Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশে সন্তানের সামনে মাকে ‘ধর্ষণ’? জানুন ভাইরাল ভিডিও-র আসল রহস্য

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটিতে ছোট্ট সন্তানের সামনে তার মাকে ধর্ষণের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না। বরং সেটিতে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ কারাগারের জেলারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার সময় ওই মহিলাকে স্থানীয়দের তরফে হাতেনাতে ধরার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 27 Feb 2025,
  • अपडेटेड 3:25 PM IST

গণঅভ্যুত্থান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ছেড়ে পালানোর পর থেকে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতির একাধিক খবর সামনে এসেছে। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে কয়েকজন যুবক একজন বিবস্ত্র মহিলাকে একটি ঘরে আটকে তার ভিডিও করছে। অন্যদিক ঘরের ভিতরে একটি বাচ্চাকে কাঁদতে দেখা যাচ্ছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে ছোট্ট বাচ্চার সামনে তার মা’কে ধর্ষণ করেছে দুষ্কৃতীরা। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “বাচ্চার সামনে মা কে ধর্ষণ! এটাই আমাদের ধর্ষিত বাংলাদেশ! ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে কেনা!” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটিতে ছোট্ট সন্তানের সামনে তার মাকে ধর্ষণের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না। বরং সেটিতে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ কারাগারের জেলারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার সময় ওই মহিলাকে স্থানীয়দের তরফে হাতেনাতে ধরার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওর সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক স্ক্রিনশট নিয়ে সেগুলি গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি একটি ফেসবুক প্রোফাইলে এই একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, “কয়েদির স্ত্রীর সাথে জেলার নূর মোহাম্মদের অ'নৈ'তি'ক সম্পর্ক।” এই একই তথ্য উল্লেখ করে অন্য একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীও ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। (আপত্তিকর দৃশ্য থাকার জন্য ফেসবুক পোস্টটি হাইপার লিঙ্ক করা হল না।)

এরপর উক্ত সূত্র ধরে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করলে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভাইরাল ভিডিওর একাধিক স্ক্রিনশট-সহ বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম আমার বিক্রমপুরে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার নুর মহম্মদ মৃধা এক মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্তে হলে তাদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। এই সময় স্থানীয়দের মধ্যে একজন সেই আপত্তিকর মুহূর্তের ভিডিও নিজের মোবাইলে রেকর্ড করে। এক বছরের পুরনো সেই ভিডিওটি নতুন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

Advertisement

এরপর ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই একই তথ্য-সহ অপর এক বাংলাদেশি সংবাদমাধ্য দৈনিক কালবেলাতে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে জেলার নুর মহম্মদ মৃধার ছবি-সহ লেখা হয়েছে, “মুন্সীগঞ্জের জেলা কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ মৃধার আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হয়েছে। কয়েদির স্ত্রীর সঙ্গে ১৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের। নুর মোহাম্মদ তখন মাগুরা জেলা কারাগারে দায়িত্বরত ছিলেন। সেই সময় এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ বিভাগসহ জেলা কারাগারের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। পরে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হলে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

এরপর ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে আমরা বাংলাদেশ ভিত্তিক ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমর স্ক্যানারের সিনিয়র সাংবাদিক তানভীর মাহতাব আবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “প্রথমত ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের। তখন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল। পাশাপাশি ভিডিওটিতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তার সঙ্গে কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। বরং তিনি মুন্সীগঞ্জের জেলা কারাগারের জেলার নুর মহম্মদ মৃধার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্তে হয়ে পড়েন। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে তারা ওই মহিলা এবং জেলারকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।” পাশাপাশি এরপর আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাইরাল ভিডিওর মহিলার ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনিও আমাদের একই তথ্য দিয়েছেন এবং তার বোনের সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনা ঘটার কথা অস্বীকার করেছেন।

এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, পুরনো অবৈধ সম্পর্কের অপত্তিকর ভিডিও শেয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশে সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে।

Fact Check

Claim

সম্প্রতি বাংলাদেশে ছোট্ট সন্তানের সামনে তার মা’কে ধর্ষণ করেছে দুষ্কৃতীরা।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটিতে সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষণের দৃশ্য নয়। বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ কারাগারের জেলারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার সময় ওই মহিলাকে স্থানীয়দের তরফে হাতেনাতে ধরার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement