
২০২৬ এর বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকায় এসআইআর বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। তার আগে সম্পূর্ণ হয়েছে ম্যাপিং। এই আবহে এবিপি আনন্দের একটি প্রতিবেদনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে এসআইআর শুরুর আগেই রাজ্য বিজেপিতে পদত্যাগের হিড়িক লেগেছে।
এবিপি আনন্দের এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মালদায় বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভা ছিল। এবং গাজলের এই সভা শেষেই বিজেপি নেতা সৌমিত্র রায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে ইস্তফা দেন।
ভিডিওটি পোস্ট করে সঙ্গে লেখা হয়, “SIR এর আগেই BJP ত্যাগের হিড়িক লেগে গেলো নাকি?”
আজতক ফ্যাক্ট অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ঘটনাটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের। বর্তমানে চলমান এসআইআর প্রক্রিয়ার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।
সত্য উন্মোচন
মালদার বিজেপি নেতা সৌমিত্র রায়ের পদত্যাগের বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে এবিপি আনন্দের ইউটিউব চ্যানেলে ওই একই প্রতিবেদনের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এই ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি। যা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভিডিওটি এখনকার নয়। বরং আড়াই বছর আগেকার।
ভিডিওটির বিবরণে আরও লেখা হয়, “শুভেন্দু সভা শেষ হতেই মালদায় গেরুয়া শিবিরে ভাঙন। শুভেন্দুর বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপি নেতার ইস্তফা। জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠালেন সৌমিত্র রায়। উত্তর মালদার সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র রায়। ২০২১-এ বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন সৌমিত্র রায়। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে, দাবি জেলা বিজেপি নেতৃত্বের।”
২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি আনন্দবাজার ডট কমেও এই সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবর অনুযায়ী, পদত্যাগী সৌমিত্র রায় সংবাদ মাধ্যমকে জানান যে শুভেন্দু অধিকারীর কারণেই তিনি পদত্যাগ করছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে আবেগের বশে বা ভুল করে এক জন বিশেষ ব্যক্তিকে ভরসা করে আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, উনি বোধ হয় ধর্ম নিরপেক্ষ হবেন। কিন্তু উনি বিজেপির পুরনো নেতাদের থেকেও বেশি উগ্র। উনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন।’’
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পাল্টা দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘মানুষের ক্ষোভ, দুঃখ, বিক্ষোভ ইত্যাদি থাকে। আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া যাবে।’’
অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে প্রায় আড়াই বছর আগেকার একটি ভিডিওকে বর্তমান ঘটনা বলে বিভ্রান্তিকর দাবি ছড়ানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়ার মাঝে মালদা বিজেপির এক নেতা পদত্যাগ করেছেন।
এই ঘটনাটি বর্তমানে এসআইআরের সঙ্গে কোনওভাবে সম্পর্কিত নয়। ঘটনাটি ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারির।