Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: কুলতলির মৃত শিক্ষক প্রণব নাইয়া দুর্নীতি-কাণ্ডে চাকরি হারাননি, ছড়াচ্ছে মিথ্যে দাবি 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। প্রণব নাইয়া ২০১৬-র প্যানেলে চাকরি পাননি, তাই তাঁর চাকরিও হারায়নি। তিনি মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। 

ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 16 Apr 2025,
  • अपडेटेड 2:52 PM IST

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বরখাস্ত হওয়ায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়েছে সম-সংখ্যক পরিবারের ওপর। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে এক মৃত ব্যক্তির ছবি। ছবিটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে এই ব্যক্তির নাম প্রণব নাইয়া যিনি ২০১৬-র প্যানেলে চাকরি পেয়ে বর্তমানে তা হারিয়ে ফেলে আত্মহত্যা করেছেন। 

মৃত ব্যক্তির ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "প্রথম চাকরিহারা বলি। 2016 সালে চাকরি পেলো ২০২৫ সালে চাকরি হারিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করলো, এর দায় কে নিবে? নাম: প্রণব নাইয়া, ঠিকানা: মেরিগঞ্জ তেঁতুলবেড়িয়া, থানা: কুলতলী! জেলা: দক্ষিণ 24 পরগনা!!"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। প্রণব নাইয়া ২০১৬-র প্যানেলে চাকরি পাননি, তাই তাঁর চাকরিও হারায়নি। তিনি মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। 

আরও পড়ুন

যেভাবে জানা গেল সত্যি

মৃত শিক্ষক প্রণব নাইয়া আদৌ চাকরি হারিয়েছিলেন কিনা, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করা হয়। সার্চ করা হলে ২০২৫ সালের ১৫ এপ্রিল দ্য ওয়ালে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পাওয়া যায়। খবরের শিরোনামে লেখা হয়, "প্রণব নাইয়া চাকরিহারা শিক্ষক নন, তাঁর অপমৃত্যু নিয়ে গুজব না ছড়ানোর পরামর্শ শিক্ষকদের।"

বিস্তারিত রিপোর্টে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন 'অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস'-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, "যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। কিন্তু প্রণব নাইয়া নামে যে শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে, তার সঙ্গে এসএসসির ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের কোনও সম্পর্ক নেই।" তিনি আরও বলেন, "কিছু সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট যেভাবে প্রণব নাইয়াকে ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী হিসাবে চিহ্নিত করছে তা কেবল বিভ্রান্তিকরই নয়, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং নিন্দনীয়ও। এই ধরনের ভুল তথ্য, বিশেষ করে এই ধরনের একটি সংবেদনশীল সময়ে, যখন চাকরিহারারা মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন তখন তা সকলের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়।"

Advertisement

১৫ এপ্রিল প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকার একটি খবর থেকে জানা যায়, ২০১২ সালে পরীক্ষা দিয়ে ২০১৫ সালে শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন প্রণব। প্রথম চাকরি পেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে। ২০২১ সালে তিনি বদলি হয়ে বাড়ির কাছে অর্থাৎ কুলতলির তেঁতুলবেড়িয়া গোচরণ টিএস সনাতন হাই স্কুলে চাকরি পান। 

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত্যুর পর একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয় যেখানে লেখা ছিল  ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’’ অন্যদিকে, মৃতের বাবার তরফ থেকে জানানো হয় যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভোগা শুরু করেছিলেন প্রণব। চিন্তায় ছিলেন। সংবাদ প্রতিনিদের একটি খবর অনুযায়ী, এই নিয়ে প্রণবের বাবা সুভাষচন্দ্র নাইয়া জানান যে, "মোবাইলে খবর দেখে চিন্তায় থাকত। আমরা বলেছিলাম, তোর তো চাকরি যায়নি। যদি যায় তাহলে দেখা যাবে। আর চলে গেলেও বা কী? তারপর কী যে হল। সকালে দেহ দেখতে পাই।"

এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে বারুইপুর পুলিশ জেলার এসপি পলাশচন্দ্র ঢালির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই মৃত্যু নিয়ে সমাজমাধ্যমে নানা রকমের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রণব নাইয়া চাকরি হারিয়েছেন বলে সমাজমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে। যা একেবারেই সঠিক নয়। যাঁরা গুজব রটাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

ফলে সবমিলিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর দাবিতে এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। 
 

Fact Check

Claim

ছবিতে থাকা এই যুবক প্রণব নাইয়া যিনি ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় চাকরি পেয়ে বর্তমানে চাকরি হারিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। 

Conclusion

প্রণব নাইয়া ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পাননি। তিনি ২০১২ সালে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৫ সালে চাকরিতে যোগ দেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement