Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার আবহে ইউনূসের সঙ্গে হাসি মুখে সাক্ষাৎ মোদীর? না, ছবিটি পুরনো

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং সেটি তোলা হয়েছিল ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস’ অনুষ্ঠানে।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 22 Dec 2024,
  • अपडेटेड 4:30 PM IST

গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে হওয়া অত্যাচার নিয়ে একাধিকবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়া দিল্লি। যদিও পাল্টা বিবৃতিতে ভারতের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন এবং বন্ধুত্বের চেতনার পরিপন্থী হিসাবে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ। দেশটির বিদেশমন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভারতের বিদেশমন্ত্রক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে।

আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার সংক্রান্ত একটি ছবি। যেখানে উভয় রাষ্ট্রনেতাকে একে অপরের সঙ্গে হাসি মুখে করমর্দন করতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে হওয়া হামলার পরেও সম্প্রতি মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হাসি মুখে দেখা করেছেন নরেন্দ্র মোদী। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ব্রেকিং, ভারতের হিন্দু প্রেমিক প্রধানমন্ত্রী গতকাল বাঙলাদেশের হিন্দু খুনি প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে কিভাবে দাঁত বের করছে দেখুন।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং সেটি তোলা হয়েছিল ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস’ অনুষ্ঠানে। 

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল ছবি ও দাবির সত্যতা জানতে সেটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে চলতি বছরের ২৩ নভেম্বর এই একই ছবি-সহ বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে ছবিটিকে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাইয়ে আয়োজিত ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তোলা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাশাপাশি সেই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, “প্রায় এক দশক আগে ‘গরিবের ব্যাংকার’ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ঘটনাস্থল মুম্বাই, তারিখ ৩ জানুয়ারি, ২০১৫। তখন তিনি বলেছিলেন,  ‘আজ আমাদের সঙ্গে এমন একজন নোবেল বিজয়ী আছেন, সমাজবিজ্ঞান নিয়ে যার নিজস্ব ব্যাখ্যা ও রূপায়ণের সুবাদেই সমাজের দরিদ্রতমরা তাদের জীবনেও আশা, সুযোগ আর মর্যাদার সন্ধান পেয়েছেন।’” 

Advertisement

এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি মুহাম্মদ ইউনূসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এই একই ছবি-সহ এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১২ হাজার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোবেল জয়ী অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসকে ‘সমাজের দরিদ্রতম মানুষকেও একটা আশা, সম্ভাবনা আর মর্যাদায় ভরা জীবন’ দেওয়ার জন্যই স্বর্ণপদক প্রদান করেন।

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী সার্চে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভিডিও পাওয়া যায়। সেই ১ ঘন্টা ১৯ মিনিট ১২ সেকেন্ডের সেই ভিডিওর ৩৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ফ্রেমের সঙ্গে ভাইরাল ছবির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

এখানে উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে হওয়া অত্যাচারের আবহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ করে থাকলে সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই প্রথম শ্রেণির আন্তর্জাতিক তথা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হত। কিন্তু এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন বা তথ্য আমরা খুঁজে পাইনি যা থেকে এই দাবির সত্যতা প্রমাণ হয়।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদী ও মুহম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকারের ছবি সাম্প্রতিক দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে হওয়া হামলার পরেও সম্প্রতি মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হাসি মুখে দেখা করেছেন নরেন্দ্র মোদী।

ফলাফল

ভাইরাল ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং সেটি তোলা হয়েছিল ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস’ অনুষ্ঠানে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement