Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: বেলডাঙার ঘটনায় বন্দুক নিয়ে অন্য পক্ষকে হুমকি? না, ভিডিওটি উত্তর প্রদেশের বরেইলির

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা হিংসার সময় বন্দুক হাতে অন্য পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে দুই ব্যক্তি।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 20 Nov 2024,
  • अपडेटेड 4:23 PM IST

দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায়। এতে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের একাধিক মানুষ। আর এই ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বেলডাঙার হিংসার অংশ দাবি করা একটি ভিডিও। 

এখানে কয়েকজন মানুষকে বন্দুক হাতে দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন পুরুষকে লুঙ্গি এবং কিছুজনকে মাথায় টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী পরিহিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটি সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের দৃশ্য। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “বেলডাঙা আজকের ভিডিও।” 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওতে ২০২১ সালের ৯ মে উত্তর প্রদেশের বরেইলি জেলার ভজিপুরা থানার ধউরা তন্ডা শহরে মাংস বিক্রিকে কেন্দ্র করে একই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এর সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। 

আরও পড়ুন

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল ভিডিও ও দাবির সত্যতা জানতে সেটির কি-ফ্রেম নিয়ে গুগুলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২১ সালের ৯ মে Jan tv Bareilly নামক একটি ফেসবুক পেজে ১ মিনিটের একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই ভিডিওর ২৪-৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত ভাইরাল ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি পোস্ট করে সেটিকে উত্তর প্রদেশের বরেইলির ভজিপুরা থানার ধউরাতন্ডা এলাকায় মাংসের দামকে কেন্দ্র করে একই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদের দৃশ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে একই ভিডিও-সহ দৈনিক ভাস্করে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ভজিপুরা থানার তন্ডা গ্রামে গরুর মাংস বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে দোকানের মালিক এবং ভাড়াটিয়ার মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। এর জেরে একই সম্প্রদায়ের দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি হয় এবং পরে প্রকাশ্যে বন্দুক নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় অনেক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

Advertisement

এরপর পরবর্তী সার্চে ২০২১ সালের ১২ মে এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য-সহ অমর উজালার একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে ভাইরাল ভিডিওর একটি স্ক্রিনশট-সহ উল্লেখ করা হয়েছে, ভজিপুরা থানার ধউরাতন্ডা শহরে বানজারা সম্প্রদায়ের জলিশ আহমেদ বৈধভাবে মাংস বিক্রির শর্ত দিয়ে তার একটি দোকান সেলিম কুরেশি নামক এক ব্যক্তিকে ভাড়া দিয়েছিলেন। রবিবার সকাল ৯টার সময় দোকানে ক্রেতাদের অতিরিক্ত ভিড় দেখে সেলিম কেজি প্রতি গরুর মাংসের দাম ১৫০ টাকা থেকে এক ধাক্কায় ২৫০ টাকা করে দেয়। 

অমর উজালার প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “মাংসের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি করার বানজারা সম্প্রদায়ের লোকেরা তার বিরোধীতা করে। এই সময় জলিশ আহমেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সেলিমকে দোকান খালি করতে বলে। এতে বিবাদ আরও বেড়ে যায় এবং বানজারা সম্প্রদায়ের লোকজন সেলিমকে মারধর করা শুরু করে। তখন সেলিমের সমর্থনে তার পরিবারের সদস্যরা লাইসেন্সকৃত ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে সেখানে পৌঁছে গুলি চালায়।”

অন্যদিকে গত ১৮ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। সেখানেও ভিডিওটিকে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার নয় বরং উত্তর প্রদেশের বরেইলির বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার সাম্প্রতিক হিংসার দৃশ্য দাবি করে ভাইরাল করা হচ্ছে ২০২১ সালের মে মাসের উত্তর প্রদেশের বরেইলির ভিডিও।

Fact Check

Claim

সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা হিংসার সময় বন্দুক হাতে অন্য পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে দুই ব্যক্তি।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওতে উত্তর প্রদেশের ভজিপুরা থানার ধউরাতন্ডা শহরে মাংস বিক্রিকে কেন্দ্র করে একই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এর সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement