গত ১৯ মে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসির। রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি দেশটির বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমিরাবদুল্লাহিয়ানেরও একই দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত নানা ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে।
তেমনই একটি ছবিতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, একটি উঁচু ও লম্বা গাছের মাথায় আটকে রয়েছে একটি কালো রঙের পাগড়ি। যে ধরনের পাগড়ি সাধারণত ব্যবহার করতেন ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি। ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে দুর্ঘটনাস্থলে একটি গাছে এভাবেই আটকে রয়ে গিয়েছে রাইসির ব্যবহার করা সেই টুপি।
ছবিটি শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই লিখেছেন, "কি নির্মম চিত্র। ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ী গাছের মাথায়।" একই দাবিতে আরও অনেকেই ছবিটি শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল হওয়া ছবিটি সম্পাদিত। আসল ছবিটি বেশ কয়েক বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
সবার প্রথম আমরা ভাইরাল ছবিটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজার চেষ্টা করি। তখন হুবহু ওই একই ছবি আমরা দেখতে পাই পিন্টারেস্ট নামক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজে। যদিও সেই ছবিতে গাছের মাথায় কোনও পাগড়ি আটকে থাকতে দেখা যাচ্ছিল না।
আরও একধাপ খোঁজার পর ওই ছবিটি আমরা উইকিপিডিয়ার পেজে দেখতে পাই। রেডউড নামের এই উইকিপিডিয়ার পেজে হুবহু ওই একই গাছ-জোড়া দেখা যায়। তবে এখানেও গাছের মাথাও কোনও পাগড়ি বা টুপির অস্তিত্ব নেই। যা থেকে কার্যত একটা বিষয় দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভাইরাল ছবিটি সম্পাদিত এবং এতে কারসাজি করা হয়েছে।
উইকিপিডিয়ার বিবরণ অনুযায়ী, এই ছবিটি ২০১০ সালের ৯ মে Sverrir Mirdsson নামে কোনও এক ব্যক্তি এটি পোস্ট করেছিলেন। তবে ছবিটি ঠিক কোথায় তোলা এই সম্পর্কে কোনও বিশদ তথ্য এখানে জানানো হয়নি।
তা সত্ত্বেও, ছবি দুটি তুলনা করলে একটা বিষয় স্পষ্ট হতে বাকি থাকে না যে ওই পাগড়িটি ফটোশপের মাধ্যমেই কারসাজি করে জোড়া হয়েছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দুর্ঘটনাস্থলের একটি গাছে ইরানের মৃত রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসির ব্যবহার করা আটকে রয়েছে।
গাছের এই ছবিটি ২০১০ সাল থেকে ইন্টারনেটে রয়েছে। আসল ছবিতে কোনও পাগড়ি নেই। ভাইরাল ছবিটি সম্পাদিত।