Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: শেখ হাসিনাকে নিয়ে এ বার সংসদে প্রশ্নের মুখে পড়লেন মোদী? না, ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি সঠিক নয়। প্রথমত, আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং নিজের এই বক্তব্যে শেখ হাসিনার কথা উত্থাপন করেননি। সেই সঙ্গে তিনি ওই বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না।

ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 23 Jan 2025,
  • अपडेटेड 6:08 PM IST

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি আপাতত ভারতেই থাকবেন? নাকি আগামীতে অন্য কোনও দেশে পাড়ি দেবেন তিনি। এই ধরনের প্রশ্ন যখন নানা মহলে বিদ্যমান তখনই একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ভারতের সংসদে নাকি এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে।

এই ভিডিওতে দিল্লির আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংকে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টি তুলে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করতে দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে সঞ্জয় সিংয়ের বক্তব্য চলাকালীন একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকেও দেখা যায়।

৪২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "পাসপোর্ট ছাড়া শেখ হাসিনা দিল্লী পৌঁছাতে পারলো কিভাবে, কোন আইনে?.. ------- মোদীকে ভারতীয় পার্লামেন্টে প্রশ্ন।"

আরও পড়ুন

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি সঠিক নয়। প্রথমত, আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং নিজের এই বক্তব্যে শেখ হাসিনার কথা উত্থাপন করেননি। সেই সঙ্গে তিনি ওই বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না।

কীভাবে জানা গেল সত্যি

একাধিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা সবার প্রথম সঞ্জয় সিংয়ের আসল বক্তব্যের ভিডিওটি খুঁজে বের করি। ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর সংসদ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল। ওই দিন রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বক্তব্য রাখছিলেন।

ওই ভিডিওর ২২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মাথায় সঞ্জয় সিংকে আলোচিত অংশের বক্তব্যের দেখা যাবে। বিজেপি সাংসদ জেপি নাড্ডার 'অনুপ্রবেশকারী' সংক্রান্ত এক বক্তব্যের জবাবে সঞ্জয় সিং বলেন, "বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কথা হচ্ছিল। বিগত ১০ বছর ধরে ভারতে কার সরকার আছে স্যর? ট্রাম্পের সরকার আছে? ওবামার সরকার আছে? ১০ বছর ধরে এখানে মহামানবের সরকার চলছে। আমি সেই মহামানব নরেন্দ্র মোদীকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে প্রশ্ন করতে চাই, সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব কাদের? অমিত শাহের দফতরের।"

Advertisement

এরপর তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের সীমান্ত কোন রাজ্যের সঙ্গে রয়েছে? ত্রিপুরা, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে রয়েছে। কোনও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ত্রিপুরা, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তর প্রদেশ পেরিয়ে দিল্লি কী ভাবে চলে আসে? আপনারা (কেন্দ্রীয় সরকার) কি ঘাস কাটছিলেন? আর ১০ বছরে যদি অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে ফেরত পাঠানো হয়ে থাকে, তবে তাদের নাম বলে দিন। রাজনীতি করছেন কেন?"

এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অমর উজালার একটি খবর থেকে আমরা জানতে পারি, ভোটার তালিকা থেকে আম আদমি পার্টির সমর্থকদের নাম বাদ নেওয়া নিয়ে সঞ্জয় সিং কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শুরু করেন। পালটা বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে ভোটার তালিকা থেকে অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। সেই নিয়ে আপ সাংসদ নাম বাদ যাওয়া একাধিক হিন্দু ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করেন এবং এই কথাগুলি বলেন। এরপর তিনি আদানি ইস্যুতেও আক্রমণ শানান। যদিও এই বক্তব্যে তাঁকে শেখ হাসিনার নাম একবারও নিতে শোনা যায়নি।

এর পাশাপাশি, ওই ভিডিওতে বা সেই সময় রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বা প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং কাউকেই দেখতে পাওয়া যায়নি। তাঁরা ওই সময় সভাকক্ষে উপস্থিত ছিলেন, এমনও প্রমাণ কোথাও নেই। যা থেকে বোঝা যায় যে ওই ক্লিপগুলি অন্য কোথাও থেকে কেটে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে গত ১৩ জানুয়ারি একটি সাংবাদিক বৈঠকের সময় সঞ্জয় সিং শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। যদিও এই সাংবাদিক বৈঠক সংসদে ছিল না। অন্যদিকে, বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলো-সহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে জানা যায় যে গত ৮ জানুয়ারি শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থাৎ যে সময় সঞ্জয় সিং সংসদে এই বক্তব্য রাখেন, তখনও হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল হয়নি।

ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে দাবিতে এবং যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, তা সঠিক ও সত্যি নয়।

Fact Check

Claim

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ভারতের সংসদের প্রশ্ন করে জানতে চাওয়া হয়েছে যে পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পরও শেখ হাসিনা কোন আইনি বৈধতায় ভারতে এলেন।

Conclusion

এই ভিডিওটি ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বরের, তখনও হাসিনার পাসপোর্ট বাতিলের খবর আসেনি। অন্যদিকে, এই বক্তব্যে আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে কেন্দ্র আক্রমণ করলেও হাসিনার কথা বলেননি।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement