ইদানীং ফেসবুকে একটি ছবি বেশ ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। যেখানে জীর্ণ ও পুরনো কাপড় পরিহিত এক বৃদ্ধকে স্কুলের পোশাকে থাকা কিছু শিশুদের হাতে বিস্কুট তুলে দিতে দেখা যাচ্ছে।
ছবিটি শেয়ার করে লেখা হচ্ছে যে এটি কলকাতার ঘটনা এবং গরীব বৃদ্ধ নাকি নিজের সঞ্চয়ের টাকা থেকে বিস্কুট কিনে স্কুলের শিশুদের হাতে তুলে দিয়েছেন। ছবিটি শেয়ার করে লেখা হয়েছে, "কলকাতার জনবহুল রাস্তায় এক হতদরিদ্র বৃদ্ধ তার জমানো পয়সা দিয়া বিস্কুট কিনে স্কুলের ছোটো ছোটো বাচ্চাদের দিচ্ছে. ...............এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে?"
ছবিটি ১ হাজারের বেশি মানুষ শেয়ার করেছেন। বেশিরভাগ নেটিজেন এই ছবির নীচে এই ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
আজতক ফ্যাক্ট চেকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অর্থাৎ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই দ্বারা তৈরি ছবি। এমন কোনও ঘটনা বাস্তবে ঘটেনি।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
ভাইরাল ছবিটি ভালভাবে লক্ষ্য করলে সেখানে একাধিক গন্ডগোল এবং অসামঞ্জস্য নজরে পড়বে। যা সাধারণত আসল ছবিতে দেখা যায় না। একে একে সেগুলি নিয়ে কথা বলা যাক। সব জায়গাগুলি লাল দাগ দিয়ে নির্দেশ করে দেওয়া হল।
সবার প্রথম বলা যাক বিস্কুটের আকৃতির কথা। এখানে যে বিস্কুটগুলি দেখা যাচ্ছে তা বেশ বড় আকারের। সাধারণভাবে বিস্কুটের আকার-আকৃতি এত বড় হয় না। দ্বিতীয়ত, কলকাতায় যত দোকান রয়েছে তাদের নাম হয় বাংলা, নয় ইংরাজি, নয়তো হিন্দিতে লেখা থাকে। এখানে দোকানের উপর এমন ভাষায় নাম লেখা হয়েছে যার অস্তিত্ব গুগলেও ধরা পড়ছে না।
তৃতীয়ত, এই ছবিতে দুটো অটো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে হলুদ রঙের। কলকাতায় এই রঙের অটো চলে না বরং সবুজ রঙের অটো দেখতে পাওয়া যায়। চতুর্থত, এই ছবিতে যে শিশুদের দেখা যাচ্ছে তাদের কারোর চোখ, কারোর মুখ অদ্ভুতভাবে বিকৃত হয়ে রয়েছে। এই সকল অসামঞ্জস্য থেকে একটা বিষয় আন্দাজ করা যায় যে ছবিটি এআই দ্বারা নির্মিত হতে পারে।
এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে আমরা Is it AI ওয়েবসাইটে গিয়েও ছবিটি পরীক্ষা করি। যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ ছবিটি AI নির্মিত বলে দেখানো হয়।
অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে এআই দ্বারা তৈরি একটি ছবিতে কীভাবে আসল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে কলকাতার রাস্তায় এক দরিদ্র বৃদ্ধ তার জমানো টাকা দিয়ে স্কুলশিশুদের বিস্কুট কিনে দিচ্ছে।
এই ছবিটি AI অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা তৈরি।