খুব বেশি দিন বাকি নেই। দরজায় কড়া নাড়া শুরু করেছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ২০১১ সালের পর চলতি বছর ফের একবার ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সাদা-বলের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। দীর্ঘ এক দশকের খরা কাটিয়ে ভারতের ক্যাবিনেটে এ বার কোনও আইসিসি ট্রফি আসে কিনা, সেদিকেই নজর রয়েছে আপামর ক্রিকেট অনুরাগীদের।
আর সেই বিশ্বকাপ নিয়ে সম্প্রতি একটি পোস্টকার্ড ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে। সেই পোস্টকার্ডে দাবি করা হয়, নেপালের জাতীয় ক্রিকেট দল নাকি ইতিমধ্যেই ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ খেলার ছাড়পত্র অর্জন করে ফেলেছে।
ভাইরাল হওয়া পোস্টকার্ডে লেখা হয়েছে, "ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ এর মূলপর্বে খেলার ছাড়পত্র পেলো নেপাল ক্রিকেট দল! এইতো মাত্র কয়েক বছর আগে ওয়ানডে স্টাটাস পেলো! এখন তারা ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিলো !" (ক্যাপশনের বানান অপরিবর্তিত)
এক্ষেত্রে ওয়ানডে স্টাটাস কথার অর্থ হল, ওয়ানডে খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করা।
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে, নেপাল ক্রিকেট দলের ২০২৩ বিশ্বকাপের মূলপর্বে জায়গা করে নেওয়ার দাবিটি অসত্য। ২০২৩ বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা এখনও অর্জন করেনি নেপাল।
কীভাবে জানা গেল সত্যি?
নেপাল যদি সত্যিই বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা করে থাকত তবে তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে অবশ্যই খবর প্রকাশ পাবে। সেই কারণে আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তা খোঁজার চেষ্টা করি।
তখন আমরা হিন্দুস্তান টাইমস্ বাংলার একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই যা ২০২৩-এর ১৬ মার্চপ্রকাশ করা হয়। সেই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়, "ODI-র ইতিহাসে চতুর্থ দ্রুততম শতরান করেও হার আসিফের, বিশ্বকাপের একধাপ কাছে নেপাল।" যদিও সেখানে কোথাও লেখা হয়নি যে বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি।
সেখানে লেখা হয়, "সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে নয় রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ারের টিকিট 'কনফার্ম' করল নেপাল। পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে আরও কিছুটা কাছে চলে এল নেপাল।" প্রতিবেদন অনুযায়ী, "কোয়ালিফায়ার টুর্নামেন্টে আগামী ১৮ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত জিম্বাবোয়েতে হবে। এই কোয়ালিফায়ারে মোট ১০ টি দল থাকবে। কোয়ালিফায়ার থেকে বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট পাবে দুটি দল।"
অর্থাৎ, এই প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা এখনও অর্জন করতে পারেনি নেপাল। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ়ের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেপাল বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে খেলার সুযোগ পেয়েছে। অর্থাৎ যোগ্যতা অর্জন পর্বের বাধা পেরোলে তবেই মূলপর্বে খেলার সুযোগ পাবে তারা।
যোগ্যতা অর্জন পর্ব বা বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার ম্যাচগুলি ১৮ জুন থেকে ৯ জুলাইয়ের মধ্যে জিম্বাবোয়েতে অনুষ্ঠিত হবে। এই কোয়ালিফায়ারে মোট ১০টি দল অংশ নেবে। সেখান থেকে মাত্র দুটি দল বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ পাবে। যে বিশ্বকাপ আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে হবে।
এই একই তথ্য আইসিসি-র ওয়েবসাইটেও নিশ্চিত করা হয়েছে। এই নিয়ে একটি টুইটও করা হয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ নেপাল প্রথমবার ওয়ানডে ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল।
অর্থাৎ, ভাইরাল পোস্টকার্ডের তথ্যটি যে সঠিক নয়, তা আমাদের অনুসন্ধান থেকেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।
২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে নেপাল।
নেপাল ক্রিকেট দল কোয়ালিফায়ার, অর্থাৎ বিশ্বকাপের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন পর্বে খেলার সুযোগ অর্জন করেছে।