Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: বন্যায় বাংলাদেশে ৯১৬ জনের মৃত্যু? না, যমুনা টিভির নিউজ কার্ডটি ভুয়ো

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় যমুনা টিভির একটি নিউজ কার্ড শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে বন্যার কারণে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লায় মোট ৯১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 25 Aug 2024,
  • अपडेटेड 2:06 PM IST

বিগত কয়েক দিনে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি। অতিবৃষ্টির জেরে দেশটির ১১টি জেলা ভাসছে বন্যার জলে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ। জলবন্দি হয়ে আছেন প্রায় ৯ লক্ষ পরিবার। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।

আর এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বন্যায় মৃত্যু সংক্রান্ত বাংলাদেশের যমুনা টিভির একটি নিউজ কার্ড। কার্ডটিতে লেখা হয়েছে “ফেনিতে বাচ্চাসহ ৪২৮ জনের নৃত্য নোয়াখালীতে ৩৮৫ জনের মৃত্যু কুমিল্লাতে 103জনের মৃত্যু। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) অর্থাৎ যমুনা টিভির তথাকথিত ওই নিউজ কার্ডের তথ্য অনুযায়ী, বন্যার কারণে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লায় মোট ৯১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী কার্ডটি শেয়ার করে তার উপরে লিখেছেন, “ফেনিতে বাচ্চাসহ ৪২৮ জনের মৃত্যু নোয়াখালীতে ৩৮৫ জনের মৃত্যু কুমিল্লাতে 103জনের মৃত্যু। সর্বমোট=৯১৬ জন। বন্যায় ১১ জেলায় আক্রান্ত ৪৫ লাখ মানুষ। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” (ক্যাপশনের সব বানান অপরিবর্তিত।) একই দাবি-সহ আরও পোস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন। এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, যমুনা টিভির ভাইরাল নিউজ কার্ডটি ভুয়ো ও সম্পাদিত। আসলে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে বন্যায় ১৮ জনের মৃত্য হয়েছে।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত, যমুনা টিভির ভাইরাল নিউজ কার্ডটি সন্দেহজনক। কারণ সেখানে মৃত্যুর দুটি সংখ্যা বাংলায় ও একটি ইংরাজিতে লেখা হয়েছে। সাধারণত সব বাংলা সংবাদমাধ্যমেই সংখ্যা বাংলা হরফেই লেখা হয়ে থাকে। পাশাপাশি বন্যার কারণে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত মোট ৯১৬ জনের মৃত্যু হলে সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হত। কিন্তু আমরা আমাদের সার্চে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাইনি। এর থেকে অনুমান করা যায় যে যমুনা টিভির ভাইরাল নিউজ কার্ডটি ভুয়ো হলেও হতে পারে। 

Advertisement

তাই এবিষয়ে নিশ্চিত হতে এরপর আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খোঁজার চেষ্টা করি বাংলাদেশের যমুনা টিভির তরফে এমন কোনও নিউজ কার্ড পোস্ট করা হয়েছিল কিনা। কিন্তু আমরা যমুনা টিভির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটফেসবুক পেজইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল, কিংবা ইউটিউব চ্যানেল কোথাও এই সংক্রান্ত তথ্য খুঁজে পাইনি। তবে কিওয়ার্ড সার্চ করার সময় আমরা যমুনা টিভির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ২৩ আগস্ট এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেখতে পাই। সেখানে ভাইরাল নিউজ কার্ডটি শেয়ার করে লেখা হয়েছে, “যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ প্রচার করেনি; গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না।” 

তবে এরপর আমরা এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে বন্যায় কত জনের মৃত্যু হয়েছে সেই সংক্রান্ত তথ্য খুঁজে বার করার চেষ্টা করি। তখন আমরা গত ২৪ আগস্ট বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “বন্যায় দেশের ১২ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব কামরুল হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চলমান বন্যায় চট্টগ্রামে ৫, কুমিল্লায় ৪, নোয়াখালীতে ৩, কক্সবাজারে ৩, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনীতে একজন করে মারা গেছেন।”

এরপর আমরা বাংলাদেশে বন্যায় ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে সেই সংক্রান্ত যমুনা টিভির প্রতিবেদন খুঁজে বার করার চেষ্টা করি। তখন গত ২৪ আগস্ট যমুনা টিভির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশি একটি প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “দেশের ১১ জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে এখনও সাড়ে ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া, শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।”


এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় সম্প্রতি বন্যায় বাংলাদেশে ৯১৬ জনের মৃত্যু দাবি করে যমুনা টিভির যে নিউজ কার্ডটি শেয়ার করা হচ্ছে সেটি ভুয়ো ও সম্পাদিত। আসলে বন্যায় ২৪ আগস্ট পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্য হয়েছে।

 

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

বন্যার জেরে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লায় মোট ৯১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ফলাফল

যমুনা টিভির ভাইরাল নিউজ কার্ডটি ভুয়ো ও সম্পাদিত। ৯১৬ জন নয়, আসলে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে বন্যায় মোট ১৮ জনের মৃত্য হয়েছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement