Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এ বারই প্রথম লোকসভার স্পিকার পদে নির্বাচন হলো?

স্পিকার পদের জন্য কে সুরেশকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে ইন্ডিয়া জোট। তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করা হচ্ছে, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এবারই প্রথমবার লোকসভার স্পিকার পদের জন্য নির্বাচন হচ্ছে।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 26 Jun 2024,
  • अपडेटेड 2:24 PM IST

সাধারণত সর্বসম্মতিতেই নির্বাচিত হয় লোকসভার স্পিকার। কিন্তু এবার তা গড়াল ভোটাভুটিতে। আজ সকাল ১১টায় সংসদের নিম্নকক্ষে ধ্বনিভোটের মাধ্যমে ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী তথা কংগ্রেস সাংসদ কে সুরেশকে হারিয়ে পুনরায় স্পিকার পদে নির্বাচিত হলেন এনডিএ মনোনীত প্রার্থী ওম বিড়লা।

অন্যদিকে স্পিকার পদের জন্য ইন্ডিয়া জোট প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত একটি বিশেষ পোস্ট ভাইরাল হচ্ছে। সেখানে দাবি করা হচ্ছে, স্বাধীনতার পর এটিই প্রথমবার স্পিকার পদের জন্য নির্বাচন। উদাহরণস্বরূপ, একটি ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে এই একই দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “স্পীকার পদে প্রার্থী দিল 'ইন্ডিয়া' জোট। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার লোকসভা স্পিকার পদে নির্বাচন।” 

অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের ওয়ালে লিখেছেন, “প্রবল চাপে মুখে কেন্দ্রসরকার স্বাধীনতার পরে ভারতে এই প্রথমবার #লোকসভা #স্পিকার #পদে #নির্বাচন হতে চলেছে। এনডিএয়ের স্পিকার পদে প্রার্থী ওম বিড়লা তিনি গতবারও স্পিকার ছিলেন। অপরদিকে লোকসভার স্পিকার পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন কংগ্রেসের সাংসদ #কে #সুরেশ তিনি মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ায় ইতিহাস তৈরি হলো কারণ স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার লোকসভা স্পিকার পদে নির্বাচন হতে চলেছে।” (ক্যাপশনের বানান অপরিবর্তিত।) একই দাবি-সহ আরও পোস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন।  এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে। 

আরও পড়ুন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, এবারই প্রথম নয়। স্বাধীনতার পর মোট পাঁচবার স্পিকার পদের জন্য নির্বাচন হয়েছে। তার মধ্যে তিনবার সরাসরি ভোট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও দু’বার ধ্বনিভোটের মাধ্যমে এই নির্বাচন সম্পন্ন হয়।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল দাবির সত্যতা জানতে অর্থাৎ স্বাধীনতার পর আর কখনও স্পিকার পদের জন্য নির্বাচন হয়েছে কিনা সেই সংক্রান্ত তথ্য পেতে আমরা একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন ২৬ জুন আমরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে স্বাধীনতার পরে লোকসভা স্পিকার পদের জন্য হওয়া তিনটি নির্বাচনের কথা। এই প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পারি ১৯৫২ সালে লোকসভা স্পিকার পদের জন্য প্রথমবার নির্বাচন হয়েছিল। তাছাড়া সেখানে ১৯৬৭ ও ১৯৭৬ সালে লোকসভা স্পিকার পদের জন্য হওয়া নির্বাচনের তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

আমরা আমাদের কিওয়ার্ড সার্চে এই সংক্রান্ত আরও বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাই ২৬ জুনেরই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের অপর একটি প্রতিবেদনে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাধীন ভারতে এর আগে লোকসভার স্পিকার পদের জন্য মোট তিনবার-১৯৫২, ১৯৬৭ এবং ১৯৭৬ সালে ভোট হয়েছিল। অন্যদিকে ১৯৯১ ও ১৯৯৮ সালেও স্পিকার পদের জন্য বিরোধীরা প্রার্থী দেয়। কিন্তু সেই দু’বার সরাসরি ভোটের বদলে ধ্বনিভোটের মাধ্যমে ফল ঘোষণা করা হয়।

তবে আমরা এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাই গত ২৫ জুন দ্য হিন্দুতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে। সেখানে সংসদের প্রাক্তন যুগ্ম সচিব রবীন্দ্র গারিমেল্লা জানিয়েছেন, ১৯৫২ সালে প্রথম লোকসভার স্পিকার পদের নির্বাচনে শান্তরাম মোরকে ৫৫-৩৯৪ ব্যবধানে পরাজিত করেন জিভি মাভালঙ্কার। এরপর চতুর্থ লোকসভার সময় ১৯৬৭ সালে নীলম সঞ্জীব রেড্ডিকে ২০৭-২৭৮ ভোটে পরাজিত করে স্পিকার নির্বাচিত হন তেনেতি বিশ্বনাথন। জরুরি অবস্থার সময় ১৯৭৬ সালে স্পিকার পদের জন্য বি আর ভগতের সঙ্গে জগন্নাথরাও যোশীর লড়াই হয়। সেখানে ৩৪৪-৫৮ ব্যাবধানে জয়ী হন ভগত। এর পাশাপাশি দশম লোকসভায় ১৯৯১ সালে ধ্বনিভোটের মাধ্যমে রবি রায়কে হারিয়ে স্পিকার নির্বাচিত হন শিবরাজ পাতিল। এবং সর্বশেষ দ্বাদশ লোকসভায় ১৯৯৮ সালেও ধ্বনিভোটের মাধ্যমে স্পিকার নির্বাচিত হন। সেবার  পিএ সাংমাকে হারিয়ে স্পিকার হন জিএমসি বালযোগী।

এর থেকেই প্রমাণ হয় যে স্বাধীন ভারতে এবারই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার লোকসভার স্পিকার পদের জন্য নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

Fact Check

Claim

স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এবারই প্রথমবার লোকসভার স্পিকার পদের জন্য নির্বাচন হচ্ছে।

Conclusion

এবারই প্রথম নয়। স্বাধীনতার পর তিনবার সরাসরি ভোট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও দু’বার ধ্বনিভোটের মাধ্যমে লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement