হয়েছে
সিঙ্গুরে সিপিআইএমের শিল্প গড়ার পরিকল্পনা ধাক্কা খেয়েছিল। শিল্পের জন্য জমি নিয়ে তখন তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এর ফলে সরকার থেকেও সরে যেতে হয়েছিল বলে বলা হয়। সেই সিঙ্গুরে এবার শিল্পীর হাত ধরে নতুন দিন খুঁজতে নেমেছে সিপিআইএম।