Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: পরিষেবা না দেওয়ার কারণে বিজেপি নেতার হাত-পা বেঁধে নোংরা জলে স্নান করানো হয়নি

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ঘটনার সঙ্গে জনসাধারণের পরিষেবা না পাওয়া, বা ক্যাপশনে উল্লেখিত কোনও ঘটনার সম্পর্ক নেই। একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে ওই বিজেপি নেতাকে নোংরা জলে স্নান করানো হয়েছিল।

ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 04 Jul 2025,
  • अपडेटेड 4:02 PM IST

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তির হাত ও পা বেঁধে কয়েকজন মহিলা মিলে এক ব্যক্তিকে নোংরা কাদা জলে স্নান করাচ্ছেন। ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, উত্তর প্রদেশের মহারাজগঞ্জ নামে জেলায় পরিষেবা ঠিক মতো না পেয়ে ক্ষুব্ধ মহিলারা এক বিজেপি নেতাকে এমন 'সাজা' দিয়েছেন।  

ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "উত্তর প্রদেশের #মহারাজগঞ্জ, সেখানকার মহিলারা বিজেপির নেতাকে ড্রেনের জলে স্নান করাচ্ছে হাত পা বেঁধে।আর এখানে চাড্ডি দাংগা বাজ নেতারা স্বপ্ন দেখছে সেরকমই অপদার্থ ডবল ইঞ্জিন দুমুখো কালসাপ সরকার গড়ার??? লজ্জা লাগে না মোটেও?? যেখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্ষমতায় আছে সেখানে আগে ভোলো করে পরিষেবা দিন মানুষদের উৎপীড়ন না করে, ধর্মের নামে লড়াই না করিয়ে। তাহলে তো আর ড্রেনের জলে স্নান করতে হয় না?? বাংলায় যে গদ্দার বাংলা দ্রোহী ব্যাকটেরিয়া গুলো এরকমই দুমুখো কালসাপ সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তারাও তো শিক্ষা নিন।" (সকল বানান অপরিবর্তিত)

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ঘটনার সঙ্গে জনসাধারণের পরিষেবা না পাওয়া, বা ক্যাপশনে উল্লেখিত কোনও ঘটনার সম্পর্ক নেই। একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে ওই বিজেপি নেতাকে নোংরা জলে স্নান করানো হয়েছিল।

আরও পড়ুন

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে গুগল লেন্সে ছবিগুলো খোঁজা হলে ওই একই ঘটনার ছবি-সহ একটি প্রতিবেদন এবিপি নিউজের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। গত ৩০ জুনের সেই খবর থেকে জানা যায়, উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক গরমের থেকে রেহাই পেতে গ্রামবাসীরা অভিনব-সব পন্থা গ্রহণ করছেন। যে সূত্র ধরে এ বার মহারাজগঞ্জ জেলার এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

খবর অনুযায়ী, মহারাজগঞ্জে দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে গরম বাড়ার পাশাপাশি ফসলও নষ্ট হচ্ছিল। তাই প্রকৃতির দেবতা ইন্দ্রদেবকে সন্তুষ্ট করতে গ্রামবাসীরা বিগত কয়েক বছর ধরে চলে আসা এই রেওয়াজ বা টোটকা আপন করেছিলেন। এই টোটকা অনুসারে, দীর্ঘ সময় যাবত বৃষ্টি না হলে যদি গ্রামের প্রধান বা বিশিষ্ট কোনও ব্যক্তিকে নোংরা জলে স্নান করানো হয়, তখন ইন্দ্রদেব প্রসন্ন হয়ে বৃষ্টি করান।

Advertisement

সেই পরম্পরা অনুসরণ করেই স্থানীয় মহিলারা স্থানীয় নওতনওয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বিজেপি নেতা গুড্ডু খানকে কাদামাটি মাখিয়ে নোংরা জলে স্নান করান। সেখানে আরও লেখা হয় যে এই রীতি বহু সময় ধরে ওই এলাকায় চলে আসছে। আগেও নাকি একই ভাবে বৃষ্টি না হলে রাজা-মহারাজাদের কাদা জলে স্নান করানো হতো এবং ইন্দ্রদেব প্রসন্ন হয়ে বৃষ্টি করাতেন বলে এলাকাবাসী বিশ্বাস করেন। এই বিষয়ে আজতকের একটি রিপোর্টেও একই কথা জানানো হয়।

টিভি 9 ভারতবর্ষের ইনস্টাগ্রাম চ্যানেলেও ভিডিওটি পোস্ট করে একই তথ্য জানানো হয়।


বলপূর্বক এই কাজ করানো হয়েছিল?

গুড্ডু খান নামে ওই বিজেপি নেতাকে জোর করে হাত-পা বেঁধে এই কাজ করানো হয়েছিল, নাকি তিনি স্বইচ্ছায় এই কাজ করেছিলেন, এই বিষয়ে জানতে আমরা আজতকের মহারাজগঞ্জ জেলার প্রতিনিধি অমিতেশ ত্রিপাঠীর সঙ্গেও যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান যে গুড্ডু খান নিজের ইচ্ছেয় এতে অংশ নিয়েছিলেন কারণ তিনিও এই রীতি-রেওয়াজে বিশ্বাসী।

পাশাপাশি এই বিষয়ে জ়ি নিউজের একটি ভিডিও প্রতিবেদনও আমরা খুঁজে পাই যেখানে গুড্ডু খানকে এই বিষয়ে নিজের বক্তব্য রাখতে শোনা যায়।

তিনি বলেন, "২০০৬ সাল থেকে মহিলারা আমায় এভাবে স্নান করিয়ে আসছেন। এতে ইন্দ্রদেব প্রসন্ন হন এবং এই পরম্পরা বহুদিন ধরে চলে আসছে। এবং আমি বিশ্বাস করি যে যখনই ভগবান ইন্দ্রকে খুশি করতে এই ধরনের কাজ করা হয়, অর্থাৎ আমায় এভাবে স্নান করানো হয়, তখন ইন্দ্রদেব খুশি হন এবং বৃষ্টি হয়।"

অর্থাৎ, বুঝতে বাকি থাকছে না যে সঠিক প্রেক্ষাপট ছাড়াই একটি বিভ্রান্তিকর ক্যাপশন-সহ এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে।

Fact Check

Claim

নাগরিক পরিষেবা না দেওয়ার কারণে উত্তর প্রদেশের মহারাজগঞ্জে এক বিজেপি নেতাকে নোংরা জলে মহিলারা স্নান করাচ্ছেন।

Conclusion

ওই এলাকায় দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে স্থানীয় মহিলার বিজেপি নেতা গুড্ডু খানের উপর এই টোটকা অনুসরণ করছিলেন যা বহুদিন ধরে চলে আসছে। এতে ইন্দ্রদেব খুশি হয়ে বৃষ্টি করান বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement