Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: মানসিক রোগে আক্রান্ত ইজরায়েলি সেনাদের চিকিৎসার দৃশ্য দাবিতে ছড়াল ইরানের ভিডিও

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, যদিও এটা ঠিক যে গাজায় যুদ্ধে অংশ নেওয়া বহু ইজরায়েলি সেনা বর্তমানে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। তবে ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে গাজা বা ইজরায়েলি সেনাদের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটি ইরানের খোরাসান প্রদেশের শান্দিজে অবস্থিত ইমাম জাভাদ ইনস্টিটিউট নামক মানসিক হাসপাতালে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের চিকিৎসা গ্রহণের দৃশ্য।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 29 Dec 2025,
  • अपडेटेड 10:44 AM IST

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে চরম মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বহুসংখ্যক ইজরায়েলি সেনা। চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পুনর্বাসন বিভাগের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যুদ্ধে অংশ নেওয়া প্রায় ২০,০০০ সেনার চিকিৎসা চলছে। যার মধ্যে ৫৬ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১১,০০০ জন সরাসরি মানসিক ট্রমা বা পিটিএসডি (PTSD)-তে আক্রান্ত। 

আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে কোনও একটি মানসিক হাসপাতালের বেডে আবাসিকদের শুয়ে বা বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটি গাজায় নিরীহ প্যালেস্টাইনদের হত্যার পর যুদ্ধ থেকে ফিরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বহু ইজরায়েলি সেনার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দৃশ্য।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “যখন আপনি তেল আ'বিবে আহত ইস'রায়েলি সৈ'ন্যদের দেখতে যান, লে সৈ'ন্যরা। গা'জা যুদ্ধ থেকে ফিরে মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছেন বহু আই'ডিএফ সৈ'ন্য। গা'জা উপত্যকায় দীর্ঘদিনের সামরিক অভি'যানে অংশ নিয়ে ফেরার পর ইস'রায়েলি প্রতি'রক্ষা বাহিনী (আই'ডিএফ)-এর অনেক সৈ'ন্য গুরু'তর মান'সিক সংক'টে ভুগছেন বলে জানা গেছে।” (সব বানান অপরিবর্তিত) 

আরও পড়ুন

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে গাজা বা ইজরায়েলি সেনাদের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটি ইরানের খোরাসান প্রদেশের শান্দিজে অবস্থিত ইমাম জাভাদ ইনস্টিটিউট নামক মানসিক হাসপাতালে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের চিকিৎসা গ্রহণের দৃশ্য।

সত্য উন্মোচন

ভাইরাল ভিডিও এবং দাবির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম সংগ্রহ করে সেগুলি গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। তখন চলতি বছরের ১১ নভেম্বর Azam Lori নামক এক ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে এই একই ভিডিও-সহ একটি পোস্ট পাওয়া যায়। যদিও পোস্টের ক্যাপশন থেকে ভিডিওটি সম্পর্কে কোনও তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

Advertisement

এরপর Azam Lori নামক উক্ত ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে এই একই মানসিক হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা একই আবাসিকদের আরও একাধিক ভিডিও পাওয়া যায়। পাশাপাশি, ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলটির অ্যাবাউট সেকশনে আরবিতে ইরান এবং ইমাম জাভাদ (আঃ) নামক মানসিক হাসপাতালের নাম উল্লেখ পাওয়া যায়। যা থেকে সন্দেহ তৈরি হয় ভাইরাল ভিডিওটি ইরানের হতেও পারে।  

এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে ইমাম জাভাদ (আঃ) ইনস্টিটিউট নামক মানসিক হাসপাতালের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলটি পাওয়া যায়। সেখানেও একইভাবে হাসপাতালের বেডে একই আবাসিকদের শুয়ে বা বসে থাকতে দেখা যায়। হ্যান্ডেলটি পর্যবেক্ষণ করলে জানা যায়, ইমাম জাভাদ (আঃ) ইনস্টিটিউট হল ইরানের খোরাসান প্রদেশের শান্দিজ শহরে অবস্থিত একটি মানসিক হাসপাতাল। যেখানে ২৮০ জন বিশেষভাবে সক্ষম শিশুকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। 

এরপর বিষয়টি সম্পর্কে আরও জানতে আমরা ইমাম জাভাদ (আঃ) ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ অফিসার আজম লোরির সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে গাজায় যুদ্ধে অংশ নেওয়া ইজরায়েলি সৈনাদের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটি ইরানের খোরাসান প্রদেশের শান্দিজ শহরে অবস্থিত ইমাম জাভাদ (আঃ) ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের ভিডিও। এইসব বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের চিকিৎসার প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্যের জন্য আমি নিজে ভিডিওটি বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছিলাম।”

এর থেকে প্রামণ হয় যে, মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চিকিৎসাধীন ইজরায়েলি সেনাদের দৃশ্য দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে ইরানের অসম্পর্কিত ভিডিও।

Fact Check

Claim

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গাজায় নিরীহ প্যালেস্টাইনদের হত্যার পর যুদ্ধ থেকে ফিরে মানসিক রোগে আক্রান্ত ইজরায়েলি সেনাদের হাসপাতালে ভর্তির দৃশ্য।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে গাজা বা ইজরায়েলি সেনাদের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটি ইরানের খোরাসান প্রদেশের শান্দিজে অবস্থিত ইমাম জাভাদ ইনস্টিটিউট নামক মানসিক হাসপাতালে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের চিকিৎসা গ্রহণের দৃশ্য।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement