Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: আমেরিকা ও ইউরোপের পণ্যকে ইজরায়েলি দাবি করে বয়কটের হিড়িক ফেসবুকে 

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পণ্যদ্রব্যের তালিকা ভাইরাল হচ্ছে, যা কিনা ইজরায়েলি প্রোডাক্ট দাবি করে তা বয়কটের দাবি জানানো হচ্ছে। 

ফ্যাক চেক: আমেরিকা ও ইউরোপের পণ্যকে ইজরায়েলি দাবি করে বয়কটের হিড়িক ফেসবুকে ফ্যাক চেক: আমেরিকা ও ইউরোপের পণ্যকে ইজরায়েলি দাবি করে বয়কটের হিড়িক ফেসবুকে 
ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 17 Oct 2023,
  • अपडेटेड 2:49 PM IST

ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বর্হিবিশ্বকে দু-ভাগে ভাগ করে দিয়েছে। বেশিরভাগ ইসলামিক ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ একদিকে যেমন ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানাচ্ছে, তেমনই আমেরিকা ও ইউরোপের বেশিরভাগ দেশগুলি রয়েছে ইজরায়েলের পক্ষে। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পণ্যদ্রব্যের তালিকা ভাইরাল হচ্ছে, যা কিনা ইজরায়েলি প্রোডাক্ট দাবি করে তা বয়কটের দাবি জানানো হচ্ছে। 

এই তালিকায় একদিকে টুথপেষ্টের মতো যেমন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস রয়েছে, তেমনই বিলাসবহুল গাড়ির কোম্পানিও রয়েছে। এই সংস্থাগুলি বয়কট করে তার বিকল্প হিসেবে কী ব্যবহার করা উচিত তেমন একটি তালিকাও।

বয়কটের ডাক দেওয়া পণ্যগুলির তালিকায় রয়েছে বাটা কোম্পানির জুতো। ক্লিয়ার, সানসিল্ক ও ডাভ কোম্পানির শ্যাম্পু। ওয়াশিং পাউডার- সার্ফ এক্সেল, হুইল ও রিন। ক্রিম, বডি লোশন- ভেসলিন, ডাভ, পন্ডস, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি। নুডলস- ম্যাগী। কোল্ড ড্রিংস- কোকা কোলা, পেপসি, স্প্রাইট, ফান্টা, সেভেন আপ, অ্যাটম, অ্যাকুয়াফিনা। টয়েলেট্রিজ- লরিয়্যাল, বস, গার্নিয়ার। চা- তাজা। সাবান- লাক্স, ডাভ, লাইফবয়। বডি স্প্রে- অ্যাক্স। এন্টি পাসপিরিন্ট- রেক্সোনা। পাউডার- পন্ডস। টুথপেষ্ট- পেপসোডেন্ট, ক্লোজ-আপ। গাড়ি- ফোর্ড। 

আরও পড়ুন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল হওয়া পণ্যের তালিকায় থাকা একটিও প্রোডাক্টের উৎপত্তিস্থল ইজরায়েল নয়। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি

এই দাবির সত্যতা জানতে আমরা প্রত্যেকটি পণ্যদ্রব্য ধরে-ধরে তাদের উৎসস্থল খোঁজার চেষ্টা করি। সবার প্রথম কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা বাটার ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পাই যে- এই সংস্থাটি ১৮৯৪ সালে তৎকালীন চেকোশ্লোভাকিয়া জিলিন শহর থেকে শুরু হয়। এই সংস্থার বর্তমান সিইও সন্দীপ কাটারিয়া নামের এক ভারতীয়। 

এর পরে আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জানতে পারি যে, ক্লিয়ার, সানসিল্কডাভ, সার্ফ এক্সেল, হুইল, রিন, ভ্যাসলিনপন্ডস, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি, লাক্স, লাইফবয়, এক্স, পেপসোডেন্ট, ক্লোজ আপরেক্সোনা- প্রত্যেকটি পণ্য ইউনিলিভার সংস্থার।

Advertisement

ইউনিলিভার সংস্থাটি ১৮৮৩ সালে ব্রিটেনে সানলাইট নামে একটি সাবান তৈরির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ১৯৩০ সালে নেদারল্যান্ডের কোম্পানি মার্গারিন ইউনিনের সঙ্গে মিশে গিয়ে ইউনিলিভার হিসেবে যাত্রা করে।

এরপর জনসন অ্যান্ড জনসন সংস্থাটি সম্পর্কে সার্চ করে জানা যায় যে এটি ১৮৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবার ব্যবসা শুরু করে। সকলের প্রিয় ম্যাগীর যাত্রা প্রথমবার শুরু হয় ১৮৮৪ সালে, সুইজারল্যান্ডের উদ্যোক্তা জুলিয়াস ম্যাগীর হাত ধরে। এরপর ১৯৪৭ সালে নেসলে নামক সংস্থা এই পণ্যটিকে কিনে নেয়। নেসলেও একটি সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক কোম্পানি, যা ১৮৬৭ সালে হেনরি নেসলে নামক একজন জার্মান-সুইস নাগরিকের হাত ধরে পথ চলা শুরু করে। 

তালিকায় যে কটি কোল্ড ড্রিঙ্কস বা পানীয়ের নাম দেওয়া হয়েছে, সবগুলি পেপসিকো বা কোকাকোলা সংস্থার পণ্য। এই দুটি সংস্থাও ১৮৯০-র দশকে ও ১৮৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

টয়লেট্রিজের মধ্যে লরিয়্যাল ও গার্নিয়ার ফ্রান্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান লরিয়্যালের পণ্য। অন্যদিকে বস, বা হুগো বস, হুগো ফার্দিনান্দ বস নামে এক জার্মান নাগরিকের হাত ধরে ১৯২৪ সালে পথচলা শুরু করে জার্মানিতে। 

তালিকায় এরপর থাকা নাম তাজা চা ব্রুক বন্ড নামক সংস্থার পণ্য। এই চা-এর পণ্যটি বর্তমানে ইউনিলিভারের ছাতার তলায় চলে এসেছে। 

সব শেষে ফোর্ডের গাড়ি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে জানা যায় যে এটি ১৯০৩ সাল থেকে আমেরিকায় যাত্রা শুরু করে হেনরি ফোর্ড নামক এক ব্যক্তির হাত ধরে। 

অর্থাৎ ভাইরাল হওয়া তালিকার পণ্যগুলো যে কোনও ভাবেই ইজরায়েলের সঙ্গে যুক্ত নয়, ও মিথ্যা দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে, সেটা এই অনুসন্ধানে পরিষ্কার হয়ে যায়।

Fact Check

Claim

এই তালিকায় থাকা পণ্যগুলি ইজরায়লি সামগ্রী, এগুলি বয়কট করা হোক।

Conclusion

এই তালিকায় থাকা একটিও পণ্য ইজরায়লি নয়। এর মধ্যে প্রায় সবগুলিই আমেরিকা বা ইউরোপের নানা দেশের পণ্য।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement