Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: মহাকুম্ভের পুণ্যার্থী বোঝাই ট্রেনে মুসলিমদের পাথর নিক্ষেপ? না, দাবিটি বিভ্রান্তিকর

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, মুসলিম বা অন্য কোনও ধর্মের ব্যক্তি নয়। বরং প্রয়াগরাজগামী ট্রেনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে হরপালপুর স্টেশনে অপেক্ষারত মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে পাথর দিয়ে ট্রেনের দরজা ও জানালা খোলার চেষ্টা করেছিলেন।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 29 Jan 2025,
  • अपडेटेड 3:24 PM IST

গত ১৩ জানুয়ারি থেকে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভমেলা। চলবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই পরিস্থিতির মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে কুম্ভমেলা সংক্রান্ত একটি পোস্ট। যেখানে দাবি করা হচ্ছে, ঝাঁসি থেকে প্রয়াগরাজগামী মহাকুম্ভের পুণ্যার্থী বোঝাই ট্রেনে পাথর ছুড়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে মুসলিমরা। আর এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পুণ্যার্থীরা।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের ওয়ালে লিখেছেন, “Big Breaking আজ ঝাঁসিতে মহাকুম্ভগামী ট্রেনে শান্তির দুতদের পাথর ছুঁড়ে হামলা ও ভাঙচুর ! আতঙ্কিত মহাকুম্ভের যাত্রীরা” (সব বানান অপরিবর্তিত।) এখানে উল্লেখ্য, ‘আব্দুল’, ‘শান্তির দূত’ কিংবা ‘শান্তি বাহিনী’ এই সব শব্দগুলি সাধারণত ব্যাঙ্গাত্মকভাবে মুসলিমদের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। 


পুলিশ ও রেলের তরফে ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেককে জানানো হয়েছে, প্রয়াগরাজগামী মহাকুম্ভের পুণ্যার্থী বোঝাই ট্রেনে পাথার ছোড়ার ঘটনায় কোনও মুসলিম বা অন্য ধর্মের কোনও ব্যক্তি জড়িত নয়। বরং ২০২৫ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে হরপালপুর স্টেশনে অপেক্ষারত অন্যান্য পুণ্যার্থীরা ট্রেনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে ক্ষুদ্ধ হয়ে পাথর দিয়ে তা খোলার চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুন

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল দাবির সত্যতা জানতে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করলে গত ২৮ জানুয়ারি NDTV-র একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ট্রেনে হামলার একটি ছবি ও ভিডিও-সহ প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, ঝাঁসি থেকে প্রয়াগরাজগামী মহাকুম্ভের পুণ্যার্থী বোঝাই ট্রেনে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে মাঝের হরপালপুর স্টেশনে অপেক্ষারত একদল যাত্রীর বিরুদ্ধে। মূলত ভিতর থেকে ট্রেনের দরজা লক থাকায় এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।

   

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী সার্চে গত ২৮ জানুয়ারি News18-এর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ঝাঁসি থেকে প্রয়াগরাজগামী ট্রেন রুটে রয়েছে মধ্যপ্রদেশের ছত্রপুর জেলায় অবস্থিত হরপালপুর স্টেশন। এই স্টেশনে প্রচুর পুণ্যার্থী কুম্ভে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সোমবার রাত ২টা নাগাদ ট্রেনটি হরপালপুর স্টেশনে ঢুকলে সেখানে অপেক্ষারত যাত্রীরা তাতে ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা লক্ষ্য করেন ট্রেনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা রয়েছে। এর ফলে বহুক্ষণ ট্রেনে উঠতে না পারায় স্টেশনের যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। শেষে তাঁরা ইট ও পাথর মেরে ট্রেনের কামরার জানালা ও দরজার কাঁচ ভেঙে ফেলেন। কিন্তু কোনও প্রতিবেদনেই এই ঘটনার সঙ্গে মুসলিম বা অন্য ধর্মের কোনও ব্যক্তি জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়নি।

Advertisement

এরপর বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমরা মধ্যপ্রদেশের ছত্রপুর জেলার পুলিশ সুপার আগম জৈনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “এই ঘটনার সঙ্গে মুসলিম বা অন্য ধর্মের কোনও জড়িত নয়। আসলে ঝাঁসি থেকে প্রয়াগরাজগামী এই বিশেষ ট্রেনটিতে পুণ্যার্থীতে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল এবং ট্রেনে নতুন কোনও যাত্রী নেওয়ার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। তাই ট্রেনে উপস্থিত থাকা পুণ্যার্থীরা ভিতর থেকেই দরজা লক করে রেখেছিলেন যাতে নতুন কোনও যাত্রী উঠতে না পারে। ট্রেনটি হরপালপুর স্টেশনে পৌঁছালে সেখানে অপেক্ষারত অন্যান্য পুণ্যার্থীরা দেখেন ট্রেনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ রয়েছে। এরপর উত্তেজিত পুণ্যার্থীরা পাথর দিয়ে ট্রেনের কামরার জানালা ও দরজা ভেঙে তাতে ওঠার চেষ্টা করেন। ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ হরপালপুর স্টেশনে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সেখনে অপেক্ষারত উত্তেজিত পুণ্যার্থীদের অন্য ট্রেনে করে মহাকুম্ভে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।" 

এরপর এ বিষয়ে জানতে আমরা রেলওয়ের ঝাঁসি বিভাগের জনসংযোগ আধিকারিক মনোজ কুমারের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। তিনিও আমাদের এই একই তথ্য জানিয়ে বলেন, “প্রয়াগরাজগামী মহাকুম্ভের পুণ্যার্থী বোঝাই ট্রেনে পাথার ছোড়ার ঘটনায় মুসলিম বা অন্য ধর্মের কোনও ব্যক্তি জড়িত নয়। মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীরা ট্রেনে উঠতে না পেরে ক্ষুদ্ধ হয়ে পাথর দিয়ে ট্রেনের দরজা ও জানালা ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে ঝাঁসিতে প্রয়াগরাজগামী মহাকুম্ভের পুণ্যার্থী বোঝাই ট্রেনে মুসলিম বা অন্য কোনও ধর্মের ব্যক্তির পাথর ছোড়ার দাবিটি মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর।

Fact Check

Claim

ঝাঁসি থেকে প্রয়াগরাজগামী মহাকুম্ভের পুণ্যার্থী বোঝাই ট্রেনে পাথর ছুড়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে মুসলিমরা।

Conclusion

মুসলিম বা অন্য কোনও ধর্মের ব্যক্তি নয়। বরং প্রয়াগরাজগামী ট্রেনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে হরপালপুর স্টেশনে অপেক্ষারত মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে পাথর দিয়ে ট্রেনের দরজা ও জানালা খোলার চেষ্টা করেছিলেন।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement