Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: লাভ জিহাদের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজের মেয়েকেই বিয়ে? না, ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতে লাভ জিহাদের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজের মেয়েকে বিয়ে করেছেন এক ব্যক্তি।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 19 Nov 2024,
  • अपडेटेड 4:17 PM IST

বিয়ে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে কিছু ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। এদের মধ্যে অনেক রীতিই আমাদের কাছে একেবারেই স্বাভাবিক নয়। যেমন আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বানিয়ানকোল নামক জনজাতির রীতি অনুযায়ী বিয়ের পর হবু জামাইয়ের সঙ্গে প্রথম রাত কাটান কনের মাসিপিসিরা। অন্যদিকে ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশের মান্ডি উপজাতির মধ্যে রয়েছে একজন বাবার তাঁর নিজের মেয়েকে বিয়ে করার প্রচলন

এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বাবার তরফে নিজের মেয়েকে বিয়ে করা সংক্রান্ত একটি ভিডিও। তথাকথিত সেই ভিডিওতে একটি মেয়েকে লাল শাড়ি পরে কপালে সিঁদুর দেওয়া অবস্থায় একজন ব্যক্তির সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি মেয়েটিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিটি হলেন তার বাবা এবং তারা উভয়ে একে অপরের সঙ্গে বিয়ে করেছেন। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতে লাভ জিহাদ থেকে নিজের মেয়েকে রক্ষা করতে ওই ব্যক্তি তার নিজের মেয়েকে বিয়ে করেছেন। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ভারতে এক হিন্দু বাবা নিজের মেয়েকে বিয়ে করেছে। পাঁচ হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতির জন্য গর্বের মুহূর্ত। ইসলামের বিরুদ্ধে চিৎকার করার আগে তাদের লজ্জা অনুভব করা উচিত।” এই একই ভিডিও শেয়ার করে অপর একজন লিখেছেন, “লাভ জেহাদের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজের মেয়েকে বিয়ে করেছে এক বাবা হিন্দু ধর্মের কালচার টা  কত সুন্দর একদম ব্রম্মা সরস্বতী স্টাইল।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিয়োটি আসল নয়। বরং সেটি বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও এবং সেখানে যে দুজনকে দেখা যাচ্ছে তারা উভয়ই বাবা-মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

Advertisement

ভাইরাল ভিডিও ও দাবির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে গুগুলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে Royal Tiger নামক একটি ভ্যারিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ২ নভেম্বর এই একই ভিডিওর ৭ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের একটি বর্ধিত সংস্করণ পাওয়া য়ায়। সেই ভিডিওর ৪৭ সেকেন্ডে আমরা চ্যানেলের মালিক অঙ্কিতা করোটিয়ার তরফে একটি ডিসক্লেমার দেখতে পাই। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, “এই ভিডিওটি কেবলমাত্র বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। ভিডিওটি কারোর ধর্ম, বর্ণ কিংবা বাবা-মেয়ের সম্পর্ককে অসম্মান করার উদ্দেশ্য নিয়ে বানানো হয়নি।”

এরপর Royal Tiger নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায় যে চ্যানেলের মালিক অঙ্কিতা করোটিয়া বিনোদনের উদ্দেশ্যে নিজের চ্যানেলে এই ধরনের একাধিক স্ক্রিপ্টেড ভিডিও বানিয়ে আপলোড করেন। সেই সব ভিডিওতে অঙ্কিতা নিজে কিংবা কোনও কোনও ভিডিওতে অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে।

Royal Tiger চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা লক্ষ্য করি চলতি বছরের ২ নভেম্বর সেখানে অপলোড করা যে ভিডিওটিতে বাবা-মেয়ে তথা স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায় যে দু’জনকে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে তাদেরকেই ৫ নভেম্বরের অন্য একটি ভিডিওতেও বাবা-মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাবার ভূমিকায় অভিনয় করা ব্যক্তিকে মেয়ের খাবারে বিষ মেশাতে দেখা যাচ্ছে। কারণ তার অভিযোগ মেয়ে তার ঠিক করা পাত্রের সঙ্গে বিয়ে না করে অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে। 

এছাড়া গত ১১ নভেম্বরের শশুর-বৌমার অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে তৈরি অন্য একটি ভিডিওতেও এই উভয় অভিনেতা-অভিনেত্রীকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তাছাড়া গত ২৭ অক্টোবর ভাইরাল ভিডিওর মেয়েটিকে অন্য একটি ভিডিওতে অন্য একজনের প্রেমিকার ভূমিকাতেও অভিনয় করতে আমরা দেখতে পাই। নিচে ভাইরাল ভিডিওর ফ্রেমের সঙ্গে ইউটিউবে প্রাপ্ত অন্যান্য ভিডিওর তুলনা দেখা যাবে। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি বাবা-মেয়ের বিয়ে সংক্রান্ত একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও আসল ভেবে অনকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পুনরায় শেয়ার করেছেন।

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভারতে লাভ জিহাদের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজের মেয়েকে বিয়ে করেছেন এক ব্যক্তি।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিয়োটি আসল নয়। বরং সেটি বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও এবং সেখানে যে দুজনকে দেখা যাচ্ছে তারা উভয়ই বাবা-মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement